
কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষভাবে ৬৩% ভাগ লোক ধূমপানের শিকার হচ্ছে
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. ক্যাপ্টেন (অব) মজিবুর রহমান ফকির বলেছেন, উদ্বেগের বিষয় কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষভাবে শতকরা ৬৩ ভাগ লোক ধূমপানের শিকার হচ্ছে।তিনি বলেন, প্রতিবছর ধূমপানের কারণে দেশে ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৫৭ হাজার মৃত্যুবরণ এবং ৩ লাখ ৮২ হাজার পঙ্গুত্ববরণ করছেন।তিনি আরো বলেন, এ কারণে শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গত ২৯ এপ্রিল জাতীয় সংসদে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন ২০১৩’ পাশ করেছে। এতে ১১টি সংশোধনী আনা হয়েছে।আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০১৩ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব এমএম নিয়াজউদ্দিনসহ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।আইনের ১১টি সংশোধনী প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের সংজ্ঞায় ধোঁয়াবিহীন তামাক যেমন-জর্দা, সাদাপাতা, গুল, খৈনী ইত্যাদি অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। আচ্ছাদিত কর্মক্ষেত্র, আবদ্ধ রেস্টুরেন্ট, মেলা ইত্যাদিকে পাবলিক প্লেসের সংজ্ঞায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে।পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির পরিমান ৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩’শ টাকা করা হয়েছে। তা বাস্তবায়নের জন্য শহরে মোবাইল কোর্ট, জেলা-উপজেলায় টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করে সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসককে তদারকির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।পাবলিক প্লেসের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক, নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তিকে তার প্রতিষ্ঠানে নিজ উদ্যোগে ধূমপানমুক্ত রাখার বিষয়ে দায়বদ্ধ রাখা হয়েছে।প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির নিকট এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি কর্তৃক তামাকজাত দ্রব্য বিপণন বা বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটে কোনরূপ ব্র্যান্ড এলিমেন্ট যেমন- লো-টার, লাইট, মাইন্ড, আল্ট্রা ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সংশোধিত আইনে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের ৫০ ভাগ জুড়ে ছবিসহ স্বাস্থ্য সর্তকবাণী মূদ্রণের বিধান করা হয়েছে। তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা নিষিদ্ধ এবং পৃষ্ঠপোষকতার নিয়ন্ত্রন আরো কঠোর করা হয়েছে। বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত বিধান লংঘনের অর্থ দন্ড এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করা হয়েছে।তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটে স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মূদ্রণ সংক্রান্ত বিধান লংঘনের অর্থ দন্ডের পরিমাণ এক হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ২ লাখ টাকা এবং অটোমেটিক ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন সংক্রান্ত অপরাধের অর্থ দন্ড এক হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ টাকা করা হয়েছে।উল্লেখ্য, সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০১৩’ আগামী ৩১ মে, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানটি আগামী ১১ জুন সকাল ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজন করা হবে। আর দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘তামাকের সকল প্রকার বিজ্ঞাপন ও পৃষ্ঠপোষকতা নিষিদ্ধ’।
লিঙ্কঃ http://www.bonikbarta.com/24news/2013/05/29/2112