কুড়িগ্রামে বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শুরু বাম্পার ফলনেও হাসি নেই কৃষকের মুখে
কুড়িগ্রামে চলছে বোরো ধান মাড়াইয়ের মৌসুম। এবার বোরোর বাম্পার ফলন হলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্বস্তিতে নেই কৃষক। উত্পাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও বাজারে ধানের সঠিক মূল্য না পাওয়ায় তারা চিন্তিত।
জানা গেছে, এবার প্রতি মণ ধান উত্পাদনে কৃষকের খরচ হয়েছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে এ জেলায় এখন পর্যন্ত ১০ শতাংশ বোরো ধান কাটা ও মাড়াইকাজ শেষ হয়েছে। এ বছর জেলায় ১ লাখ ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ২ হাজার হেক্টর কম জমিতে চাষ হয়েছে। সরকার ধানের সঠিক মূল্য নির্ধারণ এবং সার, তেল, কীটনাশক ও বিদ্যুতে ভর্তুকি না বাড়ালে চাষে আগ্রহ হারাবে কৃষকরা। এভাবে চলতে থাকলে খাদ্যে উদ্বৃত্ত এ জেলা খাদ্য ঘাটতিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার টগরাইহাট এলাকার কৃষক ইউনুছ বলেন, ‘প্রতি বছর ধানের ভালো দাম পাওয়ার আশায় চাষ করলেও বারবার নিরাশ হচ্ছি আমরা। তবুও বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসেবে ধান চাষ করতে হচ্ছে।’
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের কৃষক আকতার হোসেন জানান, উত্পাদিত ধানের বেশির ভাগই চলে যায় ধান কাটা-মাড়াইয়ের মজুরি মেটাতে। এছাড়া হালচাষ, চারা লাগানো, নিড়ানো, সার, কীটনাশকসহ আরো অনেক খরচ গুনতে হয়েছে মৌসুমজুড়ে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক প্রতীপ কুমার মণ্ডল জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৬ হাজার হেক্টর। তার মধ্যে অর্জন হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর। ধানের মূল্য কমে যাওয়ায় কৃষকরা আবাদ কমিয়ে দিয়েছে এটা ঠিক নয়। ধানের পাশাপাশি অন্যান্য লাভজনক ফসলের উত্পাদন বেড়ে যাওয়ায় এর আবাদ কিছুটা কমেছে। বর্তমানে ধানের মূল্য কমে যাওয়ায় কৃষকদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। এ সময়ে ধানে আর্দ্রতা বেশি থাকায় দাম কম হলেও ধান শুকিয়ে রাখতে পারলে কৃষকরা বেশি দাম পাবেন।
এ জেলার মাটি এবং আবহাওয়া ধান চাষের উপযোগী হওয়ায় শস্য হিসেবে ধান চাষই কুড়িগ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা। তাই এর ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করে কৃষক পরিবারগুলোকে বাঁচাতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে সরকার, এটিই এখন কৃষকদের ভরসা।
সূত্রঃ বণিক বার্তা ১১/০৫/২০১৩