গিরিয়া হাঁস
গিরিয়া হাঁস বা জিরিয়া হাঁস (Anas querquedula) (ইংরেজি Garganey) অ্যানাটিডি পরিবারের অ্যানাস গণের এক ধরনের ছোট আকৃতির সুলভ পাখি । এরা বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখি । শীতকালে এদের বাংলাদেশের ঢাকা বরিশাল চট্টগ্রাম সিলেট খুলনা রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায় । আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা আশংকাহীন বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে এরা Least Concern বা আশংকাহীন বলে বিবেচিত।
গিরিয়া হাঁস দেখতে ছোট আকারের । পুরুষ হাঁসটির মাথা ও বুক বাদামী বর্ণের । চোখের উপর সাদা সীমানাযুক্ত অর্ধাকৃতির দাগ দেখতে পাওয়া যায় । এদের পালক খয়েরী রঙের হয় । ঠোঁট ও পা দেখতে খয়েরী । ডানার নিচের অংশ সাদা সীমানাযুক্ত হালকা নীল । মাথার উপরের অংশ গাঢ় বর্ণের হয় । মুখ লালচে বাদামী । স্ত্রী হাঁসটি দেখতে অনেকটা পাতি তিলিহাঁসের মতো । স্ত্রী হাঁসটির মুখের আকার ও পানিতে ডুব দিয়ে বারবার মাথা ঝাঁকানো দেখে এদের আলাদা করা যায় । এরা দেখতে বাদামী বর্ণের । পা খয়েরী রঙের । ঠোঁট সাধারনত লম্বা হয় । চোখের ভ্রু ফেকাশে ।
গিরিয়া হাঁস ভূচর স্বভাবের । এরা লোনাপানি ও মিঠাপানি উভয়তেই বাস করতে পারে । প্রজনন মৌসুমে এরা প্রচুর ভাসমান জলজ উদ্ভিদ পাওয়া যায় এমন ছোট পুকুর বা লেকে থাকতে পছন্দ করে । অন্যান্য সময় স্বাদু পানির জলাভূমি যেখানে প্রচুর ভাসমান জলজ উদ্ভিদ থাকে সেখানে এদের দেখতে পাওয়া যায় । এদের দুটি প্রজনন সময়কাল আছে – বসন্ত ও গ্রীষ্ম । এসময় এরা সর্বভুক স্বভাবের হয় । এদের খাদ্য তালিকায় আছে শামুক, জলজ পোকামাকড় এবং তাদের লার্ভা , কেঁচো, ছোট ব্যাঙ , ছোট মাছ , উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ যেমন বীজ, মূল, কাণ্ড, পাতা ইত্যাদি । অন্যান্য সময় এরা শাকাহারী ।
গিরিয়া হাঁসের প্রজনন মৌসুমের একটি শুরু হয় বসন্তে ও অন্যটি শুরু হয় গ্রীষ্মে । এরা এমন ভাবে বাসা বানায় যাতে তা চিহ্নিত না করা যায় । এরা জমিতে বাসা বানায় । স্ত্রী হাঁস ৪ থেকে ৯ টি ডিম পাড়ে । ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে সময় লাগে ২১ থেকে ২৩ দিন । জন্মের ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে বাচ্চাদের পাখা গজায় ।