
দৈত্যাকৃতির স্কুইডের গল্প শুনি!!
মাইন রানা
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অমেরুদণ্ডী প্রানী হল এই জায়ান্ট স্কুইড বা দানব স্কুইড। এটি এত বড় হয় যে আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় স্কুইড এর দৈর্ঘ্য হল ৫৯ ফুট বা ১৯ মিটার লম্বা এবং ওজন প্রায় ১ টন। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক স্কুইড একটি স্কুল বাসের চেয়েও বড় হয়ে থাকে। অথচ এটি একটি অমেরুদণ্ডী প্রানী। এদের স্ত্রীরা পুরুষের চেয়ে বড় ও শক্তিশালী হয়ে থাকে।
স্কুইড মলাস্ক পর্বের প্রানী অর্থাৎ শামুক, ঝিনুক, অক্টোপাস এর সমপর্বের। এরা সেফালোপোডা শ্রেনীর (Class: Cephalopoda) প্রাণী। অর্থাৎ এদের পা মাথার সাথে যুক্ত। অক্টোপাসের মতই এদের ৮ টি পা আছে, যদিও অনেকে ভুল করে এদের অক্টোপাস মনে করে। এদের দুটি পা বড় হয়ে থাকে যা দিয়ে এরা শিকারকে খুব শক্ত করে আঁকড়ে ধরে। এদের চোয়াল খুব শক্ত হয়ে থাকে আকৃতি অনেকটা তোতা পাখির ঠোটের মতো।
এরা অন্য ছোট স্কুইড, মাছ, বড় চিংড়ি, অক্টোপাস শিকার করে থাকে। কিছু ছোট প্রজাতির তিমি মাছও স্কুইড হত্যা করে খেয়ে থাকে। খুব দ্রুত গতিতে এরা পানিতে চলাফেরা করতে পারে। দৈত্যাকৃতির স্কুইড বলা হলেও এরা তাড়িয়ে শিকার করার চেয়ে বরং এমবুশ করে ধোঁকা দিয়ে শিকার ধরতে বেশী পছন্দ করে। সাগরের তলদেশে চুপ করে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকে নাগালের মধ্যে শিকার আসলেই আর রক্ষা নেই। এভাবে শিকার ধরতে এরা ব্যর্থ হয় না এ ক্ষেত্রে সফলতা প্রায় শতকের কাছাকাছি।
দানব স্কুইড এর একমাত্র শত্রু হল স্পার্ম তিমি। এদের মধ্যে প্রায় সাগরে তীব্র যুদ্ধ হয়ে থাকে। আক্রান্ত হলে অন্য স্কুইড এর মতো এরাও কালী ছুড়ে শত্রুকে ধোঁকা দিয়ে পালিয়ে যেতে চেষ্ঠা করে। এসময় এরা দেহের রঙ পরিবর্তন করেও শত্রুকে ভয় দেখিয়ে পালাতে চেষ্ঠা করে।
স্কুইড এর মাংস খুবই সুস্বাদু এবং এটি অত্যন্ত দামী খাবার হিসেবে বিক্রি হয়। স্কুইড এর বাণিজ্যিক মূল্য বেশী থাকার কারণে নির্বিচারে এটি শিকার হচ্ছে। অতিরিক্ত আরোহণের কারণে জায়ান্ট বা দানব স্কুইড আজ হুমকির মুখে। এদের রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই।
ছবিঃ ইন্টারনেট