পাখির নাম রাতচরা

আলম শাইন

নাম শুনেই বোঝা যায় রাতের বেলাতে এদের আনাগোনা বেশি। সূর্যাস্তের খানিকটা পরে ঝোপ-জঙ্গলের ভেতর থেকে এদের ‘চউঙ্ক-চউঙ্ক-চউঙ্ক’ সুরে ডাকাডাকি শোনা যায়। এরা আমাদের দেশের স্থায়ী বাসিন্দা। গাঁও গ্রামের ছোটখাট ঝোপঝাড় কিংবা বাঁশবনে এদের বিচরণ বেশি।ratchora প্রজনন মৌসুম ছাড়া বেশিরভাগ সময় এরা একা একা বিচরণ করে। এদের শারীরিক গড়ন একটু ভিন্ন রকমের। গায়ের বর্ণ খানিকটা গাছের শুকনো ডাল বা পাতার মতো। গাছের ডালে বা মাটিতে বসলে খুব সহজেই এদের দেখা যায় না। মাটিতে বসে থাকলে মনে হয় শুকনো পাতা যেন। মাড়িয়ে গেলেও অনেক সময় টের পাওয়া মুশকিল যে, পায়ের নিচে আসলে পাতা নাকি পাখি! আগে গ্রামাঞ্চলে অনেক দেখা যেত। এখন কমছে। গ্রামে আগের মতো ঝোপ-জঙ্গল নেই, নেই বাঁশঝাড়ও। ফলে এরা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

এ পাখির বাংলা নাম: রাতচরা, ইংরেজী নাম : লার্জ-টেইলড নাইটজার, বৈজ্ঞানিক নাম : Caprimulgus macrurus গোত্রের নাম: ‘কাপ্রিমালগিদি’ এরা ধুকধুকিয়া, টঙ্কপাখি নামেও পরিচিত। উল্লেখ্য আমাদের দেশে আরো পাঁচ ধরনের রাতচরা পাখির বাস রয়েছে।

রাতচরা লম্বায় ২৫-৩৩ সেন্টিমিটার। গায়ের উপরের রঙ হলদেটে-ধূসর মিশ্রিত,কালো ছিট। ঘাড়ের পাশে লালচে কালো ছাইরঙা ছোপ। চোখের পাশ থেকে চিবুক পর্যন্ত রয়েছে অল্পক’টি খাড়া লোম। লেজ ও ডানা কিছুটা লম্বা। বুক থেকে পেট পর্যন্ত আড়াআড়ি ডোরা দাগ। গলায় হালকা সাদা বন্ধনী। লেজের তলার পালক ফিকে রঙের। পা লালচে-বেগুনি। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম মনে হলেও সামান্য পার্থক্য রয়েছে। আর সেটি হচ্ছে স্ত্রী পাখির লেজের প্রান্তটা হলদে-লালের মিশ্রণ। এদের প্রধান খাবারই হচ্ছে কীটপতঙ্গ। নিজেরা যেমনি নিশাচর তেমনি ওদের শিকারও নিশাচর কীটপতঙ্গ।

প্রজনন সময় মে থেকে জুন। এরা গাছে নয় সরাসরি মাটির উপরে বাসা বাঁধে। শুকনো পাতা জড়ো করে তার উপরে ডিম পাড়ে। ডিমের সংখ্যা ২টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৬-১৮দিন।

সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক,৩১,০৩,২০১৩

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics