পাতি হুদহুদ
পাতি হুদহুদ বা মোহনচূড়া (Upupa epops) (ইংরেজি Eurasian Hoopoe) ইউপুপিডি পরিবারের অন্তর্গত ইউপুপা গণের এক প্রজাতির মাঝারি আকারের দুর্লভ পাখি । এরা বাংলাদেশের স্থানীয় পাখি । এদের দেশের সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায় । আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা আশংকাহীন বলে ঘোষণা করেছে ।বাংলাদেশে এরা Least Concern বা আশংকাহীন বলে বিবেচিত । বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত ।
হুদহুদ পাখি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৩১ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৬৫ গ্রাম হয়ে থাকে। ছেলে ও মেয়ে পাখির চেহারা একই ধরনের। মুখ, গলা ও বুক কমলা-পীতাভ বা লালচে-কমলা। ডানায় সাদা ও কালো রঙের ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। মাথায় সুন্দর একটি ঝুঁটি আছে যার রং কমলা। প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখি ঝুঁটি ফুলের মতো মেলে ধরে সঙ্গীকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে।
পাতি হুদহুদ পাখির ঠোঁট অন্যান্য পাখির চেয়ে অপেক্ষাকৃত লম্বা ও কাস্তের মতো কিছুটা বাঁকা । ঠোঁটের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪.৭ সেন্টিমিটার । নরম মাটির মধ্যে ঠোঁট গুঁজে খাদ্য খুঁজে বেড়ায় । শুঁয়োপোকা, কেঁচো, ফড়িং, উঁইপোকা, ঝিঁঝি পোকাসহ বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় খায় ।
বিশেষ বৈশিষ্ট্যের পাখিটি নির্জন নদীর পাড়, আবাদি ও পতিত জমি, খোলা শুকনো মাঠ প্রভৃতি স্থানে একাকী বা জোড়ায় বিচরণ করে ।১০ থেকে ২০টি পাখি একত্রে বিচ্ছিন্ন একটি দল গঠন করে খাদ্যের সন্ধানে অথবা বাসা বানানোর জন্য স্থান বদল করে থাকে । এপ্রিল থেকে জুন এদের প্রজনন মাস। একেকটি পাখি তখন পাঁচ থেকে সাতটি ডিম দেয়। ডিমগুলোর রং নীল । মেয়ে পাখির চেয়ে পুরুষ পাখি অধিক সময় ডিমে তা দেয় । ১৫ থেকে ১৭ দিন পর ডিম থেকে ছানা বের হয় ।