পিয়াং হাঁস

পিয়াং হাঁস বা পিয়ং হাঁস (Anas strepera) (ইংরেজি Gadwall) অ্যানাটিডি পরিবারের অ্যানাস গণের অন্তর্ভুক্ত এক ধরনের সুলভ প্রজাতির হাঁস । এরা বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখি । শীতকালে এদের বাংলাদেশের ঢাকা সিলেট চট্টগ্রাম বরিশাল  খুলনা রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায় ।  আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা আশংকাহীন বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে এরা  Least Concern বা আশংকাহীন  বলে বিবেচিত।

DSC_5171পিয়াং হাঁস লাম্বায় ১৮ থেকে ২২ ইঞ্চি হয়ে থাকে । এদের পাখার বিস্তৃতি ৩১ থেকে ৩৫ ইঞ্চি । পুরুষ হাঁসটি আকারে  স্ত্রী হাঁস থেকে সামান্য বড় হয়ে থাকে । পুরুষ হাঁসটির ওজন ৯৯০ গ্রাম এবং  স্ত্রী হাঁসটির ওজন ৮৫০ গ্রাম হয়ে থাকে । পুরুষ হাঁসটি দেখতে খয়েরী বাদামী বর্ণের । এর সাদা রঙের পেট আছে । পাখিটির পিছনের অংশ দেখতে কালো বর্ণের । ডানার উপরের অংশ পিঙ্গল বর্ণের এবং নিচের অংশ ধবধবে সাদা । এর ঠোঁট নীলাভ ধূসর । পা এবং পায়ের পাতা দেখতে হলুদ রঙের । স্ত্রী পাখিটি দেখতে অনেকটা পুরুষ পাখিটির মতো । তবে এদের সারা দেহে বাদামী বর্ণের ছোপ ছোপ দেখা যায় । এদের ঠোঁট হলুদ সাথে কালো রঙের দাগ থাকে ।

পিয়াং হাঁসকে সাধারনত খোলা জলাভূমিতে দেখতে পাওয়া যায় । বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে থাকতে এরা পছন্দ করে । এই প্রজাতির পাখিরা শাকাহারী স্বভাবের হয় । এরা পানিতে ডুব দিয়ে খাবার সংগ্রহ করে । এদের খাদ্য তালিকায় আছে বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ, শৈবাল, ঘাস, নল খাগড়া, হোগলা পাতা, আগাছা ও উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ যেমন পাতা, মূল, কাণ্ড, বীজ ইত্যাদি । প্রজনন কালে এরা মাংসাশী স্বভাবের হয় । এসময় এরা শামুক ও অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণী খেয়ে থাকে ।

পিয়াং হাঁসের প্রজনন মৌসুম শুরু হয় শীতকালে । এরা জমিতে বাসা বানায় যা পানি থেকে দূরে থাকে । এদের বাসা সহজে চিহ্নিত করা যায় না ।  স্ত্রী হাঁস টি বাসা বানানোর দায়িত্বে থাকে এবং পুরুষ হাঁসটি নিরাপত্তা প্রদান করে । গাছের পাতা ডাল খড় কুটা ইত্যাদি দিয়ে বাসা বানানো হয় । বাসা তৈরি হলে   স্ত্রী পাখিটি ডিম পাড়ে । এরা একসাথে ৭ থেকে ১২ টি ডিম পাড়ে । ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা বের হতে সময় লাগে ২৪ থেকে ২৭ দিন ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics