বিহঙ্গ'র কথকতা
২০১০ সাল। দু’জন পাখিপ্রেমী এক হলেন মনে একটা সুপ্ত অথচ বিশাল ভাবনা নিয়ে। ভাবনায় শুধুই পাখি যাদের তাঁদের পক্ষে এমন কিছুই করা সম্ভব যা তাঁদের পাখির প্রতি ভালবাসার প্রকাশ ঘটাতে সাহায্য করবে। সুতরাং, ভাবনা রুপ নেয় বাস্তবে, শুরু হয় “বার্ড লাভারস” নামে একটি সংগঠনের যাত্রা । প্রতিষ্ঠানটির সূচনালগ্নে ব্যক্তিগত অর্থায়নে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পাখি ও প্রকৃতি পরিদর্শনই ছিল একমাত্র উদ্দেশ্য। কিন্তু যেভাবে পাখির আবাসস্থল ধ্বংস ও পাখি শিকার হচ্ছিল সেটার ভয়াবহতার কথা ভেবে বেশ কিছু লক্ষ্য নিয়ে ২০১২ সালে ৩০ জন সক্রিয় সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে “বিহঙ্গ” নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানটি এলাকার পাখিপ্রেমিক নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে ভালো সাড়া পায় এবং প্রকৃতিতে পাখির প্রয়োজনীয়তা এলাকাবাসীদের বুঝাতে সক্ষম হয়। এলাকার সবার প্রতিরোধে পাখি শিকারিরা এখন আর আগের মত পাখি শিকার করতে পারছে না। নানা রঙ আর বর্ণের পাখিতে এবারও ভরে উঠেছে প্রকৃতি।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
পাখির আবাসস্থল রক্ষা: যে সকল স্থানে প্রাকৃতিকভাবে পাখিরা বসবাস করে সে সকল স্থানগুলোতে সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করে সেটাকে পাখিদের অভয়ারণ্য করে তোলা। তাছাড়া যে সকল পরিবার পাখিদের আশ্রয় প্রদান করে তাদেরকে আর্থিক সহযোগীতাও প্রদান।
পাখি শিকার বন্ধে কার্যক্রম: পাখি শিকার বন্ধের লক্ষ্যে এলাকার জনগনের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, স্কুল-কলেজ ও হাট বাজারে সমাবেশের আয়োজন করা। উপজেলার সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিয়ে পাখি শিকার বন্ধের জন্য আলোচনা করা।
বৃক্ষরোপন: পাখিদের আবাসস্থল ও অভয়ারণ্যগুলোতে বৃক্ষরোপন করা এবং আশেপাশের মানুষদের বৃক্ষরোপনে উদ্বদ্ধ করা।
পাখি অবমুক্তকরন: শিকারি কর্তৃক ধৃত পাখিদের উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সর্বসাধারনের সম্মুখে পাখি অবমুক্ত করা এবং শিকার করার সারঞ্জামসমূহ বিনষ্ট করা।
শিকারিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা: পেশাদার পাখি শিকারিরা যেন পুনরায় আবার এই পেশায় ফিরে না আসতে পারে সেজন্য বিকল্প কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
এভাবেই এগিয়ে চলছে “বিহঙ্গ” , সকলের সহযোগিতা আর সচেতন অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে আরও ভালো কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে সুন্দর, সুস্থ একটি পৃথিবী উপহার দেবেন, এমন শপথের কথাই জানালেন “বিহঙ্গ” সদস্যরা।
এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক