মোহনপুরে বাড়ছে আধুনিক পদ্ধতিতে পান চাষ
রাজশাহীর মোহনপুরে আধুনিক পদ্ধতিতে পানের আবাদ বাড়ছে। এ উপজেলাসহ কেশরহাট পৌর এলাকায় আগে সনাতন পদ্ধতিতে চাষ হতো। বর্তমানে এ অঞ্চলের কৃষকরা আধুনিক পদ্ধতিতে পানের আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন।
চাষীরা জানান, আগে বরজে শুধু সরিষা খইল ব্যবহার করায় গাছের বৃদ্ধি হতো কম। বেশির ভাগ সময় উৎপাদন খরচই উঠত না। বিভিন্ন রোগের সংক্রমণে মরে যেত অধিকাংশ পানগাছ। এ ধরনের নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পান চাষ ছেড়ে দিয়ে অন্য ফসল চাষ শুরু করেন তারা।
বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করে কম জমিতে বেশি পান উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া বাজারে চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে কয়েক গুণ।
চাষীরা আরো জানান, বরজে বিভিন্ন ধরনের জৈব সার ও খইলের পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে রাসায়নিক সার ও বিভিন্ন কীটনাশক। এতে পানের উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণ। পাইকারদের চাহিদার পর্যাপ্ত জোগান দিতে পারছেন না চাষীরা। ফলে পানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
তবে আবাদ করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয় তাদের। পানের রোগ-বালাই নিরসনের জন্য কৃষি বিভাগের কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ তাদের।
এ ব্যাপারে বিষহারা গ্রামের চাষী সোহরাব হোসেন বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে পান চাষ করে বছরে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। অন্য ফসলে তা সম্ভব নয়।
মহবতপুর গ্রামের চাষী ইদ্রিস আলী বলেন, বরজ তৈরিতে ব্যবহূত বাঁশ, খড়, তার ও মজুরিসহ প্রথম অবস্থায় প্রতি বিঘা জমিতে পান চাষে ব্যয় হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এ বছর ১ বিড়া (৮০টি) পান বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৩০ টাকা দরে। ফলে পানচাষীরা লাভবান হয়েছেন। ক্ষেতের রোগ-বালাই সম্পর্কে ব্যাপক গবেষণার পাশাপাশি এ অঞ্চলে একটি গবেষণাগার গড়ে ওঠা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
উপজেলার একদিলতলা হাটে পান কিনতে আসা ঢাকার পাইকার রওনক মুন্সি বলেন, এ এলাকা থেকে পান কিনে ঢাকার শ্যামনগর ও সদরঘাটে বিক্রি করি। এছাড়া মোহনপুর এলাকার পান পাকিস্তান ও সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে রফতানি হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মোহনপুরের মাটি ও আবহাওয়া পান চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। আমরা মাঠ পর্যায়ে তৃণমূল চাষীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া এ এলাকায় একটি পান গবেষণাগার গড়ে তোলার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
সূত্রঃ বণিক বার্তা ১১/০৬/২০১৩