রাঙ্গামাটিতে স্ট্রবেরী চাষে নতুন সম্ভাবনা
॥ একেএম জহুরুল হক ॥
রাঙ্গামাটিতে স্ট্রবেরী চাষে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে রাঙ্গামাটির নতুন পুলিশ লাইনের সুখী নীলগঞ্জ এলাকায়। জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে সেখানে সুস্বাদু স্ট্রবেরী ফলের পরীক্ষামূলক চাষে পাওয়া গেছে ব্যাপক সফলতা। এর ফলে পার্বত্যাঞ্চলে স্ট্রবেরী চাষে অনেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। স্ট্রবেরী চাষের সম্ভাবনাকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগানোর জন্য আগামীতে সুখী নীলগঞ্জ এলাকায় বড় আকারে বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি সদরের পুলিশ কর্মকর্তারা।
রাঙ্গামাটি সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, অন্যান্য ফলের পাশাপাশি এবার নতুন ফল স্ট্রবেরী চাষে সফল হয়েছে রাঙ্গামাটি পুলিশ বিভাগ। তাই পাহাড়ে স্ট্রবেরী চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
পুলিশের নিজস্ব এ জমিতে গড়ে উঠা বাগানে মনিটরিং করছেন পুলিশ অফিসাররা। তারা মনে করছেন, পার্বত্য এলাকায় উৎপাদিত স্ট্রবেরী চাষের সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তা বাইরে রফতানি করা সম্ভব। তাছাড়া এখানে অন্যান্য নতুন নতুন ফলের উৎপাদনের জন্য নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন উদ্যোগ।
রাঙ্গামাটি কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের পরামর্শে ও পুলিশ বিভাগের সুষ্ঠু তত্ত্বাবধানের কারণে সুখী-নীলগঞ্জ এলাকায় ২৫০ গাছের চারা দিয়ে স্ট্রবেরীর পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়। এতে স্ট্রবেরীর ফলন ভাল হওয়ায় কৃষিবিদরা মনে করছেন পার্বত্যাঞ্চলের আবহাওয়া স্ট্রবেরী চাষের জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত।
রাঙ্গামাটি অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক উদয় শংকর মুৎসদ্দী বলেন, সুখী নীলগঞ্জ এলাকায় স্ট্রবেরীর ২৫০টি চারা লাগিয়ে পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়, এতে আশানুরুপ ফল পাওয়া গেছে। যে ফলন পাওয়া গেছে তা অবাক করে দেওয়ার মতো। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে রাঙ্গামাটিতে স্ট্রবেরীর চাষ অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে তিনি জানান।
রাঙ্গামাটির প্রাক্তন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে সুখী নীলগঞ্জ এলাকায় বিশাল এলাকা জুড়ে এখানে গড়ে তোলা হয় বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, বনজ, ওষুধীসহ বিভিন্ন বাগান। সেই থেকে শুরু হওয়া বাগানের বিস্তৃতি, এখন অনেক দূর এগিয়েছে। পুলিশ বিভাগের সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় হাটি হাটি করে সুখী নীলগঞ্জ এখন সবুজের সমারোহে ভরপুর। এখন যে কেউ সুখী নীলগঞ্জ গেলে সহজেই আকৃষ্ট হবে। রাঙ্গামাটি পুলিশ বিভাগের ৩৩ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠা মিশ্র ফলের এই বাগানের সফলতা দেখে অনেকে তা দেখতে সুখীনীল গঞ্জে যাচ্ছেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিচ্ছেন।
এ বাগানটি ঠিকমত রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলে তা বাংলাদেশের পুলিশ বিভাগসহ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সকলের জন্য গর্ব করার মত হবে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। রাঙ্গামাটি পুলিশ বিভাগের নিজেদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গড়ে উঠা বিভিন্ন প্রজাতির বিশাল বাগানের এ উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়ুক- পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এটাই প্রত্যাশা করেন রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মাছদু-উল-হাসান।
সূত্রঃ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ০৮/০৬/২০১৩