সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সামরিক মহড়াঃ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালো প্রাধিকার ও গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটি

গত ২৭ অক্টোবর রাত ১১:৪৫ মিনিট থেকে টিলাগড় ইকো পার্কে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট’র সেনাবাহিনী’র একটি দল ‘ফায়ারিং’এর উপর এক মহড়া চালায়, ইকোপার্ক এলাকায় এই ধরনের সামরিক মহড়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী অধিকার বিষয়ক সংগঠন ‘প্রাধিকার’ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন ‘গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটি’র পক্ষ থেকে এইধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।

প্রতিবাদের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ‘প্রাধিকারের সাধারণ সম্পাদক জয় প্রকাশ রায় বলেন, দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এইধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতাকে উন্নীত করে কিন্তু সমস্যাটা হল তাদের এই ‘ফায়ারিং’র মহড়া পরিচালনার জন্যে জায়গা নির্বাচনের ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে তারা প্রায়শই বেছে নেন সিলেটের নিকটে অবস্থিত টিলাগড় ইকো পার্ক এবং খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান’কে।pradhikar- green explore society আমরা জানি এই দুই স্থানই বন্যপ্রানি’র নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। একইসাথে এই বনভূমি ‘সংরক্ষিত’ বনাঞ্চল ঘোষিত হওয়ায় এখানে বনে ইকোসিস্টেমে’র ক্ষতি হয় এমন কাজ করা যাবে না। একইসাথে ‘বাংলাদেশ বন আইন ১৯২৭’র ধারা ২৬ ও ৩৩’এ সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনাঞ্চল সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া আছে ‘কোনো ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার পূর্বানুমতি ব্যতিত ঢোকা যাবে না’ এছাড়াও ‘বন্যপ্রানি আইন ২০১২’তে বন্যপ্রানি বা ইকোসিস্টেমের জন্যে ক্ষতিকর কাজ করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। যার কোনোটাই উনারা মেনে চলেননি। আমরা তাৎক্ষনিকভাবে বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে জানাতে চাইলে তাকে ফোনে পাওয়া যায় নি। এমনকি টিলাগড় ইকো পার্কের দায়িত্ত্বে থাকা ‘বন কর্মকর্তা’কে এইসময় পাওয়া যায়নি।

 উপস্থিত সেনাবাহিনী’র কর্মকর্তা’দের সাথে এইব্যাপারে কথা বলে খুব একটা লাভ হল না, কারন কিছুক্ষন পর উনারা ‘ফায়ারিং’র মহড়া শুরু করে দিলেন। প্রচন্ড শব্দ সৃষ্টি করে এই মহড়া চলতে থাকে রাত ১২টা পর্যন্ত।

প্রাধিকার সভাপতি রাহুল দাশ তালুকদার বলেন, আমরা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানি অধিকার বিষয়ক সংগঠন ‘প্রাধিকার’ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন ‘গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটি’র পক্ষ থেকে এইধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আশা করি বনবিভাগ তাদের দায়িত্ত্বের জায়গা থেকে সবসময় কাজ করে যাবে এবং এই ধরনের কাজ যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সেই ব্যাপারে সজাগ থাকে। একইসাথে আমরা আশা করব ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী’ আরো দায়িত্ত্বশীল হয়ে তাদের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পক্ষে সরাসরি এই ধরনের অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা বিষয়কে সামনে এনে এই ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি’র লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করব আমাদের মিডিয়া এইক্ষেত্রে আমাদের অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও সাহায্য করবে।

এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics