সবুজ অভিধানঃ বাস্তুহত্যা ( Ecocide)
সিফাত তাহজিবা
‘ইকোসাইড’ বা Ecocide – গ্রীক এবং ল্যাটিন ভাষা থেকে শব্দটির উদ্ভাবন সময়কাল ১৯৬০ থেকে ১৯৭০’র মাঝামাঝি।
১৯৭০ সালে ব্যারি ওয়েসবার্গ (Barry Weisberg) এর ‘Ecocide in Indochina’ বইয়ে প্রথম Ecocide শব্দটি পাওয়া গেছে।
Ecocide বলতে বোঝায়,মানুষের কর্মকান্ডের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের নবায়নঅযোগ্য সম্পদের এবং ওই এলাকার বন্যপ্রাণী ও বাসিন্দাদের শান্তিময় পরিবেশ বিনাশ হওয়াকে, একে চিহ্নিত করা হয় ‘পরিবেশ হত্যা বা খুন’ হিসেবে।
বন উজাড় করা, বিভিন্ন জাহাজ, ট্রলার থেকে সমুদ্রের পানিতে তেল উপচে পড়া,প্রয়োজনের বেশি মত্স্য – শিকার,ওজন স্তর ক্ষয়, এছাড়াও জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে বের হওয়া কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, ক্লোরফ্লুরোকার্বন (CFC),ভূগর্ভস্থ পানি নি:শেষকরণ এগুলো সবই Ecocide এর অন্তর্ভুক্ত।
১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলীয়ান আইনজীবী মাক গ্রে (MarK Grey) আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও মানবাধিকার আইনের উপর ভিত্তি করে ‘Ecocide’কে ‘ আন্তর্জাতিক অপরাধ’ হিসেবে প্রস্তাব করেন। পরিবেশবিজ্ঞানীরা এটিকে শান্তির বিরুদ্ধে পঞ্চম আন্তর্জাতিক অপরাধ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
ইতিমধ্যে ১০টি দেশ ECOCIDE অপরাধের ফৌজদারী কোড জারি করছে , দেশগুলো হলো- জর্জিয়া, আর্মেনিয়া,বেলারুশ, ইউক্রেন,কাজাকিস্তান, কিরগিস্তান,মলদোভা, রাশিয়া,তাজিকিস্তান এবং ভিয়েতনাম।
২০১০’র এপ্রিল মাসে ইংরেজ আইনজীবী পলি হিগিংস (Polly Higgins) জাতিসংঘে যুদ্ধাপরাধ,আগ্রাসন,মানবতার অপরাধ,গণহত্যার পাশাপাশি এই Ecocide কে ‘শান্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ’হিসেবে স্বীকৃত করে প্রস্তাব করেন এর শাস্তি বা বিচার সম্পন্ন হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে।
ব্রিটিশ একটি প্রতিবেদনে দেখানো হয়ছে পৃথিবীর প্রায় ৩০০০ টি বৃহত্তম কোম্পানী পরিবেশের যে লোকসান করছে তার এর বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা করা যাবে যার মূল্য ২.২ ট্রিলিয়ন ডলার !!
সম্প্রতি এ বছরের ২২শে জানুয়ারী ৯টি ইউরোপীয়ান দেশের ১১ জন নাগরিক নিয়ে ইউরোপীয়ান সংসদে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়ছে ইসিআই বা ECI ( European Citizens Initiative -” END ECOCIDE IN EUROPE”)। ২০টি ইউরোপীয়ান ভাষায় একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এটি বন্ধে স্বাক্ষর গ্রহণ নেওয়া হয়।