সাদা বাঘ রহস্য

White-Tiger-Wallpaperরয়েল বেঙ্গল টাইগার কিংবা দ্রুতগতি সম্পন্ন চিতাই হোক সব বাঘের গায়েই তুলির টানে অদ্ভুত কালো হলুদ রঙের কারসাজি থাকে। কিন্তু ব্যাঘ্রকুলের অনেকের রং আবার সাদা।
কেন এই সাদা রং তা নিয়ে সম্প্রতি মাথা ঘামিয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। ১৯৭০ সালে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় এক বাঘ দম্পতি তেরোটি শিশুর জন্ম দেয়। যাদের মধ্যে তিনটি সাদা। চীনের পেকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী সু-জিন লুয়ো ও তার সতীর্থরা পরীক্ষা করে দেখেছেন জিনের একটি বিশেষ রঞ্জক পদার্থের পরিবর্তনই এই সাদা রঙের জন্য দায়ী। বিজ্ঞানীদের মতে কোনো প্রাণীর কোষের স্বাভাবিক রঞ্জক পদার্থই দেহবর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে। বিজ্ঞানীরা সাদা বাঘের দেহকোষের জিন পরীক্ষা করে দেখেছেন কোষের মধ্যে বিশেষ রঞ্জক জিন ‘এসএলসি৪৫এ২’ আছে।  বিশেষত মানুষসহ ঘোড়া, মুরগি ও মাছের দেহের হাল্কা রঙের জন্যও এই রঞ্জক পদার্থটি দায়ী।
এই বিশেষ রঞ্জকটি কালো-হলুদ রং তৈরিতে বাধা দেয়। কিন্তু সাদা বাঘের গায়ে হাল্কা কালো ডোরার কারণ ‘এসএলসি৪৫এ’ জিনের মধ্যে ‘এ৪৭৭ভি’ নামক অ্যামাইনো অ্যাসিডের পরিবর্তন। সম্প্র্রতি ‘কারেন্ট বায়োলজি’ নামক একটি জার্নালে বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করেছেন। বর্ণ পরিবর্তনের প্রকৃত কারণ হিসেবে বিজ্ঞানী গ্রেগর জোহান মেন্ডেলের বংশগতি সংক্রান্ত তথ্য কী বলে? মেন্ডেলের সূত্র অনুযায়ী জিনের ভিন্নধর্মী উপাদানের মধ্যে যেটি প্রকাশিত হয় না তাকে প্রচ্ছন্ন উপাদান বা ‘রিসেসিভ ফ্যাক্টর’ বলে। অর্থাৎ সাদা বাঘের ক্ষেত্রে হলুদ রঞ্জক সৃষ্টিকারী জিনটি প্রচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে।
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন বাঘের দেহবর্ণ সৃষ্টিকারী রঞ্জক দুটি হলো ফিওমেলানিন ও ইউমেলানিন। এদের মধ্যে কালো-হলুদ রং তৈরি করে ফিওমেলানিন রঞ্জক। কিন্তু সাদা বাঘের ক্ষেত্রে এই রঞ্জক তৈরির প্রক্রিয়াটি অ্যামাইনো অ্যাসিড পরিবর্তনের ফলে বা ‘পয়েন্ট মিউটেশন’-এর কারণে রাসায়নিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সাদা বাঘ এখন বিলুপ্ত প্রায়।  সীমান্ত পারভেজ

সূত্রঃ ইন্টারনেট

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics