অক্টোপাসের নতুন অধ্যায়…!!!

অক্টোপাস, গভীর নীল জলের আশ্চর্য এক প্রাণী। এদের রয়েছে আটটি আবৃত চোষক হাত, যার সাহায্যে এরা ক্ষিপ্রতা আর ধূর্ততার সাথে শিকার ধরে ফেলে অথবা আত্মরক্ষায় ছড়িয়ে দেয় নিকষ কালি। শত্রুর চোখে ধুলো দিতে ওস্তাদ এই প্রাণী সম্পর্কে আরও একটা অজানা তথ্য হলো, এরা বিষধরও বটে। আত্মরক্ষায় বা শত্রুকে ঘায়েল করতে বিষধর হয়ে উঠে অক্টোপাস। ক্যাথরিন হারমন’এর লেখা “অক্টোপাস ! দা মোস্ট মিষ্টেরিয়াস ক্রিয়েচার ইন দা সি” থেকে দেখে নেয়া যাক মজার কিছু তথ্য–

বিষণ্ণতায় নিজ অঙ্গ ভক্ষণঃ বিষণ্ণতায় ভুগতে থাকলে আমরা দাঁত দিয়ে নখ কাটি। অক্টোপাসও আমাদের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই। বিষণ্ণতায় ভুগতে থাকা অক্টোপাস নিজেদের উপাঙ্গ কামড়ে খেয়ে বিষণ্ণতা কাটাতে চেষ্টা করে। এক পরীক্ষায় দেখা যায়, ঝিনুক-শামুক আর সামুদ্রিক পুষ্পাধারে সাজানো পরিবেশ অক্টোপাসের বেঁচে থাকা এবং বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় কাজের জন্য প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। বৈরি আর কষ্টসহিষ্ণু পরিবেশে বেঁচে থাকা অক্টোপাসেরা বিষণ্ণতায় ভোগে আর নিজের উপাঙ্গ খেয়ে বিষণ্ণতা কাটানোর চেষ্টা করে।

শরীরে বিষের থলিঃ সাপের মাথায় আছে বিষের থলি কিংবা কাঁকড়া বিছায়, কিন্তু অক্টোপাস !!! সকল প্রজাতির অক্টোপাসের দেহে কিছু পরিমাণ হলেও বিষ আছে বলেই মনে করা হয়। এদের দেহের ভেতর বাস করা ব্যাকটেরিয়াই মূলত এদের বিষের জন্য দায়ী। তবে, এদের বিষে তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে কিন্তু একটা আছে, ছোট আকারের নীল রিং বিশিষ্ট অক্টোপাসের এক কামড়ে একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ মিনিটেই পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন।blue-ringed-octopus

ব্যবহার করে হাতিয়ারঃ শিম্পাঞ্জী, ডলফিন, কাক আর কুকুরের মতো অক্টোপাসের ক্ষেত্রেও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া গেছে।এসব প্রাণী যেমন হাতিয়ার ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করে তেমনি অক্টোপাসও, অবাক হচ্ছেন!!! হ্যাঁ, শিরাযুক্ত অক্টোপাসের ক্ষেত্রে দেখা যায় এরা নারকেলের খোল আঘাত করে ভেঙে সেটির ভেতর ঘর বানিয়ে থাকে। সেই ঘর আবার মোবাইল ঘর নামেও পরিচিত।0-intro-coconut-octopus

খুলতে ফেলতে পারে বোতলের ছিপিঃ সিয়াটল একুরিয়ামের জীব বিজ্ঞানীরা এক প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে অক্টোপাসকে মুখোমুখি করলেন এক দারুণ বুদ্ধিমত্তা আর কৌশলের পরীক্ষায়। তারা একটি মুখ বন্ধ করা ঔষধের বোতল ফেললেন একুরিয়ামের তলায়, উদ্দেশ্য একটাই, বোতলের ছিপিটি কি খুলে ফেলতে পারবে বিলি নামের অক্টোপাস? হ্যাঁ , পাঁচ মিনিটেই কর্ম সম্পাদনে সফল… হবেই বা না কেন?? এরা যে বছরের পর বছর ধরে ঝিনুকের খোলস খুলে খুলেই জীবন ধারণ করছে।giant-squid-pandora-

ছদ্মবেশের ওস্তাদঃ  ছদ্মবেশ ধারণে প্রাণী জগতে সবচেয়ে কৌশলী বোধহয় অক্টোপাসই। সেকেন্ডের দশ ভাগের তিন ভাগ সময়ে নিজের শরীরের রঙ পরিবর্তন করতে পারে এরা। এছাড়া, সমুদ্রের তলদেশের বিভিন্ন শৈবাল পাথর কিংবা কোরালের মতো করে নিজেকে উপস্থাপন করতেও এদের জুড়ি নেই। মুহূর্তে শত্রুর চোখে ধুলো দিয়ে নিজেকে শত্রুর সামনেই লুকিয়ে ফেলার অসম্ভব ক্ষমতা রয়েছে অক্টোপাসের।octopus-as-conch

ক্ষণজীবীঃ অক্টোপাসের রয়েছে সীমাহীন আর আশ্চর্য কৌশল আর বুদ্ধিমত্তা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, অক্টোপাস ক্ষণজন্মা। এরা বাঁচে বড়জোর দুই এক বছর। সবচেয়ে বেশী মৃত্যুহার দেখা যায় ছয়মাস বয়সী হবার আগেই।LPSO_spots_Ross

শক্তিশালী আর সংবেদনশীল চোষকঃ অক্টোপাসের রয়েছে শক্তিশালী আর সংবেদনশীল চোষক। এদের দেহের প্রতিটি হাতে রয়েছে ২৪০ টি করে চোষক। প্রতিটি চোষক ৩০ পাউন্ড পর্যন্ত ভার বহন করতে সমর্থ। তবে, চোষকগুলো অতিমাত্রায় সংবেদনশীল। অতিসূক্ষ্ম রাসায়নিক পরিবর্তনেও এগুলো আলাদা আলাদাভাবে সংবেদনশীলতা প্রকাশ করতে পারে।LPSO_mating_Ross

সূত্রঃ লাইভসাইন্স

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics