আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবসে সেভ আওয়ার সি'র আলোকচিত্র প্রদর্শনী
আগামী ২২ মে,২০১৪, ঘটা করে বিশ্বব্যাপী পালিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস। এবারের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে “দ্বীপের প্রাণবৈচিত্র্য”। মূলত প্রাণের অস্তিত্বকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার পাশাপাশি তাদের বাসস্থান,সংরক্ষণ, বাস্তুসংস্থান প্রভৃতি সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে আরো একটু সচেতনতা তৈরী করাই এই দিবসটির প্রধান উদ্দেশ্য। পুরো বিশ্বের পাশাপাশি, আমাদের দেশেও এই দিবসটি ঘিরে ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে বিশেষ কিছু পরিকল্পনা। এই উপলক্ষ্যে ‘SAVE OUR SEA’ এবং ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(BAPA)’এর পক্ষ থেকে আলোকচিত্রী শরীফ সারোয়ার’র একটি একক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। প্রদর্শনীটি ‘বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র’-এর আর্ট গ্যালারীতে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। চলবে তিন দিনব্যাপী,২০,২১ এবং ২২ মে এবং খোলা থাকবে দুপুর ৩ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত। আর আলোকচিত্রের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে, সমুদ্র-গভীরের বিপন্ন বিস্ময় !
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ,সেন্ট-মার্টিন। একই সাথে প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থানের একটি উল্লেখযোগ্য এলাকা। বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্ব দিকের এই সেন্ট-মার্টিন দ্বীপটিকে বলা হয় সামুদ্রিক প্রাণ-বৈচিত্র্যের এক অভূতপূর্ব হটস্পট! কী নেই এখানে ! সামুদ্রিক প্রবাল থেকে শুরু করে,কচ্ছপ-কাছিম, কাঁকড়া, চিংড়ী, সামুদ্রিক শৈবাল, ডলফিন ইত্যাদি আরো বহু প্রজাতির প্রানী। তাদের জীবন-ধারণের প্রথা ভিন্ন,আবার কোথাও গিয়ে মিলে যায় এক সুতোয়। মিলেমিশে থাকে গভীর সমুদ্রে, অদ্ভুত এক সম্পর্ক বিদ্যমান তাদের জীবন-লিপিতে। অথচ,এই অমূল্য সম্পদ ,সেন্ট-মার্টিনকে সরকারীভাবে ঘোষণা করা হয়েছে বাস্তুগতভাবে সংকটাপূর্ণ এলাকা হিসেবে ! দুঃখের হলেও সত্যি যে,এর পেছনে গুরুতরভাবে দায়ী মানুষ। সমুদ্র এলাকা দূষণ, অতিরিক্ত মাছ শিকার আর সমুদ্র অম্লীকরণ কেই প্রধানত সবচাইতে বড় হুমকী বলে ধরা হচ্ছে সেন্ট-মার্টিনের জন্য। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই মূলত শরীফ সারোয়ার এর প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে,যাতে করে ছবিগুলো দেখে মনুষ্য বিবেক কে আরো একবার জাগ্রত করা যায়,এবং সেই সাথে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট-মার্টিনের রূপ-বৈচিত্র্যের দিকটিও তুলে ধরা যায়।
শরীফ সারোয়ার বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য আলোকচিত্রী,যিনি সমুদ্রের গভীরের রূপ-সৌন্দর্য তাঁর ক্যামেরায় ধারণ করেন। সেই সাথে রক্ষণশীলতাবাদী শরীফ সারোয়ার ‘SAVE OYR SEA’ এর একজন নির্বাহী সদস্য। তিনি বেশ কিছুদিন বাংলাদেশের স্বনামধন্য ম্যাগাজিন আর পত্র-পত্রিকায় সংবাদ-আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করেছেন। তারপরেই তাঁর ঝোঁক জন্মায় বঙ্গোপসাগরের গভীর অতলে হারিয়ে গিয়ে অমূল্য সব চিত্র তুলে আনার। তিনি বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন(BPJA) এর একজন উল্লেখযোগ্য সদস্য। বাংলাদেশের অতল-পানির আলোকচিত্রী হিসেবে তাঁর নাম ও যশ বেশ বিস্তৃত। ২০০০ সাল থেকে শুরু করে তিনি ‘বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম পুরস্কার’, ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন পুরস্কার’, বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি পুরস্কার’ ইত্যাদি সহ আরো বহু পুরস্কার তিনি অর্জন করেছেন তাঁর অদম্য সাহসিকতা আর নিষ্ঠার ফলস্বরূপ। ২০০৯ সালে BPJA এর পক্ষ থেকে সংবাদপত্রে প্রকাশিত আলোকচিত্রের বিভাগে তিনি “ম্যান অব দ্যা ইয়ার” উপাধি সংবলিত খেতাব পান।