আশ্রয়ের সন্ধানে লোকালয়ে হরিণ
আফজাল হোসেন
ভোলার মনপুরা উপজেলায় বাঁধ ভেঙে অতি জোয়ারের পানিতে বনাঞ্চল ডুবে যাওয়ায় হরিণের পাল আশ্রয় নিয়েছে লোকালয়ে। মনপুরা উপজেলার চর কুকরী-মুকরী, ঢালচর, কলাতলীর চর, চর বদনা, বাসভাঙ্গাসহ উপকূলীয় বন বিভাগের বনাঞ্চলে হরিণের অভয়ারণ্য আর প্রজনন কেন্দ্র। বন বিভাগের উদ্যোগে উপকূলীয় বনাঞ্চলে কয়েক জাতের হরিণ ছাড়া হয় এসব বনে। হরিণগুলোকে বাঁচাতে বনের ভেতর মাটির কিল্লা সৃষ্টি করে মিঠা পানির ব্যবস্থা করা না হলে বিলুপ্তি হয়ে যাবে এসব হরিণ বলে স্থানীয়দের ধারণা।
মনপুরা ও চরফ্যাশনের বনাঞ্চলে এখন দেখা মেলে শত শত হরিণের পাল। প্রায় সময় ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াতে গিয়ে লোকালয়ে চলে আসে। তবে এসব বনাঞ্চলে হরিণগুলোর জীবনের নিশ্চয়তা থাকার কথা থাকলেও রয়েছে নিরাপত্তা, মিঠা পানিসহ খাবারের অভাব। এর ওপর নতুন করে যোগ হয়েছে বাঁধভাঙা জোয়ারের পানি।
স্থানীয় মো. হেলাল, শাখাওয়াত ও মো. বাদশা মিয়া অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষের অবহেলায় হরিণের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নে বাতির খাল সংলগ্ন এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ৪নং দক্ষিণ সাকুচিয়াসহ ৩নং উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রামসহ বন বিভাগের সবকটি বনাঞ্চল ৬-৭ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। পানিতে ডুবে যাওয়া গ্রামগুলোর মানুষের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে ক্যামেরায় ধরা পড়ে বনাঞ্চলে হরিণের পাল জোয়ারের পানি থেকে নিজেদের বাঁচাতে ছুটে চলছে আশ্রয়ের সন্ধানে। এ সময় হরিণের পিছু নিয়ে দেখা যায় নবনির্মিত আবাসন প্রকল্পের উঁচু পুকুর পাড়ে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক হরিণের পাল। শুধু তাই নয়, প্রায় সময় এসব হরিণ মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে লোকালয়ে চলে আসে। তখন গ্রামের মানুষ হরিণ ধরে জবাই করে। এভাবে তজুমদ্দিন ও মনপুরা থেকে বহু হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে ইতিমধ্যে।
এ ব্যাপারে মনপুরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম জানান, হরিণ রক্ষণাবেক্ষণে বন বিভাগের উদ্যোগ রয়েছে। তবে লোকবল সংকটের কারণে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। এরপরও বনাঞ্চলে হরিণের বংশবিস্তার এবং অবাধ বিচরণের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রতি আমাদের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। লোকালয়ে চলে আসার পর অনেক হরিণ উদ্ধার করে পুনরায় বনে ছেড়ে দিয়েছি।