ওজোন স্তর সংরক্ষন দিবস-২০১৩ ;"আগত প্রজন্মের জন্য রাখি সুরক্ষিত বায়ুমণ্ডল"

সাইফুর রহমান সুমন

নানা প্রাণের আধার, জীব বৈচিত্রে ভরপুর আমদের এই পৃথিবী। পৃথিবী নামক এই গ্রহটিকে রক্ষাকবচ হিসেবে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে যে বায়ুমণ্ডলীয় অবয়ব, তার নাম ওজোন স্তর (ozone layer)। এই ওজোন স্তর সূর্য থেকে বিকিরিত হয়ে আসা অতি-বেগুণী রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পৃথিবী ও তার জীব জগতকে রক্ষা করে চলেছে। মনুষ্য কারণে সৃষ্ট গ্রীণ হাউজ গ্যাসের প্রভাবে দিন দিন ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে ওজোন স্তর, তৈরী করছে ওজোন ছিদ্র (ozone hole)। তাই ওজোন স্তরকে রক্ষা করার ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালের ১৬ই সেপ্টম্বর থেকে সারা বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে ‘বিশ্ব ওজোন স্তর সংরক্ষন দিবস’। environmentmove.earth এর উদ্যোগে এবছর পালিত “বিশ্ব ওজোন স্তর সংরক্ষন দিবস” উপলক্ষে আপনাদের সামনে এসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরার নিমিত্তে আমাদের এই ছোট্ট প্রয়াস।

জেনে নিই ওজোন স্তর সংরক্ষন দিবসের ইতিহাস

ওজোন স্তর রক্ষার প্রয়োজনীয়তা প্রথম উপলব্ধি করা হয় যখন ১৯৭৪ সালে রোলান্ড এবং মোলিনার প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যায়, বায়ুমন্ডলে ক্ষতিকারক ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (cloroflouro carbon) যৌগটি আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বায়ুমণ্ডলের অতি প্রয়োজনীয় এই ওজোন স্তর ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। এরপর ১৯৮৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর কানাডার মন্ট্রিল শহরে বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তর ক্ষয়ের জন্য দায়ী দ্রব্যগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ বা সীমিত করার জন্য ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় ওজোনস্তর ধ্বংসকারী পদার্থের ওপর মন্ট্রিল প্রটোকল গৃহীত হয়। প্রটোকল অনুযায়ী সদস্যদেশগুলো একে একে ওজোন ধ্বংসকারী রাসায়নিক ক্লোরোফ্লোরোকার্বন, হ্যালন, কার্বন টেট্রাক্লোরাইড, মিথাইল ক্লোরোফর্ম, মিথাইল ব্রোমাইড, হাইড্রোব্রোমোফ্লোরোকার্বন, হাইড্রোফ্লোরোকার্বন ইত্যাদির উৎপাদন ও ব্যবহার সীমিত ও নিষিদ্ধ করতে সম্মত হয়। বাংলাদেশ ১৯৯০ সালে এই মণ্ট্রিল প্রটোকল স্বাক্ষর করে। তারপর ১৯ই ডিসেম্বর ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ‘১৬ই সেপ্টেম্বর’ দিনটিকে “আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সংরক্ষন দিবস” হিসেবে ঘোষণার আলোকে ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বিগত ২০১২ সালে পালিত হয়েছিল দিবসটির ২৫ বছর পূর্তি। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় “আগত প্রজন্মের জন্য বায়ুমণ্ডলকে সুরক্ষিত রাখি”।

577320_10200299374953398_428547750_n

জেনে নেয়া যাক ‘ওজোন’ কী?

প্রথমত, ওজোন বায়ুমন্ডলের সর্বত্র পাওয়া যায় এমন একটি গাঢ় নীল বর্ণের গ্যাস যা অক্সিজেনের রাসায়নিক বন্ধনের দ্বারা তৈরী। এটি বাতাসের চেয়ে হালকা। অক্সিজেনের একটি সক্রিয় রূপভেদ হচ্ছে এই ওজোন। এর সংকেত O3, অর্থাৎ তিনটি অক্সিজেন পরমাণু দ্বারা এটি গঠিত। এই গ্যাস বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় স্তর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে অবস্থান করে ভু-মণ্ডলকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে যা ‘ওজোন স্তর’ নামে আখ্যায়িত। এটি ভূমণ্ডল থেকে কম বেশী ১০-৫০ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত। ১৯১৩ সালে ফরাসি পদার্থবিদ চার্লস ফ্যাব্রি ও হেনরি বাইসন ওজোন স্তর আবিষ্কার করেন। এ স্তরের বৈশিষ্ট বের করেন ব্রিটিশ আবহাওয়াবিদ জিএমবি ডবসন। তিনি নিজের তৈরি স্পেকট্রোফটোমিটার বা সরল বর্ণবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে ভূমি থেকেই স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোন মাপার কৌশল বের করেন। ওজোন স্তরে ওজোনের গুরুত্ব অপরিসীম, এটি সূর্য থেকে বিকিরিত অতি-বেগুণী রশ্মি শোষণ করে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে প্রাণীজগতকে রক্ষা করে।

কীভাবে ক্ষয় হচ্ছে ওজোন স্তর?

পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞানের ভাষায় বিষয়বস্তুটাকে আমরা সহজভাবে এভাবে তুলে ধরতে পারি। বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তর বিনষ্টের পিছনে রয়েছে ক্লোরোফ্লোরোকার্বন গ্যাসসমুহ(CFCs), তার মধ্যে ক্লোরিন গ্যাসের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী। আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম থেকে প্রতিনিয়ত তৈরী হচ্ছে ওজোন ধ্বংসকারী রাসায়নিক পদার্থসমূহ। একটি ক্লোরিন পরমাণু প্রায় এক লাখ ওজোন অনুকে ভেঙে তছনছ করে দিতে পারে। ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (CFCs) প্রধানত: শীতাতপ নিয়ন্ত্রনের যন্ত্রপাতি, রেফ্রিজারেটর, এ্যরোসল, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রের সার্কিটে (পরিষ্কারক হিসাবে) ব্যবহৃত হয়। ওজোন স্তরে তীব্র অতিবেগুনি রশ্মি ক্যাটালিটিক চেইন রিএ্যাকশন দ্বারা ক্লোরোফ্লোরো কার্বনের (CFCs) রাসায়নিক বন্ধন থেকে ক্লোরিন পরমাণুকে মুক্ত করে, যা বায়ুমন্ডরের উপরের স্তরের ওজোনের (Stratospheric Ozone) জন্য হুমকিস্বরূপ। গবেষনার আলোকে এটা স্পষ্ট যে, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন যৌগ থেকে মুক্ত ক্লোরিন পরমাণু বায়ুমন্ডলে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত করে। ক্লোরিন মনোক্সাইড ভেংগে ক্লোরিনমুক্ত হয়, যা পুনরায় ওজোনের সংগে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় লিপ্ত হয়। এভাবে চক্রাকারে বায়ুমন্ডলে ওজোন স্তর ধ্বংস হতে থাকে প্রধানত ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন(CFC) যৌগের চক্রাকার ক্ষতিকর প্রভাবে।577336_10200299385633665_181177753_n
বিজ্ঞানীদের মতে ক্লোরোফ্লোরো কার্বনের(CFC) মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে পৃথিবীর ওজোন স্তরের ফাটল ধরাতে বহুলাংশে দায়ী এবং এই ফাটলের মধ্য দিয়ে সূর্য থেকে প্রচুর পরিমানে অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে চলে আসছে। অতিবেগুনি রশ্মি তিন ধরনের- অতিবেগুনি রশ্মি-এ (UV-A), অতিবেগুনি রশ্মি-বি ( UV-B) এবং অতিবেগুনি রশ্মি-সি (UV-C), এর মধ্যে অতিবেগুনি রশ্মি-বি ( UV-B)’র ক্ষতির মাত্রা বেশি। ইদানিং গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ওজোন ছিদ্র (ozone hole) দিয়ে অতিবেগুনি রশ্মি-বি ( UV-B) বেশী প্রবেশ করছে। এন্টার্কটিক ওজোন ছিদ্রর মাত্রা ৩৩ শতাংশ বেশী পূর্বের ১৯৭৫ সালের ওজোন ছিদ্রের মানের তুলনায়। ক্লোরোফ্লোরোকার্বন গ্যাসসমুহের মুখ্য ভূমিকা ছাড়াও আরও যেসব কারণ রয়েছে ওজোন স্তর ধংসের পিছনে তা হচ্ছে, কলকারখানা-যানবাহনের বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, ট্যাঁনারি কারখানার বর্জ্য পদার্থ যা পরবর্তীতে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে ক্লোরিন গ্যাস তৈরিতে ভূমিকা রাখে, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্গত তেজস্ক্রিও বিকিরণ, রঙ প্রস্তুতকারী কারখানা, ওষুধ শিল্প, উড়োজাহাজ হতে নির্গত নাইট্রোজেন অক্সাইডসমূহ এছাড়াও যেসব কল-কারখানায় কার্বন ডাই অক্সাইড এর ব্যবহার ও উপজাত পদার্থ হিসেবে কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয় এ সবই ভূমিকা রাখে ওজোন স্তর ধ্বংস করতে।

ওজোন স্তর ধ্বংসের প্রভাব কতটুকু ?

এভাবে যদি বলা হয় যে, ওজোন স্তর ধ্বংসের মাধ্যমে আমরা শুধু আমাদেরকেই না আমাদের আগত প্রজন্মকে গলা টিপে হত্যা করছি, তাহলে বোধহয় বাড়িয়ে বলা হবে না। মনুষ্য সৃষ্ট কারণই ওজোন স্তর ধ্বংসের প্রধান কারণ। পরিবেশের বিরুপ প্রতিক্রিয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করছে ওজোন স্তর। আসুন স্বল্প পরিসরে দেখে নেয়া যাক ওজোন স্তরের বিনষ্ট সাধন আমাদের চারপাশে কতটুকু প্রভাব বিস্তার করছে-

১. অ্যান্টার্কটিকা উপরিস্থ ওজোন স্তরের ফাটলের পরিমাণ সবচেয়ে বেশী, এই ফাটলের মধ্য দিয়ে সূর্য থেকে প্রচুর পরিমাণে অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে চলে আসছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান নিয়ামক ওজোন স্তরের এই বিনষ্ট সাধন। ফলশ্রুতিতে জীব জগতের উপর পরছে নানা ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব।
২. বসন্ত সময়ে (spring time) মেরু অঞ্চলে ওজোন স্তরে ঘনত্ব হ্রাস পায় , এটি ওজোন ছিদ্র (ozone hole) নামে পরিচিত। ওজোন গ্যাস গ্রীণ হাউজ প্রতিক্রিয়া বৃদ্ধি করে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে চলেছে।int-day-oznone-layer
৩. ওজোন গ্যাস নিজে একটি গ্রীণ হাউজ গ্যাস হিসেবে পরিচিত, এর ক্রমহ্রাস মানের কারণে গ্রীণ হাউজ প্রভাব বেড়ে চলেছে।
৪. আগত অতিবেগুনি রশ্মি মানব দেহে তৈরী করছে নানা ধরনের স্থায়ী সমস্যা যেমন চোখের অ্যালার্জি, কর্নিয়া বিনষ্ট, ত্বকের ক্যান্সার, শরীরের চামড়া খসখসে, কোচকানো ও চামড়ার ভয়াবহ ক্যান্সার ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমার মত রোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার, কিডনি সমস্যা, জিনগত সমস্যা, কখনো কখনো জিনগত স্থায়ী পরিবর্তন, বিকলাঙ্গ শিশু জন্মগ্রহণ, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া ছাড়াও আরও অনেক ধরনের অস্থায়ী সমস্যা গবেষণার ফলাফলে উঠে আসছে।
৫. অতিবেগুনি রশ্মি সমুদ্রের ফাইটোপ্লাঙ্কটন ধ্বংসের বর্তমানে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সামুদ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদ অকালে মারা যাচ্ছে। যার ফলে খাদ্য শৃঙ্খলে দেখা দিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। এতে করে সামুদ্রিক সম্পদের পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে, ঘাটতি দেখা দিয়েছে বিশ্ব আমিষ খাদ্যের।
৬. ওজোন গ্যাস এভাবে যদি সরাসরি এসে ভূপৃষ্ঠে পড়তে থাকে তাহলে তা বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরের সমস্ত অক্সিজেন গ্যাসকে বিষাক্ত ওজোন গ্যাসে পরিণত করে তুলবে। এই বিষাক্ত ওজোন গ্যাসের আধিক্যে মানবজীবন মারত্মকভাবে বিপন্ন হয়ে পড়বে।
৭. নিরক্ষরেখার (Equater) কাছাকাছি দেশগুলির মানুষের মধ্যে নানা ধরনের পরজীবি রোগের সংক্রমন বেশী ঘটবে।
৮. বিশ্বব্যাপী এ্যমফিবিয়ানস বা উভচর প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
৯. সালোক-সংশ্লেষণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে সারা পৃথিবীতে খাদ্য সংকট দেখা দিবে।
১০. অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি বিলীন হয়ে যাচ্ছে, উদ্ভিদ বীজের গুনগত মান কমে যাচ্ছে, প্রানী হারাচ্ছে তাদের জন্মধারন ক্ষমতা।

কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?
পরিশেষে আমাদের কাছে এই বিষয়টি পরিস্কার যে, আমাদের পৃথিবী ও তার জীবজগতকে  ধ্বংসের হাত থেকে পরত্রাণ দিতে হলে ওজোন স্তর সংরক্ষণ প্রয়াসে জরুরী ভিত্তিতে সার্বজনীন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সংক্ষেপে আমরা কিছু চিহ্নিত বিষয়ে চোখ বুলিয়ে নিই, যা যা আমরা পদক্ষেপ হিসেবে গ্রহণ করতে পারি এবং যে সব বিষয়ে আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি গুরুত্বসহকারে নিতে হবে-

– গ্রীণ হাউজ গ্যাস নির্গমন যাতে কম হয় সে প্রয়াসে রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ভূমিকা নিতে হবে। এসংক্রান্ত যেসব প্রটোকল তৈরী হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে আইনি চোখ রাখা।
– গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমনের উৎস চিহ্নিত করে তা বন্ধ করা, প্রয়োজনে যথাসম্ভব কম গ্যাস নির্গমন যাতে হয় সে দিকে দৃষ্টিপাত করা।
– কার্বন নিঃসরণ যাতে কম হয় সে দিকে বিশ্ব নেতাদের সুনজর দিতে হবে। শতকরা ৭০ ভাগ কার্বন নিঃসরণ করে উন্নত বিশ্বগুলো যেমন আমারিকা, চীন, রাশিয়া, এদের প্রতি আইনি প্রয়োগ জোরদার করতে হবে।
– কল-কারখানা, মিল, ফ্যাক্টরি, রঙ, সাবান, কসমেটিকস, ট্যানারি শিল্পে প্রচুর পরিমানে CFC গ্যাস ব্যবহৃত হয়। এই সব প্রতিষ্ঠান থেকে যাতে কম CFC গ্যাস নির্গমন হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে বিকল্প বেবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
– মন্ট্রিল প্রটোকলে স্বাক্ষরিত আইন যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক কমিটি গঠন করতে হবে। প্রটোকলে উল্লেখিত নিষিদ্ধ পদার্থের বাস্তবায়ন করতে হবে। অমান্যকৃত দেশ বা দেশসমূহকে জরিমানা করার মত পদক্ষেপ নিতে হবে, জরিমানা অর্থ ভুক্তভোগী দেশ বা দেশসমূহকে দিতে হবে আইনি বেবস্থার মাধ্যমে।
– জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এসংক্তান্ত সচেতনতামূলক প্রচারণার বেবস্থা হাতে নিতে হবে।
– বিকল্প জ্বালানির বেবস্থা হাতে নিতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির প্রয়োগ কমিয়ে পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়াতে হবে যেমন সৌর চালিত বিদ্যুৎ, পানি ও বায়ু চালিত বিদ্যুৎ বেবস্থা করা যেতে পারে, ব্যাটারি চালিত ইঞ্জিন প্রভৃতির প্রচলন বাড়ানো যেতে পারে।
– উন্নত বিশ্ব কর্তৃক উপরোল্লিখিত ব্যবস্থা প্রয়োগের নিমিত্তে প্রযুক্তির বাজার হ্রাসমান করা, যেহেতু তাদের দ্বারা ক্ষতি বেশী হচ্ছে এবং এর দ্বারা সহজলভ্য বিকল্প জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি প্রয়োগ করা অনুন্নত দেশের জন্য সহজ হবে।
– নগরায়ন ও শিল্পায়ন উন্নত বিশ্ব তৈরির জন্য অপরিহার্য হলেও একে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে হবে।

মানুষ জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনেক এগিয়ে গেছে, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অগ্রসর হচ্ছে প্রযুক্তি। মানুষের চলা ফেরা, উঠা বসা সর্বত্রই রয়েছে প্রযুক্তির ছোঁয়া, ঘরে বাইরে কর্মকে করে তুলেছে সহজ থেকে সহজতর। কিন্তু আমরা কি একটিবারের জন্য ভেবে দেখেছি আমরা নিজেদেরকে কি আশুভ শক্তির কড়াল গ্রাসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তনের মাদ্ধমে আমরা তা সহজেই উপলব্ধি করতে পারি। ওজোন স্তর ক্ষয় হয়ে নিয়ামক হিসেবে বারিয়ে দিচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা। আমরা যদি আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর, সবুজ পৃথিবী রেখে যেতে চাই তাহলে আমাদেরকে কালক্ষেপণ ব্যতিরেক নিতে হবে কার্যকরী পদক্ষেপ। সবুজ ধরনীরবুকে বেড়ে উঠুক আমার আপনার সন্তান।

এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম

তথসুত্রঃ  us enviromental protection agency.

Prothom-alo blog.

newscientist.com

nasa climate observatory

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics