
গিরগিটি
বাগানের গিরগিটি (বৈজ্ঞানিক নাম: Calotes Versicolor) যা ‘রক্তচোষা’ নামে অতি পরিচিত একপ্রকার নিরীহ সরীসৃপ। প্রতিনিয়ত বন-বাগান ও ঝোপঝাড় ধ্বংস হওয়ার কারণে দিনে দিনে এই সরীসৃপগুলো হুমকির সম্মুখীন হয়ে পরছে।
এই বাগানের গিরগিটি বা রক্তচোষা গড়ে ৪৪ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। লেজটিই প্রায় ৩২ সেন্টিমিটার। আর দেহ মাত্র ১২ সেন্টিমিটার। দেহের ওপরের অংশ বাদামি থেকে ধূসর। তবে এই রং প্রয়োজনের সময় পরিবর্তন করতে পারে, যেমন—হালকা জলপাই বাদামি, জলপাই-ধূসর বা হলদে। পিঠের ওপর ও পাশে কতগুলো ফোঁটা আর দাগ থাকে। দেহের নিচের অংশ ময়লা-সাদা। পিঠের ওপর শিরদাঁড়া বরাবর কাঁটা রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ গিরগিটির চোখের নিচের আঁশগুলো কালচে।
এই সরীসৃপগুলোকে শহর, গ্রাম, বন—সবখানেই দেখা যায়। খোলা মাঠ, ঝোপঝাড়, বনের প্রান্ত, বাগান, পার্ক প্রভৃতি জায়গা বেশি পছন্দ। মূলত কীটপতঙ্গভোজী হলেও ডিম, ছোট ছোট কাঁকড়া ও অন্যান্য ছোট মেরুদণ্ডী প্রাণীতেও এদের অরুচি নেই।
এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর প্রজননকাল। এ সময় পুরুষগুলোর দেহে প্রজননের রং খোলে। লাল-কালো গলা ফুলিয়ে স্ত্রীকে আকর্ষণ করে। প্রজননের পর স্ত্রী নরম মাটিতে কয়েক সেন্টিমিটার লম্বা গর্ত করে ৬-২০টি ডিম পাড়ে। সাদা, লম্বাটে ও নরম খোসার ডিমগুলো ছয়-সাত সপ্তাহে ফোটে। বাচ্চা ৭ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। প্রজনন-উপযোগী হতে বছর খানেক সময় লাগে। প্রজনন মৌসুমে পুরুষ গিরগিটির সামনের পা দুটোসহ মাথা থেকে বুক পর্যন্ত কমলা-লাল রং ধারণ করে। অনেক সময় দুটো পুরুষ গিরগিটি মারামারি করলেও মুখমণ্ডল ও মাথা টকটকে লাল দেখায়। সদ্য ফোটা ও অল্প বয়স্ক বাচ্চার রং হালকা সোনালি-হলুদ থেকে বাদামি। প্রজনন-পরবর্তী দেহের রং কালচে বা কালচে ধূসর। এই সরীসৃপগুলো প্রজনন মৌসুম ছাড়াও শিকারি প্রাণী বা শত্রুর হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য দেহের রং পরিবর্তন করে হয় শত্রুকে ভয় দেখায়, না-হয় প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে যায়।
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ সৈয়দ আব্বাছ, ফ্রিলেন্স আলোকচিত্রি।
এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক
এরা কি আসলেই রক্ত চুষে খায়? আমি ও জানি যে এরা রক্ত চোষা! জানতে পারলে ভালো হয়। 🙂