গ্রিন টেকনোলোজির আদ্যোপান্ত – পর্বঃ ১

তানভীর হোসাইন হাসান

পৃথিবী আজ তার বিশুদ্ধ রুপ হারিয়ে ফেলেছে যার জন্য প্রধানত দায়ী হচ্ছে মানুষ। আর এর প্রভাবে মানুষই আজ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। দেরিতে হলেও মানুষ বুঝতে পেরেছে এই পরিবেশ রক্ষা করার জন্য অতি সত্ত্বর কোনো ব্যাবস্থা নেয়া খুব জরুরি। সেই লক্ষে চলছে নানা গবেষনা আর পরীক্ষা নিরীক্ষা।আর এর ফলস্বরূপ আবিষ্কৃত হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব নানারকম প্রযুক্তি। পরিবেশ বান্ধব এসব প্রযুক্তিকে আমরা বলছি “গ্রিন টেকনোলোজি” বা সবুজ প্রযুক্তি হচ্ছে এমনই এক্ ধারনা যা মানুষ দুষিত পরিবেশকে বিশুদ্ধ করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে যাচ্ছে। সবুজ প্রযুক্তির মাধ্যম হিসেবে ধারাবাহিকভাবে এমন কিছু প্রযুক্তি এবং পদার্থ তৈরী করা হচ্ছে যার মাধ্যমে আমাদের শক্তি উৎপাদনের জন্য বিষাক্ত পদ্ধতিগুলোর পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারব। বর্তমানে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে গত দুই দশকের তথ্য প্রযুক্তির বিস্ফোরন এলাকার মানুষের প্রাত্যাহিক জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে যা প্রাথমিক দিকে শুধু কল্পনাপ্রসুতই ছিল।  সবুজ প্রযুক্তি বলতে বুঝায় প্রাত্যাহিক জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনে তথ্য প্রযুক্তির এমন ব্যবহার যার ফলে পরিবেশ তার নিজস্ব গুনাবলির ধারন অক্ষুন্ন রাখবে এবং ব্যবহারকারী তার সর্বোচ্চ প্রয়োজনীয়তা মেটাবে। পরিবেশ বান্ধব কর্মকান্ডের মাধ্যমে পরিবেশের স্বাভাবিক অবস্থা অব্যাহত রেখে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।green technology

সবুজ প্রযুক্তির উদ্দেশ্য

Sustainability বা সহনশীলতা

Sustainability বা সহনশীলতা হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার যাতে সম্পদের ক্ষতি বা ধ্বংস না করে ভবিষ্যত সমাজের প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাধীকার দিয়ে বর্তমানের চাহিদা পুরন করা হয়। এর মাধ্যমে প্রকৃতিকে তার নিজস্ব রুপে বিরাজ করতে আমরা দারুনভাবে সহায়তা করতে পারব।

পুনর্ব্যবহার নকশা

উৎপাদিত পণ্যের চিরায়ত “One time use” বা “এক চাক্রিক ব্যবহার” বন্ধ করে তার পুনর্ব্যবহার বা পুনর্গঠনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করা। এর মাধ্যমে পরিমিত সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে।

 বর্জের উৎস হ্রাসকরন

পণ্যের উৎপাদন এবং ব্যবহারের প্রক্রিয়া এমনভাবে পরিবর্তন করতে হবে যাতে করে বর্জ পদার্থের উৎস সর্বোচ্চ পরিমানে হ্রাস পায়। পণ্য উৎপাদনের সময় ইহার সমস্ত অংশের ব্যবহার উপযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।

উদ্ভাবন

জীবাশ্ম জ্বালানী বা রাসায়নীক নির্ভর কৃষিব্যবস্থা যেগুলো স্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে আসছে তার বিকল্প উদ্ভাবন করা। কৃষিব্যবস্থাকে পরিবেশ উপযোগী বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে আর যুগোপযোগি করে তোলা।

স্থায়ীত্ব

যেসকল প্রযুক্তিগত মাধ্যম ও পণ্য পরিবেশের উপকার সাধন করে সেগুলোকে কেন্দ্র করে একটি অর্থনৈতিক পরিধি নির্মান করা এবং ইহার বাস্তবায়ন তরান্বিত করে নতুন প্রকল্প সৃষ্টি করা যেগুলো সত্যিকারভাবে পৃথিবীকে রক্ষা করবে।

সবুজ প্রযুক্তির মূখ্য  বিষয়সমুহ

শক্তি

বস্তুতপক্ষে সবুজ প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হচ্ছে শক্তি। বিকল্প শক্তির উদ্ভাবন, শক্তি উৎপাদন এবং পরিবেশবান্ধব উপায় উদ্ভাবন করাই হচ্ছে সবুজ প্রযুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য। বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে পরিবেশ দূষণকারী খাত হচ্ছে শক্তি উৎপাদন খাত যার ফলে পৃথিবীর পরিবেশ দূষণের দুই-তৃতীয়াংশ সংঘটিত হচ্ছে। ঊন্নত বিশ্বের  বিভিন্ন পরিবেশঘাতী শক্তি উৎপাদন কর্মকান্ডের ফলে বৈশ্বিক জলবায়ুর আজকের এই পরিবর্তন। এই বিষয়কে সামনে এনেই সবুজ প্রযুক্তির পুর্ন বাস্তবায়ন ঘটানো সম্ভব।

সবুজ স্থাপনা

ঘরবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মানের সময় সবুজ প্রতিবেশকে অগ্রাধীকার দেয়া, অর্থাৎ স্থাপনা এলাকার চারপাশে সবুজের আবাহন তৈ্রী করা। মানুষের আবাসস্থলকে কেন্দ্র করে একটি বৃক্ষময় পরিবেশ তৈ্রী করা যাতে করে মানুষ প্রকৃতিকে ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারে এবং তার সাথে পরিবেশও তার বিশুদ্ধ রুপ ফিরে পাবে।

 পরিবেশবান্ধব আমদানীর অগ্রাধীকার

এই বিষয়টি একটি দেশের সরকারী কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারে থাকে। পরিবেশবান্ধব আমদানী বলতে বুঝায় আন্তর্জাতিক বাজারে সেসমস্ত পণ্যের খোঁজ় করা যেগুলোর উপাদান এবং উৎপাদন পদ্ধতি পরিবেশের উপর সবচেয়ে কম প্রভাব ফেলে এবং এই পণ্যগুলোর আমদানী নিশ্চিতকরন।

সবুজ রসায়ন

রাষায়নিক পণ্যসমুহের উৎপাদন, নকশা ও ব্যবহার পদ্ধতিসমুহ এমনভাবে নির্ধারন করা যাতে ক্ষতিকর পদার্থসমুহের উৎপাদন ও ব্যবহার সর্বোচ্চ পরিমানে হ্রাস পায়। সবুজ রসায়ন বলতে রাসায়নিক পদার্থ সমুহের এমন ব্যবহার নির্দেশ করে যাতে করে তা পরিবেশবান্ধব এবং সর্বোচ্চ কার্যকারীতা লাভ করে।

সবুজ ন্যানোপ্রযুক্তি

ন্যানোপ্রযুক্তির মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে সকল পদার্থের পরিমান ও গণনা ন্যানোমিটার স্কেলে সম্পাদন করা। এক্ষেত্রে সবুজ রসায়ন ও সবুজ প্রকৌশল নীতির সতঃস্ফুর্ত মেলবন্ধনই হচ্ছে সবুজ ন্যানোপ্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব সুক্ষভাবে পরিবেশের স্বাভাবিকতা রক্ষা করে প্রয়োজনীয় কার্যাবলি সম্পাদন করা যাবে।

সবুজ প্রযুক্তির খাতসমুহ

রিসাইক্লিং

সবুজ প্রযুক্তির সবচেয়ে আলোচিত মাধ্যম হচ্ছে রিসাইক্লিং বা পুনঃচক্রায়ন। এর মাধ্যমে পরিবেশে উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থসমুহের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়। প্রতিদিন নানা ধরনের বর্জ্য আমরা পরিবেশে উৎক্ষেপ করি যেমন, ঘরবাড়ীর খাবারের বর্জ্য, শিল্পকারখানার বর্জ্য, কৃষিবর্জ্য, মানুষ ও জীবজন্তুর বর্জ্য। বর্জ্য পদার্থসমুহকে সাধারনত দুই ভাগে আলোচনা করা হয় যথা শহুরে/উদ্ভিদ বর্জ্য এবং মানুষ/প্রাণীসমুহের বর্জ্য। উদ্ভিজ্জ বর্জ্য ভিবিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। রিসাইক্লিং প্রক্রিয়া নিম্নোক্ত অংশ নিয়ে সম্পন্ন হয়ঃ

সংগ্রহ

বর্জের স্তুপ থেকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য পদার্থসমুহকে আলাদা করার জন্য অনেকগুলো পদ্ধতি আছে। তিন ধরনের প্রধান পদ্ধতি রয়েছে,recycling

 নিক্ষেপন কেন্দ্রঃ নিক্ষেপন কেন্দ্র বলতে বোঝায় পুনর্ব্যবহারযোগ্য বর্জ্য একটি নির্দিষ্ট সংগ্রহের জায়গায় বা ভ্রাম্যমান সংগ্রাহক কেন্দ্রে অথবা পুনঃপ্রক্রিয়াকরন প্লান্ট। এটা বর্জ্য সংগ্রহের সবচেয়ে সহজ উপায় যদিও এটার মান খুব নিম্ন হয় এবং সময়সাপেক্ষ।

পুনঃক্রয় কেন্দ্রঃ  পুনঃক্রয় কেন্দ্রগুলো বিভিন্ন ধরনের হয় যেখানে পরিষ্কার পদার্থগুলো সবচেয়ে দ্রুত ক্রয় করা হয় যার ফলে ব্যবহারের উৎসাহ বেড়ে যায় এবং একটি স্থায়ী যোগান তৈ্রী হয়। প্রক্রিয়াজাত পদার্থগুলো তারপরে বিক্রয় করা হয় এবং মুনাফা অর্জিত হয়।

 প্রক্রিয়াকরন কেন্দ্রঃ প্রক্রিয়াকরন কেন্দ্রগুলো কিছু সুক্ষ নিয়মের দ্বারা পরিচালিত হয় যা নির্ভর করে বর্জ্যগুলো কোথায় তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং পরিষ্কার করা হয়েছে। একটি বর্জ্য সংগ্রাহক যান বর্জ্যগুলো নিয়ে আসে।

স্পেক্ট্রামের একপ্রান্তে  সংগৃহিত মিশ্র বর্জ্যগুলো রাখা হয় যেখানে সকল পুনর্ব্যবহার্য পদার্থগুলো বাকি বর্জ্যগুলোর সাথে মিশ্রিত করা হয় এবং আকাংখিত পদার্থগুলো আলাদা ও পরিষ্কার করা হয়। যার ফলে বিশাল পরিমান পুনরায় ব্যবহার উপযোগী বর্জ্য পাওয়া যায়।

নবায়নযোগ্য শক্তি

নবায়নযোগ্য শক্তি হচ্ছে যা পুনরায় পরিপুর্ণ করা যায় যথা সূর্যের আলো, বায়ু, বৃষ্টি, ঢেউ, তরঙ্গ ইত্যাদি। বর্তমানে পৃথিবীর ১৬% বার্ষিক শক্তি আসে নবায়নযোগ্য উৎস হতে, সাথে ১০% জীবাশ্ম জালানী যা প্রধানত তাপের উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং ৩.৪% আসে পানিবিদ্যুৎ হতে। বায়ুশক্তি বার্ষিক ৩০% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ২০১২ সালের শেষ পর্যন্ত ২৮২,৪৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সারা বিশ্বে উৎপন্ন করেছে এবং এটি ইউরোপ, এশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১২ এর শেষে সারা বিশ্বে আলোকভোল্টায়িক ক্ষমতা ছিল ১০,০০০ মেগাওয়াট এবং এই শক্তিকেন্দ্রগুলো জার্মানি ও ইতালীতে প্রচুর জনপ্রীয়তা পেয়েছে। ব্রাজিলে বর্তমানে সবচেয়ে বড় নবায়নযোগ্য শক্তিকেন্দ্র রয়েছে যেখানে আখ থেকে ইথানল জ্বালানী প্রস্তুত করা হয় যা ঐ দেশের ১৮% স্বকীয় শক্তির যোগান দেয়।

নবায়নযোগ্য শক্তি প্রথাগত জ্বালানী প্রক্রিয়ার চারটি ভিন্ন ক্ষেত্রকে প্রতিস্থাপন করে যথা বিদ্যুৎ উৎপাদন, তাপীয়করন, গাড়ীর জ্বালানী এবং গ্রামীণ শক্তি কার্যক্রম।reuse reduce recycle

শক্তি উৎপাদন

নবায়নযোগ্য শক্তি সারা বিশ্বের প্রয়োজনীয় শক্তির ১৯% যোগান দেয়। নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন এখন বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং কিছু এলাকায় বায়ুশক্তি একাই উল্লেখযোগ্য পরিমানে শক্তি সরবরাহ করে। উদাহরনসরুপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লোয়া প্রদেশে ১৪%, উত্তর জার্মানীর শেলসুয়িগ হোস্টেইন প্রদেশে ৪০% এবং ডেনমার্কে ৪৯% কিছু দেশ তাদের অধিকাংস শক্তিই নবায়নযোগ্য উৎস হতে সংগ্রহ করে যেমন, আইসল্যান্ড(১০০%), নরওয়ে(৯৮%), ব্রাজিল(৮৬%), অষ্ট্রিয়া(৬২%), নিউজিল্যান্ড(৬৫%) এবং সুইডেন(৫৪%)।

তাপীয়করন

সৌ্রশক্তিতে উত্তপ্ত পানি অনেক দেশে নবায়নযোগ্য তাপশক্তিতে গুরুত্বপুর্ন অবদান রাখছে বিশেষ করে চীনে, যেখানে পুরো পৃথিবীর মোট পরিমানের ৭০% রয়েছে। অধিকাংশ প্রকল্প বিভিন্ন বহুতল বিল্ডিং এ স্থাপন করা হয়েছে এবং যা চীনের ৫০ থেকে ৬০ মিলিয়ন গরম পানির প্রয়োজনীয়তা মিটায়। জীবাশ্ম জালানীর ব্যবহার অবশ্য এখনো বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুইডেনে তাপশক্তি উৎপাদনের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার তেলের ব্যবহারের চেয়েও বেশি। জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার হ্রাস করার জন্য সৌরপ্রকল্পটি সারাবিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তুলতে হবে।

পরিবহন জ্বালানী

নবায়নযোগ্য জৈবজ্বালানী ২০০৬ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহনে তেলের ব্যবহার তাৎপর্যপুর্ণ হারে কমিয়ে দিয়েছে। ২০০৯ সালে সারা বিশ্বে ৯৩ বিলিয়ন লিটার জৈবজ্বালানীর উৎপাদন হয়েছে যা ৬৮ বিলিয়ন লিটার গ্যাসোলিনের সমতুল্য অর্থাৎ পৃথিবীর উৎপাদিত গ্যাসলিনের ৫%।

সৌরশক্তি

সৌরশক্তি হচ্ছে সূর্য থেকে আসা সৌর বিকিরন যা তাপ বা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। সৌরচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ফটোভোল্টায়িক বা তাপ ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়। সংগ্রহের পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে সৌর প্রযুক্তিগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুই ধরনের হয়।

প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয় ফটোভোল্টায়িক প্যানেল ও সৌরতাপ সংগ্রাহক যা ধৃত শক্তিকে নিয়ন্ত্রন করে। পরোক্ষ পদ্ধতিতে স্থাপনাগুলো সূর্যকে কেন্দ্র করে স্থাপিত হয় এবং তাতে কিছু আলোক বিচ্ছুরন  ধর্ম বিশিষ্ট পদার্থ ব্যবর্হত হয়, সাথে জায়গাগুলো এমনভাবে সজ্জিত করা থাকে যাতে বায়ু প্রাকৃতিকভাবেই ঘুর্ণায়মান হয়।

ভু-তাপীয় শক্তি

ভু-তাপীয় শক্তি উৎপন্ন হয় পৃথিবীর অভ্যন্তরীন তাপীয় পদ্ধতিতে এবং এটি ভূ অভ্যন্তরেই সঞ্চিত থাকে। কোনো পদার্থের তাপমাত্রা নির্ণায়ক শক্তিই হচ্ছে ঐ পদার্থের তাপীয় শক্তি। পৃথিবীর ভূ-তাপীয় শক্তির কিছু অংশ(২০%) এর সৃষ্টির সময় উৎপন্ন হয়েছে এবং বাকিটা(৮০%) বিভিন্ন খনিজ পদার্থের তেজষ্ক্রিয় ক্ষয়ের মাধ্যমে হয়েছে। ভূ-তাপীয় শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় তাপ ভূগর্ভের অভ্যন্তরের প্রায় ৪০০০ মাইল গভীর আসে। ভূগর্ভের কেন্দ্রে তাপমাত্রা প্রায় ৯০০০ ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। কেন্দ্র থেকে পরিবেষ্টিত শিলার মাধ্যমে তাপ উদগিরিত হয় যার ফলে শিলা গলে গিয়ে ম্যাগমা তৈরী করে যা পরিশেষে উর্ধত্বকে উঠে আসে। উক্ত তাপশক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিতে রুপান্তরের মাধ্যমে বিশ্বের বিদ্যুৎ চাহিদার পরিবেশবান্ধব সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

চলবে……

গ্রিন টেকনোলোজি বিষয়ক এই ফিচারটি এই সময়ের জনপ্রিয় মাসিক বিজ্ঞান পত্রিকা “জিরো টু ইনফিনিটি”র অক্টোবর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics