জলের মাছ জাদুঘরে
ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে মৎস্য জাদুঘর। এর পোশাকি নাম ‘ফিশ মিউজিয়াম অ্যান্ড বায়োডাইভার্সিটি সেন্টার’। অধ্যাপক মোস্তফা আলী রেজা হোসেনের উদ্যোগে ২০০৯ সালে জাদুঘরটি স্থাপিত হয়।
মৎস্য জাদুঘরে মিঠা পানির ২৮০ প্রজাতির মাছসহ হাজার বছরের বিলুপ্ত প্রজাতির জীবাশ্ম রয়েছে, যা চারটি সুপরিসর গ্যালারিতে সাজানো হয়েছে। গ্যালারিতে প্রবেশের আগেই চোখে পড়ে আবহমানকাল ধরে এ দেশের জেলেদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র। ফরমালিনের দ্রবণে বড় বড় কাচের পাত্রে মাছগুলো সংরক্ষিত। সঙ্গে আছে প্রতিটি মাছের বৈজ্ঞানিক নামসহ নানা তথ্য।
পূর্ব পাশের গ্যালারিতে রয়েছে সিপ্রিনিফরমিস বর্গের ৮৭ প্রজাতির মাছ। এর মধ্যে ৮১ প্রজাতি মিঠা পানির। এতে রয়েছে কার্প, পুঁটি, রুই, কাতলা, মৃগেল, মলা, চেলা, কালবাউশ, মহাশোল প্রভৃতি। এর পাশের গ্যালারিতে সিলুরিফরমিস বর্গ, যা ‘ক্যাটফিশ’ নামে পরিচিত। এসব মাছের বিড়ালের গোঁফের মতো ‘বার্বেল’ থাকায় এদের বলা হয় ক্যাটফিশ। এদের মধ্যে রয়েছে বোয়াল, মাগুর, শিং, টেংরা, পাবদা, বাতাসি, বাগাড় প্রভৃতি প্রজাতি। গ্যালারিতে এই বর্গের ১৩ পরিবারের ৬১ প্রজাতির মধ্যে ৫৩টি প্রজাতি স্থান পেয়েছে। অপর একটি গ্যালারিতে পার্সিফরমিস বর্গে ২২ পরিবারের ৫৪টি প্রজাতি স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে কই, চান্দা, বেলে, খলশে, ভেটকি, টাকি, শোল ইত্যাদি।
এই প্রধান তিনটি বর্গ ছাড়াও বাংলাদেশে মিঠা পানির আরও ১০টি বর্গ রয়েছে। ‘স্বাদু পানির শুশুক ও অন্যান্য মাছ নামের গ্যালারিতে’ রয়েছে এই বর্গের ৫০টি প্রজাতি। এতে আছে ইলিশ, চিতল, ফলি, কানপোনা, চাপিলা, কাকিলা, কাচকি, ফ্যাসা, পটকা, বাইন ইত্যাদি। এ ছাড়া এই গ্যালারিতে আরও আছে ২৮ বছর বয়সের ১৯৯ সেন্টিমিটারের লম্বা শুশুকের কঙ্কাল ও সামুদ্রিক কাঁকড়া।
চতুর্থ গ্যালারিতে রয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগের বিলুপ্ত মাছ ও অন্যান্য প্রাণীর জীবাশ্মের প্রতিলিপি। রয়েছে কোটি কোটি বছর আগে বিলুপ্ত ও অধুনা প্রাণীর কঙ্কাল। স্টারলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহায্যে যুক্তরাজ্য থেকে এই চমৎকার জীবাশ্মগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। এই গ্যালারিতে ৪০টি জীবাশ্ম ও কঙ্কাল রয়েছে। জাদুঘরটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো (০২/০৬/২০১৩)
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-06-02/news/357051