
ধান বাঁচাবে বাঁদুড় !!!
বাঁদুড় আর কতদিন উলটো হয়ে ঝুলে থাকবে? আলসেমী আর একগুঁয়েমী স্বভাব কাটিয়ে এবার সময় এসেছে আরো একটু পরিশ্রমী হবার। আর তাই একদল বিজ্ঞানী বাঁদুড়দের স্বাধীন জীবনে হস্তক্ষেপ করলেন বেশ জোরালোভাবেই। তাঁরা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন বলি ঠোঁটযুক্ত এক ধরণের বাঁদুড় প্রজাতিকে (Tadarida plicata) কাজে লাগানো যেতে পারে ধানের ফলন বাড়াতে। কিন্তু কেমন করে? ধানের বালাই বা বিনষ্টকারী পোকা-মাকড় শীকার করতে বেশ ভালভাবেই ভূমিকা রাখতে পারে ঐ বাঁদুড় সম্প্রদায়। আর এতে করে সংরক্ষিত হবে থাইল্যান্ডের প্রায় মিলিয়ন (১০ লক্ষ) ডলার মূল্যের ধানের ফসল।
ধান গাছের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলা একদল দুষ্ট প্রজাতির পোকা-মাকড়ের মধ্যে এক নম্বর হচ্ছে সাদা রঙের ফড়িং। তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে নাছোড়বান্দার মত ধান গাছের ক্ষয়-ক্ষতি করা। এবার শাসন করার জন্যও ঢাল-তলোয়ার নিয়ে প্রস্তুত আমাদের বাঁদুড়রা। বিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখিয়েছেন, একটি বলি ঠোঁটযুক্ত বাঁদুড়,এক দিনে প্রায় ১,১৩০ টি এমন ফড়িং কে খেয়ে ফেলতে পারবে ! এই হিসাবের ধারায়, বাঁদুড়রা সবাই মিলে বছরে প্রায় ২,৯০০ টন ধান গাছ কে রক্ষা করতে সক্ষম হবে,যার রপ্তানী মূল্য প্রায় ২ মিলিয়ন (২০ লক্ষ) আর এভাবে প্রতি বছরে রক্ষা পাওয়া এসব ধান গাছ থেকে আহার জুটবে প্রায় ২৬,০০০ মানুষের ।
জার্মানীর গটিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রান্তীয় বাস্তুবিদ্যা বিশেষজ্ঞ জনাব থমাস চেরিকো ওয়াঙ্গার,এই গবেষনা পত্রটি লেখার ব্যাপারে প্রধান দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, থাই ধানচাষীরা তাদের জমিতে ছোটো ছোটো পাখির বাসার মত বাক্সের ব্যবস্থা করতে পারেন,এবং সেখানে সসম্মানে থাকতে দিতে পারেন সেইসব মহাজ্ঞানী বাঁদুড়দের। এতে করে তাদের দুশ্চিন্তা যেমন অনেক খানি কমবে,তেমনি অভিনব কায়দায় হাসি ফোঁটাতে পারবেন আরও লক্ষ লক্ষ মানুষের মুখে। তিনি এভাবেই আত্মপ্রত্যয়ের সাথে প্রকাশ করেছেন,তাঁদের গবেষণা পত্রটি এমনই পরিষ্কার ও নিঁখুতভাবে তৈরী করা হয়েছে,যাতে করে সবার দ্বিমত কিংবা ধারালো প্রশ্নের আবির্ভাবের সম্ভাবনা মাত্রও থাকবেনা। এখন কেবল বাস্তবায়নের অপেক্ষা…..