পেঙ্গুইনের চলাফেরার রহস্য উন্মোচিত !!!

সিরাজাম মুনির শ্রাবণ

পেঙ্গুইনের বসবাস মূলত বরফের দেশে,এন্টার্কটিকায়। সেখানে পরিবেশের তাপমাত্রা সবসময়ই হিমাঙ্কের নিচে থাকে। বছরের একটা সময় সে তাপমাত্রা আরও কমে যায়। একসময় দেখা যায় তাপমাত্রা কমতে কমতে মাইনাস ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস(৫৮ ডিগ্রী ফারেনহাইট) হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মত করে আসে ঠাণ্ডা বাতাস। দুয়ে মিলে পেঙ্গুইনের জন্য ভালই অসুবিধার সৃষ্টি করে। এমন অবস্থায় যেন বাঁচাই দায়! নবজাতক কিংবা ডিমের জন্য আরও অসুবিধার সৃষ্টি করে। সবচে বেশি অসুবিধার কারণটা হয় ডিমের তা দেয়া নিয়ে। বাচ্চা ফোটাতে ডিমে তা দিতে হলে কিছু তাপের দরকার। কিছুটা তাপ ছাড়া তো আর তা দেয়া হয় না।  surprising-physics-of-penguin-movements-670x440

 পেঙ্গুইনেরা এমন অবস্থায় ভিন্ন এক পদ্ধতি অবলম্বন করে। তারা বড় একটা দল গঠন করে দলবদ্ধ হয়ে থাকে। দলবদ্ধ হয়ে থাকার ফলে ভীষণ বেগের যে বায়ু সেটা সবার আগলে রাখার ফলে এতটা প্রভাব রাখতে পারে না। সাথে সাথে পরস্পর ঘষাঘষি, নড়াচড়া করে থাকে যার ফলে তাৎক্ষনিক কিছু তাপ পাওয়া যায়। এরও পাশাপাশি মুখ দিয়ে মৃদু কিছু শব্দ উৎপাদন করে থাকে যার ফলে নিজের শরীরে তাপের উৎপাদনে কিছু প্রভাব রাখে। একটা বিষয় খেয়াল করি  প্রবল শীতে আমারা খালি গাঁয়ে থাকলে আমাদের শরীর কেপে কেপে ওঠে। তার কারণ কাঁপার ফলে পেশিতে পেশিতে ঘর্ষণ তৈরি হয় যেটা রক্তের তাপমাত্রা কমতে দেয় না। রক্তের তাপমাত্রা তার সীমা থেকে গেলে মানুষ বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে না। শরীরের কাজ শরীর নিজেই করে নেয়। এখানে পেঙ্গুইনের বেলায়ও সেই একই কথা প্রযোজ্য।

 ডিমের তা দেবার জন্য ন্যূনতম যেটুকু তাপমাত্রা দরকার তা করে থাকে এভাবে। এজন্যই পেঙ্গুইনরা এমন সময় খুব ধীরে ধীরে চলাফেরা করে। সামান্য যা করে তা অবশ্যই দলবদ্ধভাবে, একসাথে। একসাথে কেন দলবদ্ধ ভাবে চলাফেরা করে এই ব্যাপারটা এতদিন ধরে জীববিজ্ঞানী আর পদার্থবিজ্ঞানীরা ধরতে পারছিলেন না। জার্মানীর নুরেমবার্গ ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক এ নিয়ে স্টাডি করে এবার এর সমাধানে উপনীত হয়েছেন। তারা অবাক হয়ে দেখেছে কি নিপুণ ভাবে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র কাজে লাগিয়ে চলে। হুট হাট চলাফেরা করা মানেই বাতাসের নড়াচড়া, আর নড়াচড়া মানেই তাপ পরিবহনের একটা সুযোগ। এই সুযোগে সহজেই শীতলতা এসে কাবু করে দিতে পারে তাদের। সে সুযোগ পেইঙ্গুইনেরা দিতে চায় না তাই দল ভেঙ্গে যায় না, এলোমেলো ছুটে যায় না।

 প্রকৃতির মাঝে কত জায়গাতেই না ছড়িয়ে আছে বিজ্ঞান। দেখতে শুধু একটু চোখ লাগে। আর দেখতে পারলেই বোঝা যায় বিজ্ঞানের মাহাত্ম, বিজ্ঞান কেন রোমাঞ্চকর।

 তথ্যসুত্র: লাইভ সায়েন্স ডট কম

http://www.livescience.co

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics