বরফ গলনের জন্য দায়ী ভূগর্ভের আভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা

মাহবুব রেজওয়ান

সময়ের সাথে সাথে বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে আজ আমরা একটি আধুনিক এবং সভ্য পৃথিবীতে বাস করছি। সভ্যতার উৎকর্ষতার পাশাপাশি নতুন করে বেশ কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে আমাদের। যার মধ্যে গ্রীন হাউস গ্যাস অন্যতম। গ্রীন হাউস গ্যাসের কারণে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি পরিবেশের উপর পরছে বিরূপ প্রভাব। বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের পৃথিবীর দুই প্রান্তের বরফ ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে। সেই সাথে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও একটু একটু করে বেড়ে চলেছে। তবে সাম্প্রতিক তথ্যে জানা গেছে, উত্তর মেরুর গ্রিনল্যান্ডে বরফ গলে যাওয়ার পিছনে দায়ী মূলত পৃথিবীর ভূগর্ভের আভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা।

উত্তর মেরুতে অবস্থিত হওয়ায় গ্রিনল্যান্ডে প্রচুর পরিমাণ বরফ জমা রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ বরফ যদি ধীরে ধীরে গলতে থাকে, তাহলে তা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৭ মিটার পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে মেরুভাল্লুকের মতো প্রাণী। তাছাড়া, পৃথিবীর নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই। বিজ্ঞানীরা এটা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখলেন, বরফ শুধু উপর থেকে গলছে, তা নয়। নিচ থেকেও গলছে। অর্থাৎ, গ্রীন হাউস গ্যাসের পাশাপাশি ভূগর্ভের তাপমাত্রাও এর জন্য সমানভাবে দায়ী। borof

ভূপৃষ্ঠের চেয়ে পৃথিবীর কেন্দ্রের তাপমাত্রা অনেক বেশি। পৃথিবীর কেন্দ্রের তাপমাত্রা প্রায় ৫০০০-৬০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। তবে পৃথিবীর অভ্যন্তরের ভূত্বক এবং কঠিন স্তরসমূহ এই তাপমাত্রাকে পৃথিবীপৃষ্ঠে আসতে বাঁধা দেয়। এই স্তরগুলোর মধ্যে বেশ কিছু স্তর থাকে বেশ দুর্বল। যার কারণে আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাতের মতো ঘটনাগুলো ঘটে থাকে। জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্স (GFZ) দ্বারা পরিচালিত IceGeoHeat নামের একটি আন্তর্জাতিক রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ পৃথিবীর ভূগর্ভের একটি মডেল তৈরি করেন। মডেলটি থেকে তারা লক্ষ্য করেন যে, গ্রিনল্যান্ডের কিছু কিছু স্থানে বরফ গলনের পরিমাণ অনেক বেশি, আবার কিছু কিছু স্থানে অনেক কম। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেন, যে সকল স্থানে ভূত্বক অনেক পাতলা, সেখানকার বরফ গলনের পরিমাণ অনেক বেশি এবং খুব দ্রুত সেই এলাকার বরফ গলে যাচ্ছে। গ্রীন হাউস গ্যাস নিয়ে এমনিতেই বিজ্ঞানীরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। সেই সাথে ভূগর্ভের তাপমাত্রার ব্যাপারটি যে বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিচ্ছে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।

এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics