বিষমুক্ত ও নিরাপদ খাদ্যের দাবিতে পবা'র মাসব্যাপী কর্মসূচী
সারাদেশে ভেজাল, অনিরাপদ, ক্ষতিকর এবং বিষযুক্ত খাদ্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারনে জনজীবন বিপর্যস্ত, সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। এ অবস্থার নিরসনে নীতিনির্ধারকদের যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন এবং গণসচেতনতার বিকল্প নেই। বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করার দাবীতে ও সামাজিক চাপ সৃষ্টির জন্য নাগরিক আন্দোলন গড়ার লক্ষ্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট (ডিএইচইএন) যৌথভাবে মাসব্যাপী কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। আজ ০৯ মার্চ ২০১৪, রবিবার, সকাল ১১টায় পবা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষমুক্ত খাদ্য আন্দোলনের মাসব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
পবার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব এবং হেলথ এন্ড হোপের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী, আয়ুর্বেদ এন্ড ন্যাচারোপ্যাথি এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ডা: সমীর কুমার সাহা, পবার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসলাম খান, পবার নির্বাহী সদস্য প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ, বাংলাদেশ হেলথ এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ জিয়ারুল ইসলাম, মডার্ন ক্লাবের সভাপতি আবুল হাসনাত, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট হায়দার জাহান যশো, কাজী রেহা কবির সিগমা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়- খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে খাদ্যে বিষ ও ভেজাল মেশানোর প্রক্রিয়া চলতে থাকে। ফলে যে খাদ্য জীবন বাঁচানো ও সুস্থ থাকার জন্য গ্রহণ করা হয় সেই খাদ্যই জীবননাশ এবং অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনিরাপদ খাদ্যের কারণে বর্তমানে দেশে এক ধরণের “নীরব গণহত্যা” ও অসুস্থতার “নীরব মহামারী” চলছে। বিদ্যমান ভয়াবহ খাদ্য পরিস্থিতির অবসানে সরকারসহ নীতিনির্ধারক মহলকে অধিকতর সক্রিয় এবং উদ্যোগী হতে হবে। একই সাথে জনসাধারণকে সচেতন এবং দাবীমুখর করার কার্যক্রমও গ্রহণ করতে হবে। এই লক্ষ্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট (ডিএইচইএন) যৌথভাবে ১০১ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি “নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জাতীয় কমিটি” গঠন করে কার্যক্রম শুরু করেছে। এই কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রফেসর মাহফুজা খানম এবং সদস্য সচিব হিসেবে ডা: লেলিন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন।
নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জাতীয় কমিটি এক মাসব্যাপী একটি নিবিড় কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এই কার্যক্রম নিম্নরূপ :
১. আগামি ১৪ মার্চ ২০১৪ থেকে ১৩ এপ্রিল ২০১৪ এই এক মাস নিরাপদ ও ভেজালমুক্ত খাদ্যের দাবীতে নিবিড় কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হবে।
২. এক মাসে ঢাকার জনসাধারণের মধ্যে একলক্ষ লিফলেট বিতরণ করা হবে। এক্ষেত্রে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাধান্য দেয়া হবে।
৩. একমাসে ঢাকার জনবহুল স্থানে ১০টি পথসভার আয়োজন করা হবে।
৪. আগামি ১৪ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে দেশের বিদ্যমান খাদ্য পরিস্থিতির উপর একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
৫. আগামি ১২ এপ্রিল দেশের খাদ্য আইন এবং এ সম্পর্কিত অন্যান্য আইনের উপর একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত করা হবে।
৬. ১৪ মার্চ ও ১২ এপ্রিলের আলোচনা সভায় গৃহীত সুপারিশমালা যথাযথ নীতিনির্ধারক ও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এই সুপারিশমালা মুদ্রিত করে জনসাধারণের নিকট বিতরণ করা হবে।
৭. খাদ্য মেলা- সুবিধাজনক সময়ে একটি নিরাপদ খাদ্য মেলার আয়োজন করা হবে।
এক মাসের নিবিড় কার্যক্রমের পরে সামগ্রিক অবস্থার বিবেচনা করে জাতীয় কমিটি পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবে।