বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল দখল, ভরাট ও দূষণমুক্ত করার দাবি
বেপরোয়া দখল-ভরাট এবং ক্রমবর্ধমান দূষণ ও অব্যাহত আগ্রাসনের ফলে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল এখন মৃত প্রায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও মহামান্য হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও ঢাকার প্রাণস্বরূপ বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুণরুদ্ধারে বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্ন কিছু উচ্ছেদ অভিযান ছাড়া কিছু হয়নি। যা আদি চ্যানেল উদ্ধারে কোন কাজে আসেনি। মহানগরী ঢাকার জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বুড়িগঙ্গার এই আদি চ্যানেলের সরকারি বেসরকারি সকল দখল অবিলম্বে উচ্ছেদ করে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পুণরুদ্ধার করা হোক; ২৮ মার্চ ২০১৫, শনিবার, সকাল ১১ টায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সহ ১৪টি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এক মানববন্ধনে বক্তারা উক্ত দাবী জানান।
নাসফের সভাপতি ও পবার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান ময়নার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, পবার সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মনজুর হাসান দিলু, শামীম খান টিটো, পবার সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদ, গ্রীণমাইন্ড সোসাইটির সভাপতি আমির হাসান, পল্লীমা গ্রীণের সদস্য সচিব আনিসুল হোসেন তারিক, বিসিএইচআরডির নির্বাহী পরিচালক মো: মাহবুল হক, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদের সভাপতি মো: মুসা, পীসের মহাসচিব ইফমা হোসাইন, আইইডির সহকারী সমন্বয়কারী তারিক হাসান মিঠুল, কাজী এনায়েত হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নদী খাল জলাধার দখল ভরাট বন্ধে বিভিন্ন সময়ে নির্দেশনা দিয়ে আসছেন এবং সম্প্রতি কুড়িল ফ্লাইওভারের ওখানে দুটি লেক করে নদীর সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের বিষয়ে জোরালে বক্তব্য দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও দখল ভরাট ও দূষণে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল সংলগ্ন ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের মো:পুর, রায়েরবাজার, হাজারীবাগ, কালুনগর, ভাগলপুর, নবাবগঞ্জ, শহীদনগর, কামালডাঙ্গা, ইসলামবাগসহ এ এলাকার খালগুলোও এখন মরতে বসেছে। ফলে বর্ষার সময় এই এলাকা সামান্য বৃষ্টিতেই ভয়াবহ জলাবদ্ধতার মুখে পড়ে। অধিক বৃষ্টিতে অনেক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। জনগণের দুর্ভোগ তখন আরও প্রকট আকার ধারণ করে। মহানগরীর পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে স্থানীয় জনসাধারণ, মহানগরবাসী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞসহ সুশীল সমাজ দখলের এই জঘন্য প্রতিযোগিতা বন্ধে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপের দাবী জানিয়ে আসছেন।
মানববন্ধন থেকে নিন্মোক্ত দাবীসমূহ জানানো হয়ঃ
বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল দখল ভরাট করে নির্মাণকৃত কারখানা ও বাড়িঘরের পানি বিদ্যুৎ গ্যাসসহ সকল নাগরিক সুযোগ এখনই বন্ধ করে দেয়া এবং অবিলম্বে সকল দখল ও ভরাট এবং দূষণমুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
সিএস রের্কড অনুযায়ী বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের সিমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী পিলার স্থাপন করা।
বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে প্রদত্ত ভ’মি বরাদ্দসমূহ সরকার কর্তৃক অনতিবিলম্বে বাতিল করা।
ব্যক্তি ও সংস্থার নামে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের রেকর্ডসমূহ আইন বহির্ভূত ঘোষণা করে সেগুলো বাতিল করা।
খনন করে আদি চ্যানেলের গতি প্রবাহ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।
নদী দূষণমুক্ত করার লক্ষে পয়ঃবর্জ্য পরিশোনাগার স্থাপন; গৃহস্থালী বর্জ্য পানি প্রবাহে ফেলা থেকে বিরত থাকা; ট্যানারীগুলো জরুরীভিত্তিতে স্থানান্তর এবং বর্জ্য পরিশোধনাগার স্থাপন ও বর্জ্য পরিশোধন করা; শিল্পকারখানায় বর্জ্য পরিশোনাগার স্থাপন এবং নিয়মিত তা পরিচালনা করা, নৌযানের বর্জ্য ও তেল নদীতে ফেলা থেকে বিরত থাকা।