মরণযুদ্ধঃ সাপে আর কুমিরে!!
মাহবুব রেজওয়ান সানি
প্রানীজগতে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চিরন্তন। সেই সংগ্রামে কখনো কখনো আপনাকে স্বজাতির সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হবে। আবার কখনো কখনো আপনার থেকেও শক্তিশালী কোন প্রজাতির সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হবে। আর সেই লড়াই যদি হয় সেয়ানে সেয়ানে, তাহলে তো কথাই নেই। দু’পক্ষই চাইবে মরণ কামড় দিয়ে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে। তেমনই এক মরণপণ লড়াই চলছিল অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কুইন্সল্যান্ডে। যেখানে একপক্ষে ছিল ১০ ফুট লম্বা এক বিশাল অজগর। আর অন্যপক্ষে ছিল জলের মূর্তিমান আতঙ্ক এক কুমির।
আভিজাত্য আর শক্তিতে কেউ কারো থেকে কম যায় না। এই কারণেই লড়াইটি হয়েছে দীর্ঘক্ষণ ও মরণপণ। অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কুইন্সল্যান্ডে এই তীব্র লড়াইয়ের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করেন স্থানীয় অধিবাসী টিফ্যানি কোরলিস। তিনি বলেন, এই লড়াইটির শুরু জলে হলেও স্থলে এসে তা শেষ হয়।
কুমিরটি বারবার চেষ্টা করছিল নিজের তীক্ষ্ণ দাঁত দিয়ে অজগরটিকে গেঁথে ফেলতে। কিন্তু অজগরটি কোনভাবেই কুমিরকে এই সুযোগ দেয় নি। বরং, লড়াইয়ের এক পর্যায়ে অজগরটি তার শক্তিশালী শরীর দিয়ে কুমিরটিকে পেঁচিয়ে ফেলে। এরপর শক্তির প্রদর্শনী চলতে থাকে। একসময় অজগরটি কুমিরকে টানতে টানতে ডাঙ্গায় উঠিয়ে আনে।
কুমিরটি অনেক চেষ্টা করেছিল অজগরের শারীরিক প্যাঁচের জাল থেকে ছাড়া পেতে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আরও শক্তি প্রয়োগ করে কুমিরটিকে নিস্তেজ করে ফেলে শক্তিশালী অজগরটি। শেষ পর্যন্ত কুমিরটি হার মানতে বাধ্য হয়। অজগরের শক্তিশালী প্যাঁচে আটকা পরে মৃত্যুর কলে ঢলে পড়ে কুমিরটি। আর তারপর ধীরে ধীরে নিজের পেটে কুমিরের মাঝারি দেহটি চালান করে দেয় যুদ্ধজয়ী অজগর।
টিফ্যানি কোরলিস বলেন, কুমিরটি মারা গেলে অজগরটি তার শরীরের প্যাঁচ খুলে ফেলে। এরপর ধীরে ধীরে কুমিরটিকে খেতে শুরু করে। কুমিরটি খাওয়া সম্পন্ন করতে প্রায় ১৫ মিনিট সময় লাগে অজগরটির। খাওয়া শেষ করার পর অজগরটি ফুলে ঢোল হয়ে ওঠে। তিনি আরও বলেন, তাদের এ লড়াই থামানোর জন্য আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু, হাতের কাছে কোনো লাঠি না থাকায় এবং অজগরটির রক্তচক্ষু আমাদেরও ভয় পাইয়ে দিয়েছিল বলে আর কুমিরটিকে বাঁচানো যায়নি!
সূত্রঃ বিবিসি