
মার্স ভাইরাসের বাহক উট !!!
তাওহীদ হোসাইন
অবশেষে উট’কেই মার্স ( মিডল ইস্টার্ন রেস্পিরেটোরি সিনড্রোম) এর প্রধান বাহক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা। গত মঙ্গলবার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কিং ফাহাদ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইকোহেলথ এলায়েন্স এর সমন্বয়ে গঠিত গবেষক দল তাঁদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ এবং উটের নাসিকা নিঃসৃত তরলের মধ্যে একই প্রকৃতির ভাইরাস স্ট্রেইন সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে এ ব্যাপারে অনুসন্ধান শুরু করেন বিশেষজ্ঞ দল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১২ সালে প্রথম মার্স সনাক্ত করে। সে সময় ২৫০ জন ব্যক্তি মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হোন যাদের মধ্যে ৯৩ জন মারা যান বলে রিপোর্ট দেয় সংস্থাটি। তবে গত বেশ কয়েক সপ্তাহ জুড়ে শুধুমাত্র সৌদি আরবেই ৩০০ জন মার্সে আক্রান্ত হোন, যাদের মধ্যে ১০০ জন মারা গেছেন।
কিং ফাহাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের প্রধান আব্দুল আজিজ আলাগাইলি জানান, তারা উটের নাসিকা নিঃসৃত তরল এ ভাইরাস এর সন্ধান পেয়েছেন তবে, মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস মূলত উটের দুধ এবং মাংস থেকে ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন। এছাড়া, একজন আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে অন্য একজন ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারেন এবং এভাবেই এটি বেশি পরিমাণে ছড়িয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী বসন্ত কালে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। এ পর্যন্ত মার্স ভাইরাস জর্ডান, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ফ্রান্স, জার্মানী, গ্রীস, ইতালি, ব্রিটেন, তিউনিশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনে হাজার হাজার মানুষকে আক্রান্ত করেছে।
সংস্থাটি বলছে, ২০১৪ এর মার্চে মার্স ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তবে উট মার্স ভাইরাসের অনেকগুলো স্ট্রেইন বহন করলেও মানুষের মধ্যে এর খুব কম সংখ্যক সনাক্ত করা গেছে।
২০১২ সালে প্রথম সনাক্ত হবার পর মার্স ভাইরাস কে সার্স ভাইরাসের ভয়াবহতার সাথে তুলনা করা হচ্ছে। সার্স ভাইরাসে এ পর্যন্ত ৮০০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন যাদের মধ্যে ৮০০ জন মৃত্যুবরণ করেন। করোনা গোত্রের অন্তগত এই ভাইরাস গুলো সাধারণত সর্দি কাশি জাতীয় রোগ থেকে শুরু করে ফুসফুসীয় জীবনঘাতী রোগ ছড়িয়ে দিতে সক্ষম। এরা যেকোনো জায়গায় টিকে থাকতে পারে এবং সেসব জায়গায় মানুষের ছোঁয়া থেকেই মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পরতে পারে। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে এ পর্যন্ত দুইজন বাংলাদেশী নারী মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ।