রোগ প্রতিরোধে ‘স্বাস্থ্যকর’-এর কার্যকর প্রয়োগের লক্ষ্যে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠনের দাবি
তামাক উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, ব্যবহারÑসব পর্যায়েই জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে। তামাক শুধু লক্ষাধিক মানুষকে মৃত্যুর দিকেই ধাবিত করে না, আরও প্রায় ২০ লক্ষ মানুষকে মৃত্যুঘাতী রোগে (ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, হাঁপানি, ডায়বেটিস ইত্যাদি) আক্রান্ত করে। এজন্য সরকার গত অর্থবছরের বাজেটে সব রকম তামাকজাত দ্রব্যের উপর ‘১% স্বাস্থ্যকর’ আরোপ করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ১% স্বাস্থ্যকর হিসাবে যে অর্থ আসবে, সে অর্থের পরিমাণ ২০০ কোটি টাকার অধিক। এ অর্থের কার্যকর ব্যয় ব্যবস্থাপনা ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ‘হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন’ গঠন জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাক্তন পরামর্শক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বাজেট খুবই কম। জনপ্রতি মাসে ২০টাকা মাত্র। কিন্তু চলমান ব্যবস্থায় তারও সুফল দরিদ্র মানুষ পায় না। অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্য সেবার সুফল থেকে বঞ্চিত। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিভিন্ন রোগের ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ৪৫ লক্ষ মানুষ স্বল্পমেয়াদী, দীর্ঘমেয়াদী ও চিরস্থায়ী দরিদ্রতার শিকার হয়। এছাড়া সরকারেরও বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়। তাই জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সরকার কর্তৃক আরোপিত স্বাস্থ্যকর জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে কার্যকর ব্যয় জরুরি। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় আজ বিকাল সাড়ে ৪টায় পবা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞগণ উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও পবা’র নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, সরকার ক্ষতিকর পণ্যের উপর (তামাক) আলাদাভাবে স্বাস্থ্যকর আরোপ করেছে, এটা ইতিবাচক। এখন স্বাস্থ্যকর হিসাবে সংগৃহিত অর্থ যেন সঠিকভাবে ব্যয় হয়, সেজন্য একটা ফাউন্ডেশন গঠন দরকার। সরকারেরই অন্যান্য ফাউন্ডেশন, যেমন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আদলে এ ফাউন্ডেশন গঠন হতে পারে। এরকম একটি ফাউন্ডেশন হলে সরকার স্বাস্থ্যকর হিসাবে আরোপিত অর্থ কার্যকরভাবে রোগ প্রতিরোধে ব্যয় করতে পারবে।
পবা স্বাস্থ্য বিভাগের সংগঠক ডা. খালেদ শওকত আলী বলেন, রোগের চিকিৎসার চাইতে রোগ প্রতিরোধকে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। সেক্ষেত্রে প্রস্তাবিত হেলথ ফাউন্ডেশন রোগ প্রতিরোধে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর মুখপত্র সমস্বর এর নির্বাহী সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে পৃথিবীর অনেক দেশেই সরকারি উদ্যোগে ‘ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসব ফাউন্ডেশনে স্বাস্থ্যকর হিসাবে সংগৃহিত অর্থ আসে এবং ফাউন্ডেশন এসব অর্থ জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি ও গবেষণা পরিচালনা করার মাধ্যমে রাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করছে।
লিখিত বক্তব্যে এডভোকেট সৈয়দ মাহবুুবুল আলম ‘হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন’ গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ লক্ষ্য বাস্তবায়নে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দেয়া; ক্যান্সার-হৃদরোদ-ডায়বেটিস-স্ট্
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন আরও বক্তব্য রাখেন আয়ুনস এর সভাপতি ডা. সমীর কুমার সাহা, পবা নির্বাহী কমিটির সদস্য মনজুর হাসান, সেভ দ্য কোস্টাল পিপল (স্কোপ) এর নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন, আমিনুল ইসলাম সুজন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান ও জেষ্ঠ্য প্রকল্প কর্মকর্তা নাজনীন কবির প্রমুখ। লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান দি ইউনিয়ন এর পরামর্শক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।