লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বিচরণ করছে ৩৭ প্রজাতির সাপ…!!
বন্যপ্রাণী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ক্যারিনাম’ ও ‘ওরিয়ন সোসাইটি’ যৌথভাবে প্রায় দেড় বছর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে সাপ নিয়ে গবেষণা শেষে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উপস্থাপন করে।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ঢাকার ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শাহরিয়ার সিজার রহমান।
সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এ তিনটি সাপের প্রজাতি এরআগে দেশের কোথাও দেখা যায়নি। আর লাউয়াছড়ার ৩৭ প্রজাতির সাপের মধ্যে বিষধর সাপের সংখ্যা খুবই কম। এ বণাঞ্চলের গাছগাছালি ও মাটির নিচে বাস করে এসব সাপ।
বিচরণ করছে ৩৭ প্রজাতির সাপগবেষণাকারী শাহরিয়ার সিজার রহমান জানান, তিনি ২০১১ সালের ১২ মে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে সাপ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ড. এস এম এ রশিদের সার্বিক সহায়তায় এবং আমেরিকার বণ্যপ্রাণী বিষয়ক এনজিও ওরিয়েন সোসাইটি‘র পৃষ্টপোষকতায় বিগত দেড় বছরের গবেষণায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৩৭ প্রজাতির সাপের বিচরণ লক্ষ্য করেছেন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অজগর, কালনাগিনী, সুতানলি, ব্যাম্বু ট্রিংকেট, চেরাপুঞ্জি, সবুজ ফনীমনষা, পাইন্না, শঙ্খিনী, গোখরা, শঙ্খচোর, দুমুখো সাপ বা কেঁচো সাপ (দুই প্রজাতির), চিনু, রঙিলা কেঁচো, দুধরাজ, গেছো, তিন প্রজাতির ঘরগিন্নি, দুই প্রজাতির বনকোরাজ, ডোরাযুক্ত বনকোরাজ, শ্যামুকখেকো, দুই প্রজাতির দাঁড়াশ, পাহাড়ি হিমালয়ের ঢোঁড়া, লালমাথা ঢোঁড়া, কালোমাথা ঢোঁড়া, কাল কেউটে, সবুজবোড়া ও প্রবাল সাপ। এই উদ্যানের গভীর অরণ্যে বিষধর ও বিষমুক্ত কয়েক হাজার সাপ রয়েছে।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ধারণা, দেশে যেসব প্রজাতির সাপ রয়েছে এর মধ্যে সবচেয়ে বিষধর সাপ হলো কালনাগিনী সাপ। কিন্তু কালনাগিনী হলো এক প্রকার বিষমুক্ত সাপ।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কালনাগিনী সাপ নিয়ে ভুল তথ্য প্রচারিত হওয়ায় মানুষের মনে এ ধরণের ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ‘ক্যারিনাম’র প্রধান নির্বাহী ড. এস এম এ রশীদ জানান, বাংলাদেশে শুধু সাপ নিয়ে এরকম দীর্ঘ মেয়াদী গবেষনা অতীতে আর কেউ করেননি।
তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশের বিভিন্নস্থানে সাপ নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। দেশের কোথায় কোন প্রজাতির সাপ আছে তার ওপর জরিপ কাজ অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত গবেষণালব্ধ তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বিষধর ও বিষহীন প্রায় শতাধিক প্রজাতির সাপের সন্ধান পাওয়া গেছে।”
http://www.poriborton.com/article_details.php?article_id=24564