সাপে-নেউলে/বেজী
শত্রুতার উদাহারন দিতেগিয়ে আমরা সাপ-নেউলের কথা বলে থাকি । নেউল বা বেজী Common Mongoose আমাদের অতি পরিচিত বন্যপ্রাণী যা বাংলাদেশের সব গ্রামেই কম বেশী আছে । শীতকালে ক্ষেতের আইলের উপর মাঝেমধ্যে টান হয়ে শুয়ে সকালের রোদ পোহাতে দেখা যায় । এরা আমাদের কৃষি ও পরিবেশের জন্য খুব উপকারী । প্রতিদিন ইঁদুর ও পোকামাকড় খেয়ে বেজী আমাদের পরিবেশের ও সেই সাথে ফসলের উপকার করছে । তাছাড়া কথায় আছে যেখানে বেজী থাকে সেখানে সাপ আসে না ।
রুপালি ধূসর লোমশ শরীর নেউল বা বেজীর । বুক ও পেটের নিচের দিকের রঙ ফ্যাঁকাসে । মাথাসহ দেহের মাপ ৩৮ থেকে ৪৬ সেমি হয় । লেজ লম্বা ৩৫ সেমি । এরা ২ থেকে ৩ টি বাচ্চা প্রসব করে ।
বেজী স্বভাবে টেরাটোরিয়াল । নিজ এলাকায় অন্যকে প্রবেশ করতে দেয়না । এরা দিনে ও বিকেলের দিকে শিকার করে । বেজী দ্রুত চলাফেরা করতে পারে , গাছেও উঠতে পারে । ইঁদুর জাতীয় ছোট প্রাণী , সাপ , ব্যাঙ , পাখি , হাঁস-মুরগী , ডিম , টিকটিকি , পোকামাকড় বেজীর খাবার । এরা ঝোপঝাড়ের আড়ালে মাটির গর্তে বাস করে এবং গর্তেই বাচ্চা প্রসব করে ।
বেজি যেকোনো গ্রামীণ বনে থাকতে পারে , পাহাড়ি বন , সমতল বন ঝোপঝাড় আছে এমন স্থানে বেজী থাকতে পারে । বাংলাদেশের সব জেলাতেই বেজী আছে । তবে দিন দিন এরা বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে । ফসলের চাষ , ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার ফলে বেজী হারাচ্ছে তার আশ্রয় । তা ছাড়া বন্যপ্রাণী দেখামাত্র মারার প্রবণতার ফলে গ্রামীণ বনের অতি উপকারী এই প্রাণীটিও ঝুঁকির মুখে।
লেখা ও ছবি – ঋজু আজম