
সাম্প্রতিক গবেষণাঃ বন্য পাখির তুলনায় অধিক তাপমাত্রা সহনশীল শহুরে পাখি
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে ব্রিটেনে বিগত দশ বছরের মধ্যে ২০১২ সালেই প্রথম ঠান্ডা ও আদ্র আবহাওয়ায় শহুরে এলাকার প্রজননক্ষম পাখিগুলো পার্শ্ববর্তী বনভূমি এলাকার পাখিদের তুলনায় অধিক বাচ্চা প্রধান করেছে।গবেষণাটি, ঠাণ্ডা এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায় পাখিদের বাস্তুতান্ত্রিক আচরণের একটি নতুন দিক উন্মোচন করলো।ইংল্যান্ডের ব্রাম্পটনে বনভূমি এলাকার ব্লু এবং গ্রে টিটগুলোর সাথে ক্যাম্ব্রিজের পাখিদের তুলনা করে গবেষকরা জানতে পেরেছেন, শহুরে পাখিগুলো খাদ্যের জন্য যে একটি উৎস যেমন শুককীটের উপর নির্ভরশীল এদের সংখ্যাও ঠান্ডা আবহাওয়ায় প্রভাবিত হচ্ছে।
অ্যাংলিয়া রাস্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মতে, বনভূমি এলাকার পাখিগুলো ২০১২ সালের শীত মৌসুমে তুলনামুলক কম সংখ্যক বাচ্চা দিয়েছে। ব্রিটিশ পক্ষিবিজ্ঞান সংস্থা পাখিদের বাসস্থান এবং শাবকের উপর বার্ষিক জরিপের ফলাফলাফলের নিরিখে ২০১২ সালকে পাখি প্রজননের ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম বছরগুলোর একটি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
ব্লু টিট ও গ্রে টিট
ব্লু টিট ব্রিটেনের সর্বত্র এবং দূর প্রাচ্যের ইরান পর্যন্ত বিস্তৃত। ব্রিটিশ টিটগুলোর মধ্যে গ্রে টিট সবচেয়ে বড় এবং এটি সমগ্র এশিয়া ও ইউরোপে দেখা যায়। বাসস্থান জীবানুমুক্ত রাখার জন্য ল্যাভেন্ডার, আকর ও হলুদের সুগন্ধি পাতা ব্যবহারকারী হিসেবে ব্লু টিট সুপরিচিত। পুরুষ ব্লু টিটদের হলুদাভ অধর নির্দেশ করে তারা কি পরিমাণ হলুদাভ সবুজ ভক্ষণ করেছে। সাধারনত গাছ বা বাক্সের যেকোনো জায়গায় যে কোন গর্তে গ্রেট টিট বাসা বাঁধতে পারে তবে তারা পাইপ অথবা চিঠির বাক্সও ব্যবহার করে। সাম্প্রতিক গবেষনায় দেখা গেছে, স্থানীয় বন্য এলাকার পাখিগুলো শহুরে পরিবেশের পাখিদের তুলনায় চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ায় অধিক প্রভাবিত হয়।
যাই হোক, বিগত দশ বছরে প্রথমবারের মত পাখিদের প্রজনন ক্ষমতার পর্যালোচনায় উঠে আসে যে, শহুরে পাখিদের তুলনায় ব্রাম্পটনের পাখিগুলো কম পরিমাণে ডিম পাড়ে এবং ফলশ্রুতিতে কম বাচ্চা প্রদান করে। উল্লেখ্য, ব্রাম্পটন ব্রিটেনের ঐতিহ্যবাহী বনভুমি এলাকা। ব্রাম্পটনের বাচ্চাগুলো উদ্ভিদ উদ্যানের বাচ্চাদের(১৭ দিন) চেয়ে ডিম থেকে ফুটতে প্রায় দ্বিগুন(৩২ দিন) সময় নেয়। অ্যাংলিয়া রাস্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ন্যান্সি হ্যারিসন গবেষনার সময় প্রজনন বিলম্বকে নজিরবিহীন বলে বর্ননা করেছেন। তিনি বলেন, ঠান্ডা আবহাওয়া শুককীটের উৎপাদন ও বৃদ্ধি, সংখ্যা কমানোয় এবং ফলশ্রুতিতে বনভুমির পাখিদের খাদ্যের প্রধান উৎসের হ্রাসকরনে প্রধান ভুমিকা পালন করেছে। তিনি পরিশেষে উল্লেখ করেন, যদি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এই বৈরী আবহাওয়া একটি নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়, তবে শহুরে পাখিগুলো অধিকতর সুবিধাভোগী হবে।
সূত্রঃ বিবিসি নিউজ
এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক