সিকৃবিতে বিশ্ব জলাতংক দিবস পালিত: কুকুর নিধন বন্ধের আহবান
মূলত মানুষ ও প্রাণির জলাতংক সমন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেই বিশ্ব জলাতংক দিবস উদযাপনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। সমাজে এ রোগের প্রভাব, কিভাবে তা প্রতিরোধ ও নির্মূল করা যায়, তা সমাজের সকল স্তরের মানূষকে জানানোর লক্ষ্যেই এ দিবস উদযাপন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্স অনুষদের উদ্যোগে আজ পালিত হলো বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস। এ উপলক্ষে সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় একটি র্যালী ও ১১.৩০ ঘটিকায় একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। উক্ত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন এপিডেমিওলজি এন্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্স অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ডীন অধ্যাপক ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন ভূঞ্চা। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ইমিউনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ.টি.এম মাহবুব-ই-ইলাহি। সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন প্রানি অধিকার সংরক্ষন বিষয়ক সংগঠন প্রাধিকারের সভাপতি রাহুল দাশ তালুকদার এবং ভেটেরিনারি ছাত্র সমিতির সাধারন সম্পাদক রইস আল রেজুয়ান। সেমিনারটি উপস্থাপনা করেন প্রভাষক ডা. রাশেদ চৌধুরী। সমেনিাররে শুরুতে প্রাধিকারের জন্য পেটা ভারত থেকে শুভচ্ছো স্বারক হিসেবে প্রাপ্ত প্রাণী অধিকার বিষয়ক ম্যাগাজিন, লফিলেট ও ভিডিও চিত্রের কিছু কপি অতিথিদের মাঝে তুলে দেন প্রাধিকারের সদস্য মৌমিতা দাস, চামেলী আক্তার ও ইফফাত আরা বীপাশা।
সেমিনারে বক্তারা জলাতঙ্ক প্রতিরোধে কুকুর নিধন বন্ধের আহবান জানান। জলাতঙ্ক রোগ মোকাবেলার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বেওয়ারিশ কুকুর নিধন কর্মসূচী আছে । বাংলাদেশেও ঢাকা সিটি করপোরেশন প্রতিবছর বিশ হাজারের মতো কুকুর নিধন করে।
কুকুর,বিড়াল ও জলাতংক রোগের ভাইরাস বহনকারী বন্য প্রাণীর কামড়ে বা আঁচড়ে জলাতংক রোগ হতে পারে। কামড়ের কতদিন পর এ রোগ দেখা দিবে তার নিদির্ষ্ট সীমা নেই। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত যে কোন সময়ই দেখা দিতে পারে। প্রতি বছর ৫৫ হাজার ও বাংলাদেশে ২ হাজারেরও বেশি লোক এ রোগে মৃত্যু বরণ করে। সাধারণত ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়। শিশুরা সবচেয়ে বেশী সংবেদনশীল, কেননা পাগলা কুকুর দ্বারা তারাই বেশী আক্রান্ত হয়।
সর্তকতামূলক ভূমিকার মাধ্যমে জলাতংক রোগ প্রতিরোধ করা যায় বলে সেমিনারে বক্তারা জানান। কাউকে কুকুর , বিড়াল বা অন্য কোন বন্য প্রাণী কামড় বা আঁচড় দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিশেধক ভ্যাকসিন দিতে হবে। পোষা প্রাণিকে টিকা দিয়ে, শিশুদেরকে এ রোগ সমন্ধে সচেতন করে এবং সর্বোপরি পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে এরোগের বিস্তার সহজেই রোধ করা যায়। তাছাড়া বর্তমানে কুকুরের টিকা দান ও জন্ম নিয়ণ্ত্রন পদ্ধতি ব্যবহার করেও জলাতঙ্ক প্রতিরোধ সম্ভব। সেজন্য একজন ভেটেরিনারিয়ানের গুরুত্ব ও অপরিসীম বলে জানান তারা।
এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম ডেস্ক