সেবনের আগে জেনে নিন

সাবেরা সায়মা

জীবনে কখনো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেননি এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া ভার, এমনকি রোগের কারণ না জেনেই সামান্য সর্দিকাশিতেও অ্যান্টিবায়োটিক সেবনকারীর সংখ্যা কম নয়। এক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরি যে,অনুজীবঘটিত রোগের কারণ মূলত দু’টিঃ ব্যাক্টেরিয়া এবং ভাইরাস।জীবনরক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিক শুধুমাত্র আমাদের দেহের ব্যাক্টেরিয়াজনিত রোগগুলো প্রতিরোধ করতে সক্ষম।অন্যদিকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিকের কোন কর্মক্ষমতা নেই এবং সাধারণ ভাইরাসজনিত সর্দিজ্বর হলে তা আপনাআপনিই সেরে যায়। antibiotics

রোগের কারণ ভাইরাস না ব্যাক্টেরিয়া তা না জেনেই অনেকটা মাছিমারা কেরানীর মত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন আমাদের দেহে সৃষ্টি করছে নানারকম জটিলতা। অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের দেহে বসবাসকারী উপকারী অণুজীব, যেমন অন্ত্রে বসবাসরত বন্ধু অনুজীব যারা আমাদের দেহে পুষ্টি শোষণ,ভিটামিন বি ও কে তৈরিতে এবং ক্ষতিকারী জীবাণুদের প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে,তাদেরও ক্ষতিগ্রস্থ করে, ফলে দেহ তার সাধারণ কর্মক্ষমতা হারায়। অনেকের মুখেই শোনা যায় যে- অ্যান্টিবায়োটিকে কোন কাজ হচ্ছে না। এর কারণ মূলত অ্যান্টিবায়োটিকের অযথাযথ ব্যবহার, যার কারণে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে তার কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে। অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ফলস্বরূপ যে রোগজীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিকের কামান দেগেছেন,তারাই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি রেজিস্ট্যান্ট বা প্রতিরোধী হয়ে ওঠে এবং তাদের ধ্বংসের জন্য তখন প্রয়োজন হয় আরও শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক যা দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারন হতে পারে।তাই, অ্যালেক্স্যান্ডার ফ্লেমিং এর এই অবিস্মরণীয়, দুর্ঘটনামূলক আবিষ্কার অ্যান্টিবায়োটিক যাতে আমাদের দেহেও কোনরকম অঘটন না ঘটাতে পারে সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে। আমাদের সকলেরই উচিত অভিজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা এবং একই উপসর্গের কারণে পূর্বে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics