স্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্য আইনসমূহের সমন্বয় ও বাস্তবায়ন জরুরী

খাদ্য নিরাপত্তা ও মান রক্ষায় বাংলাদেশের সরকারের একাধিক সংস্থার দায়িত্ব রয়েছে। সরকারের ৭টি মন্ত্রণালয় নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিতের সাথে সরাসরি জড়িত। এছাড়া বিভিন্ন অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরগুলোর উপরও বিভিন্ন দায়িত্ব সুস্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করা রয়েছে। খাদ্যের সাথে এ সকল মন্ত্রণালয়গুলোর সম্পৃক্ততা থাকলেও এ সংস্থাগুলোর একটির সাথে অন্যগুলোর সমন্বয় নেই। এ সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে ভেজাল ও বিষাক্ত খাদ্য লাগামহীনভাবে বিপনন ও বাজারজাতকরণ করা সম্ভব হচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে খাদ্য সংশ্লিষ্ট আইনসমূহের সমন্বয় ও তা দ্রুত কার্যকর করা জরুরী। আজ ২১ জুন ২০১৪, শনিবার, সকাল ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট ও কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক থেকে উক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়।

বক্তারা জানান, বাংলাদেশ বিশুদ্ধ খাদ্য আইনে মানব-স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য যেমন ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ফরমালিন, কীটনাশক (ডিডিটি, পিসিবি তেল) বা বিষাক্ত রং খাদ্যে ব্যবহার এবং ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য যেমন ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ফরমালিন, কীটনাশক (ডিডিটি, পিসিবি তেল) বা বিষাক্ত রং মিশানো খাদ্য বিক্রি নিষিদ্ধ। প্রতিটি জেলা এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় এক বা একাধিক বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত স্থাপনের বিধান রয়েছে। বিশুদ্ধ, দূষণমুক্ত ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিতকরণ এবং ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণে বেশ কয়েকটি আইন প্রচলিত রয়েছে। এগুলো হচ্ছে – বাংলাদেশ বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ, ১৯৫৯ যা বর্তমানে বাংলাদেশ বিশুদ্ধ খাদ্য (সংশোধিত) আইন, ২০০৫, বিএসটিআই অডিনেন্স, ১৯৮৫ যা বর্তমানে বিএসটিআই (সংশোধিত) আইন, ২০০৩, মোবাইল কোর্ট অডিনেন্স ২০০৯, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৫৬, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫।DSC_4673

খাদ্য উৎপাদন, মজুদ, বিপনন, বাজারজাতকরণ, মূল্য নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য মান রক্ষার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়, বানিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, কৃষি অধিদপ্তর, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর, মৎস অধিদপ্তর, বিএসটিআই, বিসিএসআইআর এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ সংস্থাগুলোর নীতিমালা, আইন ও কার্যপরিধিতে খাদ্য মান রক্ষা সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পুলিশকে বিভিন্ন আইনের অধীন আইন বাস্তবাস্তবায়নে সহযোগিতার বাধ্যকতা রয়েছে। এ সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে ভেজাল ও বিষাক্ত খাদ্য লাগামহীনভাবে বিপনন ও বাজারজাতকরণ করা সম্ভব হচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে খাদ্য সংশ্লিষ্ট আইনসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার।

খেলাঘরের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মাহফুজা খানমের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন- ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট এর সহ-সভাপতি প্রফেসর ডা. শুভাগত চৌধুরী, প্রফেসর ডা: আবু সাঈদ, প্রফেসর ডা: ফজলুর রহমান, সম্পাদক ডা: আজিজুল হক, খাদ্য বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডা: লেলিন চৌধুরী, পবার নির্বাহী সদস্য আবুল হাসনাত, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা: মোজাহেরুল হক, বাংলাদেশ হেলথ এসোসিয়েশনের ডা: সমীর কুমার সাহা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খেলাঘরের সম্পাদক লাভলী চৌধুরী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics