হুনুলুলু বন্দরে পরিবেশবান্ধব হাইড্রোজেন জ্বালানী; আশার আলো দেখছেন বিজ্ঞানীরা

সাইফুর রাহমান সুমন

হুনুলুলু সমুদ্র বন্দরে এক নতুন প্রযুক্তি ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে আগামী ২০১৫ সালের মধ্যে। হাইড্রোজেন শক্তি চালিত ইঞ্জিন, আশা করা হচ্ছে যা তুলনামুলক কম শক্তি ব্যায় করবে এবং একই সাথে কম শক্তি পরিবেশে নির্গমন করবে। এখানে জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন এর শক্তি ব্যবহার করা হবে। এটি মালামাল খালাসকারী জাহাজ বা নোঙরবাহী জাহাজে সাহায্যকারী শক্তি প্রদান করবে। নতুন এই জ্বালানি প্রকল্পটি স্যান্ডিয়ানা ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি এর একটি উদ্যোগ। এই হাইড্রোজেন শক্তি চালিত ইঞ্জিনটি জাহাজের যেকোনো জায়গায় পরিবহন করা যায়। যেকোনো জায়গা থেকে এটি জাহাজের যেকোনো অংশে তড়িৎ শক্তি প্রদান করতে সক্ষম। এটি এই যন্ত্রের একটি বিশেষ সুবিধা।hydrogen fuel environmentmove

সমুদ্র বন্দরে পানি ও বায়ু দূষণের মাত্রা বর্তমান পরিবেশগত প্রতিবেদনগুলোতে চোখে পরার মত উঠে আসছে। সমুদ্র বন্দরগুলো বর্তমান সময়ে বর্ধিত হচ্ছে এবং একই সাথে পরিবেশের উপর এর প্রভাবও বেড়ে চলেছে। পাশাপাশি এসব বন্দরকে অনেক ধনের আইনকানুনের মধ্যে দিয়ে চলতে হয়, তাই হনুলুলু এর মত কিছু সমুদ্র বন্দরগুলো এই প্রযুক্তি ব্যাবহার করা শুরু করেছে। সুখবর এই যে সমুদ্র বন্দরগুলো বর্তমানে আইন করে সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহারে এগিয়ে আসছে। সেই দিক বিবেচনায় এই ‘হাইড্রোজেন শক্তি জ্বালানি’ অগ্রগণ্য ভুমিকা পালন করবে বলে বিশেজ্ঞরা মনে করছেন। জাহাজের ডেকে ব্যাবহারের জন্য ইতঃপূর্বে এই প্রযুক্তি আর ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করেছে স্যান্ডিয়ানা ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা। এটির গুনাগুন বর্ণনা করতে গিয়ে তারা বলেন, এটি ২০ ফুট শিপিং কন্টেইনার জাহাজস্থ করতে সক্ষম। এটি ৩০ কিলোওয়াট জ্বালানী কোষ দ্বারা গঠিত এবং রয়েছে হাইড্রোজেন সংরক্ষণাগার ও শক্তি রুপান্তরক সরঞ্জাম। এটি পরিবেশ বান্ধব এবং অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী।

স্যান্ডিয়ানা কোম্পানি বিভিন্ন বন্দর এর উপর নিরিক্ষা চালিয়ে এই ইঞ্জিন কর্ম ক্ষমতা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছে। তারা অন্যান্য ইঞ্জিন ব্যবস্থার সাথে এই হাইড্রোজেন শক্তি চালিত ইঞ্জিনের তুলনামুলক পরীক্ষা চালিয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল কন্টেইনারগুলোকে ঠাণ্ডা করার জন্য, যা হাইড্রোজেন শক্তি চালিত ইঞ্জিন সর্বাধিক কর্ম ক্ষমতা দেখিয়েছে। বিভিন্ন পাওয়ার লেভেলে এর শক্তি মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, এটি ডিজেল ইঞ্জিন থেকে বেশী দক্ষতা সম্পন্ন এবং কম শক্তি নির্গমন করে যা পরিবেশের জন্য কম হুমকি স্বরূপ। নিরীক্ষা বলছে যে, যখন জেনারেটরগুলো কম সর্বোচ্চো  শক্তি উৎপাদন করে জ্বালানী কোষগুলো তখন প্রজ্বলন ইঞ্জিন (combustion engine) থেকে বেশী দক্ষতা প্রদরশন করে। বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে হাইড্রোজেন এর মূল্য এবং এই ইঞ্জিন থেকে প্রভুত লাভ নিয়ে গবেষণা করছেন, এবং অচিরেই তারা এ ব্যাপারে আশার বানী শোনাবেন বলে তারা আশাবাদী।

বিভিন্ন সমুদ্র বন্দরে প্রতিবছর জ্বালানী বাবদ বিপুল পরিমাণ সরকারী ও বেসরকারী অর্থ ব্যয় হয়। এই ইঞ্জিন ব্যবহারের ফলে তা অনেকাংশে কমে আশবে বলে সান্ডিয়ানা কোম্পানি আশাবাদী। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বন্দরে এই ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সাইন্স ডেইলি অবলম্বনে

আরো দেখান

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics