পরিবেশ-বান্ধব জীবাণু-বিয়োজ্য মাইক্রোবিড আবিষ্কার !
মাইক্রোবিড হল অতি ক্ষুদ্র প্লাস্টিক বল (০.৫মি মি এর চেয়ে ছোট) যা সাধারণত বিভিন্ন পরিষ্কারক দ্রব্য, যেমন- গোসলের জেল,শেইভিং ফোম, ফেশিয়াল স্ক্রাব এবং অন্যান্য প্রসাধনী তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। মাইক্রোবিড নিয়ে বিতর্কের কারণ এই যে, এর ক্ষুদ্র প্লাস্টিক আমাদের প্রচলিত নর্দমা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একসময় সমুদ্রে পতিত হয় যা সামুদ্রিক প্রাণী, মাছ ও পাখির জন্য ক্ষতিকর এবং বিপদজনক।
সমুদ্র দূষণ বর্তমান বিশ্বের একটি বড় সমস্যা। সমুদ্র দূষণ আমাদের বাস্তুসংস্থানের প্রতিটি স্তরে গুরুত্ববহন করে। প্রতিবছর প্রায় ৮ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক সমুদ্রে যুক্ত হয়, যার একটি বড় অংশ মাইক্রোবিড। আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত পরিষ্কারক ও প্রসাধনীতে যে মাইক্রোবিড থাকে তা নদী ও সমুদ্রের পানি ও জলজ জীবনে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। মাইক্রোবিডের পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাবের দিকে লক্ষ রেখে ২০১৭ সালের জুনের শুরুতে যুক্তরাজ্য মাইক্রোবিড ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
যুক্তরাজ্যের বাথ ইউনিভার্সিটির সাসটেইনেবল কেমিক্যাল টেকনোলোজি সেন্টার এর বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের যৌথ প্রচেষ্টায় নবায়নযোগ্য সেলুলোজ দ্বারা তৈরি পচনশীল মাইক্রোবিডের আবিষ্কার হয়েছে।
সেলুলোজ একধরনের জৈবযৌগ যা প্রাকৃতিক ভাবে বিভিন্ন গাছপালা ও কাঠে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানিদের মতে কাঠ ছাড়াও কাগজ বা অন্যান্য শিল্পের পরিত্যক্ত অংশের সেলুলোজ ব্যবহার করেও মাইক্রোবিড উৎপাদন করা সম্ভব। উৎপন্ন মাইক্রোবিড পরিষ্কারক পণ্যে ব্যবহারের ক্ষেত্রে উপযুক্ত এবং অণুজীবের আক্রমনে বিয়োজ্য। এ ধরনের মাইক্রোবিড সমূহ নর্দমা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অথবা প্রকৃতিতে অতি অল্প সময়ে বিয়োজিত হয়ে যাবে। অপরদিকে প্লাস্টিক মাইক্রোবিড যা সাধারণত পলি-ইথিলিন, পলি-প্রপিলিন, পলিমিথাইল-মিথাক্রিলেট নামক বিবিধ রাসায়নিক যৌগ দ্বারা তৈরি হয় যা বিভিন্ন তৈল জাতীয় পদার্থ থেকে উৎপাদন করা হয়। এ ধরনের মাইক্রোবিড সম্পূর্ণভাবে বিয়োজিত হতে শতশত বছরের প্রয়োজন হয় যা সামুদ্রিক পরিবেশ দূষণ করে।
নতুন জীবাণু বিয়োজ্য মাইক্রোবিডের ব্যবহার সমুদ্র দূষণের মাত্রা অনেকাংশে কমাতে সক্ষম হবে।