বাটারফ্লাই বাংলাদেশ আলোকচিত্র প্রদর্শনীঃ রাজধানীতে প্রজাপতির রঙ!
পরিবেশের সূচক হিসেবে খ্যাত প্রজাপতি ও এর বাসস্থান রক্ষার্থে জনসচেতনতা তৈরি- স্লোগান নিয়ে গতকাল রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে উদ্বোধন দিয়ে শুরু হলো “ বাটারফ্লাই বাংলাদেশ ” এর ৫ দিন ব্যাপী প্রজাপতি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ।
প্রজাপতির বাসস্থান সংরক্ষণ, বিভিন্ন আচরণ বিশ্লেষণ, পরিযায়ন ইত্যাদি নানান বিষয় নিয়ে কাজ করাই “বাটারফ্লাই বাংলাদেশ” সংগঠনের কাজ। আড়াই বছর ধরে কাজ করে আসছে এই সংগঠনটি ।রাজধানীবাসীর জন্য ফ্রেমবন্দী করে এই বহু বর্ণিল পতঙ্গটি দেখার সুযোগ করলেন তাঁরাই।
ছোটবেলায় প্রজাপতির সাথে আমরা কম বেশি খেলা করেছি আর এখন এই ঢাকা শহরে প্রজাপতির দেখা পাওয়া যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতোই দুর্লভ । রাজধানীতে দৃষ্টিনন্দন শোভা দেখার সুযোগ তেমন নেই বললেই চলে- জানালেন উদ্যোক্তা সদস্য অমিত কুমার নিয়োগী।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের পরিচালক ফায়জুল লতিফ চৌধুরী, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিদ মজুমদার বাবু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মনোয়ার হোসেন তুহিন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল আলিম ।
ড. তুহিন এই ধরনের উদ্যোগ আয়োজনে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন এবং জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে। এছাড়া সুখবর হিসেবে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত বাটারফ্লাই পার্কটি প্রজাপতিপ্রেমীদের জন্য খুব শিগ্রই খুলে দেবার কথা জানান।
জনাব তুহিন মূলত প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রজাপতি নিয়ে গবেষণা করছেন এবং তাঁর হাত ধরেই বাটারফ্লাই বাংলাদেশ নামক গ্রুপটির পথচলা তরান্বিত হচ্ছে।
বাটারফ্লাই বাংলাদেশ শুরুর দিকে একটি ফেসবুক গ্রুপ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বর্তমানে সেই গ্রুপটি প্রজাপতিপ্রেমীদের একটি জ্ঞান আদানপ্রদান ও গবেষণার কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তাঁদের মধ্যে, প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রশাসক হিসেবে আছেন সাবু আনোয়ার,অমিত কুমার, ওয়াহিদুজ্জামান সোহেল, হাসান মাসুদ, তানভীর আহমেদ সৈকত, শামসুর রহমান সেলিম, নাসিফ সাদাত, শাওন চৌধুরী এবং অনিক চন্দ্র মণ্ডল। খোলা মনের অধিকারী এসব তরুণ প্রজাপ্রতিপ্রেমীদের সাথে চাইলেই যে কেও জমিয়ে ফেলতে পারেন প্রজাপতি বিষয়ক আড্ডা। সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রজাপতি ভাবনা আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অবদান রাখতে বদ্ধপরিকর এই দল।
আয়োজক সংগঠনের অন্যতম কারিগর অভিনেতা হাসান মাসুদ জানালেন , এই ব্যতিক্রমধর্মী আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে সব মিলিয়ে ১০৬ জন আলোকচিত্রের ১৩৪টি আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে যার মাধ্যমে দর্শনার্থীরা দেখতে পারবে ১৮৬ প্রজাতির প্রজাপতি। আলোকচিত্র প্রদর্শনী ছাড়াও থাকছে প্রজাপতির জীবনচক্র বিষয়ক ছবি এবং প্রজাপতি বিষয়ক কর্মশালা।থাকছে প্রজাপতিগুলোর বৈজ্ঞানিক পরিচিতি, কী ধরনের গাছে বসবাস করে এবং পাখার দৈর্ঘ্য সম্পর্কে তথ্য। প্রজাপতির বৈজ্ঞানিক তথ্যের পাশাপাশি নান্দনিক রূপ তুলে ধরা হয়েছে প্রদর্শনীতে।
প্রদর্শনীর মিডিয়া পার্টনার হিসাবে থাকছে চ্যানেল আই এবং environmentmove.earth । সহযোগী সংগঠন হিসাবে আছে জাতীয় যাদুঘর, প্রকৃতি ও জীবন সংগঠন এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ।
আপনিও সবান্ধবে অথবা সপরিবারে ঘুরে আসতে পারেন বাটারফ্লাই বাংলাদেশের এই প্রদর্শনীতে । ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০.৩০ থেকে বিকাল ৫.৩০ পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে প্রদর্শনী ।