বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করার দাবি
বিশ্ব নদী রক্ষা দিবস ২০১৭ উপলক্ষে ১৪ মার্চ বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষা করার দাবিতে সকাল ১০:০০ টায় হাজারীবাগ পার্ক থেকে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল অভিমূখে পদযাত্রা এবং সমাবেশ করেছে পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ সহ ১৭টি পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন।
পদযাত্রা শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, মর্ডান ক্লাবের সভাপতি আবুল হাসনাত, পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলনের সহ-সম্পাদক মোঃ সেলিম, সুবন্ধনের সভাপতি, হাবিবুর রহমান, স্বচেতন নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি রোস্তম খান, নাসফের ক্যামেলিয়া চৌধুরী, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, স্বপ্নের সিড়িঁর সাধারন সম্পাদক উম্মে সালমা, গ্রীন মাইন্ড সোসাইটির সাধারন সম্পাদক ফারুক হোসেন,অরুনোদয়ের তরুন দলের সভাপতি সহিদুল ইসলাম, জনস্বার্থ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডি. এম. সাকলাইন, নির্মূল কমিটির মোঃ আব্দুল্লাহ, সেতুবন্ধন কামরাঙ্গীরচরের সাধারন সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন প্রমূখ।
বক্তার বলেন, এক সময় প্রবহমান থাকলেও এখন বসতি, শিল্প-কারখানা, গৃহস্থালী বর্জ্য, হাসপাতালসহ বর্জ্য নির্গমনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ দখল করে ফেলেছে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এখানে এক সময় বহমান নদী ছিল। প্রধানমন্ত্রী এবং হাইকোর্টের নির্দেশনা সত্ত্বেও অব্যাহত দখল, ভরাট ও কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনেই আজ মরতে বসেছে পুরান ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রশাসনিক সমন্ময়ই পারে বুড়িগঙ্গার দ্বিতীয় চ্যানেল সহ ঢাকার আশে পাশের নদী, খাল ও জলাধার কে রক্ষা করতে। দেশে জলাধার রক্ষা আইন থাকার পর ও প্রশাসনের চোখের সামনে দখলদাররা মরিয়া হয়ে ওঠেছে বুড়িগঙ্গা সহ এর দ্বিতীয় চ্যানেল এর শেষ নিঃশ্বাস টুকু কেড়ে নিতে। দখল ও দূষনের প্রতিযোগিতা বন্ধে এবং বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তোলার লক্ষে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে খাল, নদী এবং জলাধার রক্ষার উদ্যোগ গ্রহন করা দরকার।
পদযাত্রা এবং সমাবেশ থেকে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষায় ৯ টি দাবি পেশ করা হয়।
১. সিএস রের্কড অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী পিলার স্থাপন করতে হবে।
২. বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে প্রদত্ত ভূমি বরাদ্দসমূহ সরকার কর্তৃক বাতিল করতে হবে।
৩. ব্যক্তি ও সংস্থার নামে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের রেকর্ডসমূহ আইন বহির্ভূত ঘোষণা করে সেগুলো বাতিল করতে হবে।
৪. খনন করে আদি চ্যানেলের গতি প্রবাহ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
৫. নদী দূষণমুক্ত করার লক্ষে পয়ঃবর্জ্য পরিশোনাগার স্থাপন, গৃহস্থালী বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে।
৬. ট্যানারী গুলো জরুরি ভিত্তিতে স্থানান্তর করতে হবে।
৭. শিল্পবর্জ্য, হাসপাতাল বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধ করতে হবে এবং বর্জ্য পরিশোধনাগার স্থাপন করতে হবে।
৮. বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল দখল ভরাট করে নির্মাণকৃত শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-ঘরের পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সকল নাগরিক সুযোগ বন্ধ করেতে হবে।
৯. নদী দখলকারীদের চিহিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।