এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম জিতে নিলো লঞ্চপ্যাড বাংলাদেশ সিজন ওয়ান

অবশেষে শেষ হাসি হাসলো এনভারনমেন্টমুভ ডটকম। কারণ তারাই বিচারকদের মন জয় করে জিতে নিল লঞ্চপ্যাড বাংলাদেশ সিজন ওয়ান এর ২.৫ লক্ষ টাকার সিড ক্যাপিটাল।কিন্তু দিনের শুরুতে বোঝা যায়নি এমনটা হবে। ফিনালেতে অংশগ্রহণকারী বাকি ৪টি স্টার্ট-আপ টিমই তাদের অনন্য সাধারন ব্যাবসায় কৌশল উপস্থাপন করে বিচারকদের জন্য কাজটি বহুগুনে দুরূহ করে তোলেন।

২৯ আগস্ট বিকেল ৪.৩০ টায় ফাইনাল পিচিং বা প্রেজেন্টেশন শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের এলামনাই ফ্লোরে।আগ্রহী শ্রোতা আর বিচারক সবার মনোযোগ তখন ডায়াসে, আধুনিক ফ্যাশন সচেতন মেয়েদের নিজেদের পছন্দমত ড্রেস ডিজাইনে অনন্য সুবিধা দিতে সক্ষম স্টার্টআপ ইলুশানকে দিয়ে আরম্ভ হয় পিচিং সেশন। এরপরেই দেশীয় প্রযুক্তিতে সল্প খরচে মশা মারার অত্যাধুনিক গেজেট উপস্থাপন করে চার প্রকৌশলীর দল টিম-ফোর-টেক। উদ্যোগতা হতে যে বয়স কোন বাধা নয় কিংবা কৈশোর পেরোনোর আগেই যে দেশের জন্য কিছু করা যায়, সে কথা প্রমাণ করতেই প্রজেক্ট “সেভ ইয়োর ধান” নিয়ে হাজির হয় ষোল বছর বয়েসি কৌশিক, ইফতি এবং সালমান। “সেভ ইয়োর ধান” একটি সিকিউরিটি ডিভাইস, যা চাষীদের কষ্টার্জিত শস্য চোর এবং ইঁদুরের হাত থেকে রক্ষা করতেকাজ করবে, ইতিমধ্যেই তারা পরীক্ষামূলকভাবে সাভারে ২ জন চাষীর গোলায় স্থাপন করেছে এই ডিভাইস।

অতঃপর আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্নকারী তরুণের বাংলাদেশের পরিবেশকে বাঁচানোর স্বপ্ন নিয়ে গড়া এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম। খুবই সাধারণ কিন্তু অভিনব ব্যাবসায় মডেল নিয়ে গড়া এই স্টার্ট-আপ গত ১৫ মাস ধরে কাজ করছে পরিবেশ বিষয়ক নানাবিধ সমস্যা অতি সাবলীল ভাষায় সাধারন মানুষের কাছে তুলে ধরে সচেতন করে তুলবে বলে। তাদের কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছিল পরিবেশ রক্ষার জন্য এই আন্দোলনকেই তারা তাদের ক্যারিয়ার হিসেবে নিয়েছেন। ব্যবসা শুধু নিজের জন্য নয়, অপরের জন্য, সমাজের জন্য, সুন্দর পৃথিবীর জন্য, এ বার্তাই যেন পৌঁছে দিলো এনভাইরনমেন্টমুভ ডটকম এর তরুণ পরিবেশ যোদ্ধারা।Team Environmentmove.com

সবশেষে উপস্থাপন করে সিলেটের স্টারটাপ ‘প্যাশন টেক’। ঢাকার বাইরেও যে জটিল ও সূক্ষ্ম প্রযুক্তি নিয়ে ব্যাবসা গড়ে তোলা সম্ভব তার প্রমাণ পাওয়া যায় শাবিপ্রবি থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর প্রকৌশলী দলের আবিষ্কার ODVIP ডিভাইস দেখে, যা কিনা হতে পারে অন্ধদের চলাফেরা করতে সাহায্যকারী যে কোন ডিভাইস-এর আধুনিকতম বিকল্প। তাদের প্রয়োজন ছিল এই ডিভাইসটির শেষ পর্যায় গবেষণা সম্পন্ন মাত্র ৫০ হাজার টাকার স্পন্সরশিপ।

এই স্টার্ট-আপ মহাসমারোহের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিচার কাজ পরিচালনা করেন ইএমকে সেন্টারের সিইও এম কে আরেফ, অন্যরকম গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ, এনোভেসনএর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও নাজমুল আহমেদ নাজম, চালডাল ডট কমের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ওয়াসীম আলীম এবং হাব-ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা সাজীদ ইসলাম।environmentmove.earth with judges and du vc

সেই সাথে উপস্থিত ছিলেন বিগত ৬ সপ্তাহ ধরে স্টার্ট-আপগুলোর সাথে অক্লান্ত পরিশ্রমকারী মেন্টর এ আর কমিউনিকেশনের সিইও এম আসিফ রহমান ও অ্যাডভোকেট সালেহ আকরাম।

পিচিং পরবর্তী সন্ধ্যায় প্রধাণ আকর্ষণ ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী ও ডেফডিল গ্রুপের চেয়ারম্যান এম ডি সাবুর খানের বক্তব্য। জনাব সবুর খান তার সাফল্যমন্ডিত উদ্যোক্তা জীবনের কিছু কথা তুলে ধরে উপস্থিত তরুণ উদ্যোক্তাদের উজ্জীবিত করার পাশাপাশি সামনের দিনগুলোতে তাদের যে কোনো রকম ব্যবসায়িক সহায়তা দানের আশ্বাস প্রদান করেন। আর সম্মানীত উপাচার্য মহোদয় বাংলাদেশের অর্থ সামাজিক উন্নয়নে তরুণ উদ্যোক্তাদের ভুমিকা নিয়েআলোকপাত করেন।

দি প্রেনেউরসের আয়োজনে এবং ই এম কে সেন্টারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত লঞ্চপ্যাড বাংলাদেশ এই বছরের ৩রা জানুয়ারী যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের চারটি বিভাগ থেকে অভিনব ও সম্ভাবনাময় স্টার্টআপ খুঁজে বের করার লক্ষ্য নিয়ে, যা শেষ হয় ২৯ অগাস্ট পাচটি তরুণ উদ্যোক্তা দলের পিচিং এর মধ্য দিয়ে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics