
জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্ভাবিত ফসলঃ আশীর্বাদের পেছনে অভিশাপ নয়তো!!!
মনিজা মনজুর
প্রাকৃতিক পরিচর্যা ছাড়াই বিজ্ঞানের আশীর্বাদে আজ মাঠের রঙ্গিন ফসল থেকে শুরু করে প্রাণীকুলের জন্মও হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, ঝকঝকে তকতকে ল্যাবরেটরির কাঁচের দেয়ালের মাঝে!! এই উন্নতমানের জীবপ্রকরণ সৃষ্টির এক যুগান্তকারী শাখার নাম ‘জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং’। ইতিমধ্যেই ব্যাপক সাড়া জাগানো এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাদ্য সমস্যা, ওষুধ উৎপাদন সহ অসংখ্য সমস্যার সমাধান থেকে মুক্তির উপায় জানা গেছে।
কিন্তু একটু খটকা আছে!!! বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চলুন জেনে নেই জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্ভাবিত ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তার ১০টি বিষয়ঃ
১। প্রথমেই আসি ‘দ্যা ফ্লেভর-স্যাভর টমেটো’(The Flavr-Savr Tomato) এর কথায়,যা অনেক দিন যাবৎ মাচায় রাখা যায়। কিন্তু প্রাণীদের উপর গবেষনা করে দেখা গেছে এটি খাওয়ার পরেই তাদের পাকস্থলীতে রক্তক্ষরণ শুরু হয়! সূত্রঃ হাফিংটন পোস্ট
২। জৈবপ্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত ভূট্টার একটি জাত এমন একটি রাসায়নিক উপাদানের উপর ভিত্তি করে গড়া যা ভিয়েতনামের যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল। এই রাসায়নিক শিশুদের বিকলাঙ্গতার জন্য দায়ী। সূত্রঃ বিবিসি
৩। শিশুদের মাঝে অ্যালার্জীর প্রকোপ বেড়ে যায় যখন ৯০ এর দশকে প্রথম জৈবপ্রযুক্তিগত ফসল ব্যবহারের হার দ্বিগুন হয়ে যায়। একটি গবেষণায় জানা গেছে, এরূপ খাদ্য মানবদেহে অপরিচিত প্রোটিন হিসেবে বিবেচিত হয় এবং যার ফলে অ্যালার্জীর লক্ষণ দেখা দেয়। সূত্রঃ হাফিংটন পোস্ট
৪। জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহারে উৎপন্ন অণুজীব বা ক্ষুদ্র প্রাণী দমন করা অসম্ভব। এর মূল কারণ পরাগায়ন পদ্ধতিতে এদের বিস্তার। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব মানবকূলের পক্ষে দমন করা অসম্ভব। সূত্রঃ গার্ডিয়ান
৫। কিছু প্রস্তাবনা আছে যা বিতর্কিত মরগেলাস নামক রোগের সাথে সম্পর্কিত। মূলত পোকামাকড়ের আক্রমনের ফলে ত্বকে এই রোগ হয়। সূত্রঃ হাফিংটন পোস্ট
৬। জৈবপ্রযুক্তিতে উৎপন্ন বীজ কিনতে হলে ভোক্তাকে অবশ্যই চুক্তিপত্রে সই করে নিয়ম কানুন জেনে নিতে হবে। নয়তো গবেষণা বাধা প্রাপ্ত হয়,যা জৈবপ্রযুক্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সূত্রঃ সায়েন্টিফিক অ্যামেরিকান
৭। আমেরিকার সুপার শপগুলোর প্রায় ৭০% জৈবপ্রযুক্তি উদ্ভাবিত পণ্য। যার বেশিরভাগের ই কোনো লেবেল নেই। সূত্রঃ ফোর্বস
৮।যে সকল বিজ্ঞানী জৈবপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেন তারা নাকি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। তারা হুমকির মুখে থাকেন যাতে এই প্রযুক্তি নিয়ে কোনো নেতিবাচক খবর প্রকাশ না হয়!! সূত্রঃ Immortal maize by Andrew Rowell
৯। গবেষণায় দেখা গেছে, জৈবপ্রযুক্তিতে উৎপন্ন প্রাণিসমূহের মাঝে ক্যান্সার এর বড় ঝুঁকি রয়েছে। এমনকি তারা বন্ধ্যা বাচ্চার জন্ম দিতে পারে। সূত্রঃ গার্ডিয়ান
১০। বিছে থেকে উৎপন্ন কীটনাশক বাঁধাকপিতে প্রয়োগ করা হয়। যা তথ্যানুসারে মানুষের জন্য উপকারী এবং পোকামাকড় কে পঙ্গু করে দেয়। সূত্রঃ দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্ট