সবুজের অবগাহনে গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটির প্রকৃতি যাত্রা
শাবিপ্রবি’র প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ক একমাত্র সংগঠন গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটি গতকাল মাধবকুন্ড, পরিকুন্ড এবং সমনবাগ চা বাগানে তাদের ৬ষ্ঠ ফিল্ড ট্যুর সম্পাদন করলো।প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা শাবিপ্রবি’র একমাত্র সংগঠন গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটি প্রতিবছরই প্রকৃতিকে ভালভাবে জানা ও প্রকৃতির সংস্পর্শে যাওয়ার লক্ষ্যে ট্যুর এর আয়োজন করে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল আয়োজিত হলো এই প্রকৃতি যাত্রা। পুরো দিনব্যাপী এই ট্যুরে ‘মাধবকুন্ড’, ‘সমনবাগ চা বাগান’ ছাড়াও সম্পূর্ণ বৈচিত্রপূর্ণ ও অধিকাংশের কাছেই অপরিচিত ‘পরিকুন্ড’ থেকে ঘুরে আসেন সংগঠনের সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাসযোগে ৭০ জনের মতো যাত্রী নিয়ে সকাল ৮টায় যাত্রা শুরু করে গন্তব্যে পৌছার পর ভ্রমনপিপাসু দলটি ট্যুরের প্রধান আকর্ষণ ‘পরিকুন্ড’ পরিদর্শন করে। এই বুনো ঝর্ণাটি মাধবকুন্ডের অদূরেই অবস্থিত। কিন্তু দূর্গম রাস্তা অথবা অন্য যে কারণেই হোক অজানা থেকে গেছে। প্রায় ১৫০ ফুট উচু পাথরের পাহাড় থেকে শো শো শব্দে পানি অবিরাম নিচে পতিত হচ্ছে। জল ও পাথরের সংঘর্ষে জলকণাগুলো উড়ে গিয়ে মৃদু কুয়াশার সৃষ্টি করছে। এই দৃশ্য যে কী পরিমাণ সুন্দর! তা না দেখলে, বলে বোঝানো যাবে না।
পরিকুন্ডের অপরূপ সৌন্দর্যে কিছু বিমোহিত সময় কাটানোর পর দলটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জলপ্রপাত ‘মাধবকুণ্ড’ দেখতে যায়। এই জলপ্রপাতটির উচ্চতা প্রায় ২০০ ফুট। বর্ষাকালে পানির বেগ অনেক বেশি থাকে। ঝর্ণার ডানপাশে একটি পাথরের গুহা আছে, স্থানীয়দের ভাষায় যা ‘কাব’ নামে পরিচিত।
ঝর্ণা পরিদর্শন শেষে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়ার পথে সবাই মিলে সমনবাগ চা বাগানে হাটা দেয়। ওখানে চা পাতার সুবাসে সতেজতায় ভরে সবার মন।
চা বাগান পরিদর্শন শেষে সংগঠনের সভাপতি অর্চিশমান দত্ত সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে জায়গাগুলো সম্পর্কে সবাইকে ধারণা দেন। বিশেষ করে তিনি ‘মাধবকুন্ড’ ও ‘পরিকূন্ড’ এই নামকরণগুলোর ইতিহাস সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করেন।
এছাড়াও সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতাসভাপতি ও আজীবন সদস্য মেহেদী হাসান রুবেল সবাইকে ট্যুরে আসার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে আয়োজকরা এরকম নতুন নতুন জায়গায় ট্যুর আয়োজন করবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সবশেষে, শেষ বিকেলে সূর্য যখন দিগন্তের পশ্চিম সীমানায় গিয়ে দিন শেষের জানান দেয়, তখন পর্যটক দলটিও আবার কর্মমুখর ব্যস্ত নগর জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য বাসে উঠে এবং গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটি’র আরেকটি সফল ফিল্ড ট্যুরের পরিসমাপ্তি ঘটে।