সুস্থ জীবনচর্চায় কিডনী রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব
বাংলাদেশে কিডনী রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আশংকাজনকহারে বাড়ছে এবং চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় আক্রান্তের অধিকাংশেই বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। অথচ সুস্থ জীবনচর্চার মাধ্যমে কিডনী রোগ প্রতিরোধ করা অনেকাংশেই সম্ভব। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে ১১ মার্চ ২০১৫, বুধবার, বিকাল ৪টায় পবা কার্যালয়ে “সুস্থ জীবনচর্চা ও কিডনী রোগ প্রতিরোধ” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পবার স্বাস্থ্য কমিটির সভাপতি ও পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা: মোজাহেরুল হক। বক্তব্য রাখেন Kidney Awareness Monitoring and Prevention Society (KAMPS) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা: এম এ সামাদ, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সহ-সভাপতি মাজেদা শওকত আলী, ল্যাবএইড হাসপাতাল এবং আসিয়ান মেডিক্যাল কলেজের ডায়াবেটিস কনসালটেন্ট ডা: খালেদ শওকত আলী, মাজেদা হাসপাতালের কনসালটেন্ট এবং আনন্দ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা: তানিয়া খালেদ, পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজের রেজিস্ট্রার ডা: কে এম হোসাইন তৌহিদ (উজ্জল), আনোয়ার খান মেডিক্যাল কলেজের রেজিস্টার ডা: এটিএম মোস্তাফিজুর রহমান, কনসালটেন্ট ডা: সিদ্দিকুর রহমান, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা: হাবীবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন, আয়ুর্বেদ এন্ড ন্যাচারোপ্যাথি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আয়ুনস) সভাপতি ডা: সমীর কুমার সাহা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ভেজাল খাদ্য ও খাদ্য উৎপাদনে বিভিন্ন ধরণের সার ও কেমিক্যাল এর ব্যবহার বাংলাদেশে কিডনি রোগের আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আমাদের জন্য আতঙ্কজনক। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ২ কোটি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনী রোগে ভুগছে এবং প্রায় ৪০,০০০ লোক কিডনি রোগে প্রতি বৎসর মৃত্যুবরণ করে। তাই এ রোগের ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি। কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। যাদের ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা যদি নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে রাখেন তাহলে কিন্তু কিডনি রোগ অনেকাংশে এড়ানো যায়। কিছু কিডনি রোগী অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ ব্যথার ঔষধ সেবনে ভোগেন।
যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, নেফ্রাইটিস আছে – তাদের কিডনি রোগের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আমাদের দেশে শতকরা ৮০ ভাগ কিডনি এই তিন কারণে নষ্ট হয়ে থাকে। এই তিনটি রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই শতকরা ৮০ ভাগ কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এছাড়া, যাদের ঘনঘন কিডনিতে ইনফেকশন হয়, যাদের পাথরজনিত রোগ আছে, যাদের কিডনিতে বাধাজনিত রোগ আছে, তাদের অতি সহজেই চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। একটু সতর্কতাই কিডনি ফেইলর থেকে মুক্তি এনে দিতে পারে। আলোচনা সভা থেকে কিডনি রোগ প্রতিরোধে নিন্মোক্ত পরামর্শ দেয়া হয়- ১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন ২. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন ৩. কোলেস্টেরল কমান ৪. নিয়মিত ব্যায়াম করুন ৫. ধূমপান পরিহার করুন ৬. কিডনি রোগের আশংকা কবলে রক্তে ক্রিয়াটিনিন ও প্রস্্রাব এ প্রোটিন আছে কিনা তা পরীক্ষা করুন।