কর্দমাক্ত ২৯ জুন !

সিফাত তাহজিবা

ছোটবেলায় বর্ষার দিনে তুমুল বর্ষণের সাথে কাদামাটিতে আমরা কতই না খেলাধুলা করেছি। পিছলে কাদার মধ্যে পড়ে কাদামাটিতে মিলেমিশে একাকার হওয়া আর বাড়ি ফিরে মায়ের বকুনি খাওয়ার মধুর স্মৃতি সবারই কম বেশি আছে। বর্তমান ইট-পাথরে ছেয়ে যাওয়া শহরগুলোয় কিন্তু এরুপ চিন্তাও করা যায়না। ধরুণ, আপনাকে কেউ একজন এসে আমন্ত্রণ পত্র দিয়ে গেল শুধুমাত্র একটি দিন পরিবারের সবাই মিলে বন্ধুদের সাথে সেই কাদামাটি নিয়ে ছোড়াছোড়ি করার উৎসবে! অবাক হবেন কি?
সাদা চামরার মানুষজন কাদামাটিতে ফুটবল খেলার স্বাদ হয়ত আজও পায়নি কিন্তু কাদা ছোড়াছুড়ির করার জন্য তারা রীতিমত দিবস বানিয়ে বসে আছে!
1
সেদিন ছোট বড় সবাই মেতে উঠে কাদা মাখামাখির আনন্দে! একটি দিন সবাই মিলে প্রকৃতির কাছে সমর্পণ করা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রকৃতির আরও কাছাকাছি আনার তাগিদেই ২০০৯ সাল থেকে ২৯ জুন ‘আন্তর্জাতিক কাদা দিবস’ পালিত হয়ে আসছে দুনিয়ার সব দেশেই। এই দিবসটি শুরু করার পিছনে দু’জন মানুষের কৃতিত্ব রয়েছে। একজন ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার গিলিয়ান ম্যাকউলফ অন্যজন আমদেরই প্রতিবেশি দেশ নেপালের বিষ্ণু ভট্ট। দু’জনেই ‘ন্যাচার অ্যাকশন কোল্যাবোরেটিভ ফর চিলড্রেন’ নামক প্রতিষ্ঠানের সদস্য। প্রতিষ্ঠানটির নামেই শোভা পাচ্ছে বাচ্চাদের কিভাবে পরিবেশ আর প্রকৃতির সান্নিধ্যে আনা যায় সেই প্রচেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছেন।
hand_in_mud
২০০৯ সালে কাদা ছোড়াছুড়ির এই মজার খেলাটি হয় সর্বপ্রথম অস্ট্রেলিয়ার ‘বোল্ড পার্ক কম্যুনিটি স্কুল’ এর ছাত্রছাত্রী এবং নেপালের ‘পাঞ্ছিকল অনাথ আশ্রম’র ছেলেদের মধ্যে।
খেলাটি এতই জনপ্রিয় পশ্চিমা দেশগুলোতে যে ২০১৩ সালে ৬টি পরিবার নেপালে আসে জুনের ২৯ তারিখে কাদা দিবসে কর্দমাক্ত হতে। ‘আন্তর্জাতিক কাদা দিবস’ শুধু কাগজে কলমে সীমাবধ্য নেই তা ঘটা করেই উদযাপিত হয়, এক্ষেত্রে বিশেষত স্কুলগুলোই মুখ্য ভূমিকা পালন করে সারাদিন ব্যাপী বিভিন্ন রকমের খেলাধুলার আয়োজন করে এবং তা কাদামাটি দিয়েই! যেখানে বয়সের কোন বাঁধা নেই, সবাই অংশ নিতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics