কেন ; প্রাণীর প্রতি ভালবাসার এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত !!
মোঃ সাইফুল ইসলাম
নাম তার কেন; বয়স মাত্র ৯। এই অল্প বয়সেই সে দেখিয়েছে ছোট ছোট বাচ্চারা প্রাণীদের জন্য কি করতে পারে। এই বয়সেই সে তৈরি করেছে হ্যাপি এনিম্যাল ক্লাব নামক একটি প্রাণী আশ্রয়কেন্দ্র। তার ক্লাবের প্রধান বিষয়বস্তু হচ্ছে ” কোন প্রাণীকে হত্যা নয়” অবশ্য এক্ষেত্রে সে তার পরিবার ও বন্ধুদের কাছ থেকে কিছুটা সহায়তাও নিয়েছে।
কেন বাস করে ফিলিপাইনে। রাস্তায় আশ্রয়হীনভাবে ঘোরাঘুরি করতে থাকা আহত, চামড়া ছুড়ে বের হওয়া কুকুরগুলো দেখে কেনের মন বিষন্ন হয়। তখন সে কুকুরগুলোকে খাবার দিয়েছিল। সেই সাথে কিছু ছবি ফেইজবুকে আপলোড দিয়েছিল। তার কিছু ছবি খুব শ্রীঘ্রই জনপ্রিয়তা পায়। তখন লোকজন তার কাছে সাহায্য পাঠাতে থাকে। সাহায্যের টাকা দিয়ে সে কুকুরের জন্য আরও বেশি বেশি খাবার কিনতে সমর্থ হয়। বর্তমানে সে তার বাবা মায়ের সহায়তায় http://www.happyanimalsclub.org নামক একটি অ-লাভজনক ওয়েব সাইট পরিচালনা করছে। এছাড়াও প্রাণী চিকিৎসক ডক্টর জি এর কাছ থেকে বিনামূল্যে কুকুরের চিকিৎসা সহায়তা পাচ্ছে। মন চাইলে একটু ঘুরে আসতে পারেন তার ওয়েব সাইট থেকে।
কেন যখন শুনত প্রায় ৭০-৮০% মালিক বিহীন কুকুরকে ফিলিপাইনের খোঁয়াড়ে রেখে দেয়া হয় হত্যার জন্য তখন তার মন ঘৃণায় ভরে উঠত। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কুকুরগুলোর জন্য কিছু একটা করতে হবে। কেন বলে – “কুকুরগুলোকে নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে হত্যা করার কোন কারণ আমি খুঁজে পাইনা”।
তাকে বলা হয়েছিল প্রাণীদের জন্য কিছু করতে যে টাকা লাগবে তা যোগাতে ২০ বছর সময় লাগবে। কিন্তু কেন সবাইকে অবাক করে দিয়ে খুব অল্প সময়েই সেই টাকা যোগাড় করতে সমর্থ হয়। সে স্থানীয় লোক ও সামাজিক মিডিয়ার সহায়তায় অর্থের সঞ্চয় করে। তার বাবা তাদের একটি গ্যারেজ কুকুরের আশ্রয়ের ঘর হিসেবে দিয়ে দেয়। এভাবেই কেন প্রাণী প্রেমের উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে যায়।
কেন তোমাকে অভিনন্দন। তুমি প্রমাণ করেছ প্রাণী রক্ষার জন্য সভা সেমিনারের চেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় হচ্ছে সরাসরি কাজে লেগে যাওয়া। যারা কাজের চেয়ে কথা বেশি বলে, আবার কাজ যেমন তেমন দুইটা চারটা সভা সেমিনার করে কিছু ছবি তুলে মিডিয়ায় প্রচারে লেগে যায় তারা দেখুক কেনকে! কেন তুমি প্রমাণ করেছো রাস্তার কুকুরকে বাঁচাতে গেলে রাস্তাতেই নামতে হবে। এয়ার কন্ডিশনার রুম থেকে সম্ভব নয়।
লেখক: চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)।
শিশুরা লোভ-লালসার উর্ধ্বে। তাই তার দ্বারা এই কাজ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু আমরা বড়রা আমাদের লোভ লালসাকে ত্যাগ করতে পারিনা। তাই আমাদের দ্বারা ভাল কাজ তেমন হয়না। সত্যিই কেন এর কাছে আমাদের লজ্জ্বিত হওয়া উচিৎ। সালাম বস!!!!!!!!!!!!