এক ধানের খড়ে জৈবজ্বালানী ও গবাদিপশুর খাদ্য !
একই উৎস থেকে গবাদিপশুর খাদ্য এবং জৈবজ্বালানী তৈরির এক অভিনব পদ্ধতি আবিস্কার করেছেন একদল জাপানি গবেষক। কোন রকম পৃথকীকরণ ছাড়াই কঠিন বা সলিড স্টেট ফারমেন্টেশন বা গাঁজন পদ্ধতি ব্যবহার করে ধান গাছ থেকে জৈবজ্বালানী হিসেবে ইথানল এবং গবাদিপশুর পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনের এ পদ্ধতি নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রটি গত ৩০ জানুয়ারি প্রকাশিত হয় বায়োটেকনোলজি ফর বায়োফুয়েল নামক জার্নালে।
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর এগ্রো-এনভাইরনমেন্টাল রিসার্চ এর গবেষণা প্রধান মিটসু হোরিতা বলেন ” আমাদের এ প্রযুক্তি ব্যবহারে কোন বাড়তি যন্ত্র কিংবা শক্তি প্রয়োগের দরকার নেই, ধান থেকে পাওয়া উপজাত বা ধান গাছের সমস্ত অংশই একাজে ব্যবহার করা সম্ভব; যে কারণে সংগত কারণেই আমাদের এ প্রযুক্তি সস্তা এবং প্রয়োগিক”।
সনাতনী উপায়ে বিশ্বব্যাপি কৃষকরা যে পদ্ধতিতে গবাদিপশুর জন্য খাদ্য তৈরি করেন সে উপায়টিই এক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়েছে। ধানের খড়ের সাথে ইস্ট, এনজাইম এবং এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া মিশিয়ে গাঁট করে রেখে দেয়া হয় এবং পর্যায়ক্রমে সময়ের সাথে সাথে গবাদিপশুর খাদ্য প্রস্তুত হবার পাশাপাশি বিভিন্ন অনুপাতে ইথানলও উৎপন্ন হয়। সময় অনুপাতে এক থেকে তিন মাসে দিগুণ পরিমাণ ইথানল উৎপাদিত হয়ে থাকে।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে যে কটি জৈবজ্বালানী তৈরির পদ্ধতি চালু রয়েছে সেগুলো নিয়ে বিস্তর বিতর্ক বিদ্যমান। জৈব জ্বালানী উৎপন্ন করতে যে প্রধান কাঁচামাল প্রয়োজন সেটি আসে প্রধানত ধান এবং ভুট্টা থেকে এবং এথেকে জ্বালানী উৎপাদনের জন্য লাগে ইন্ডাস্ট্রি এবং আলাদা জ্বালানীশক্তি। সেদিক থেকে বিচার করলে হোরিতা আবিষ্কৃত এই পদ্ধতি অনেকাংশে সাশ্রয়ী এবং টেকসই কেননা এক্ষেত্রে আলাদা কোন জ্বালানী বা কাঁচামাল প্রয়োজন পড়েনা।
তবে, ইন্সটিটিউট অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড ট্রেড পলিসি নামক একটি এনজিও’র কৃষি নীতি বিষয়ক পরিচালক জাহি চ্যাপেল মনে করেন হোরিতা’র দলের এ আবিস্কার জৈবজ্বালানী বিষয়ক সমস্যা গুলোর সমাধান দিতে ব্যর্থ হতে পারে। তিনি মনে করেন, এটি তখনই সফল হবে যদি এর ব্যবহার সত্তিকার অর্থেই জৈবজ্বালানী উৎপাদনের ফলে বর্তমানে খাদ্য উৎপাদনের উপর যে চাপ সৃষ্টি করেছে তা যদি কমিয়ে আনতে পারে।
তবে হোরিতার মতে এ প্রযুক্তি বাস্তবায়নে সবথেকে বড় বাধা হতে পারে বরাদ্দ। সঠিক বরাদ্দ, উৎপাদনে কৃষককে সয়াহতা করা ও উৎপাদিত পণ্য সঠিক বাজারে পৌঁছে দিতে পারলে এ পদ্ধিতে বিকল্প জ্বালানীর চাহিদা পূরণ সম্ভব বলে দাবি করেন তিনি।
সূত্রঃ সাইডেভ ডট নেট.
রূপান্তরঃ তাওহীদ হোসাইন