মক্কার আদলে সমন্বিত কোরবানি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার আহবান পবা'র

ঈদ-উল-আযহার অন্যতম অনুসঙ্গ হিসেবে লাখ লাখ পশু কোরবানি হবে দেশ জুড়ে। প্রতি বছরই ঢাকা মহানগরীসহ দেশের সর্বত্র কোরবানি ও এর বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার অভাবে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি করে। মক্কার আদলে কোরবানির বর্জ্য সুষ্ঠু ব্যবস্থার জন্য সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে প্রতিটি এলাকায় বর্জ্য  ফেলার সময় ও স্থান চিহ্নিত করা জরুরি। যে সকল ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় ও স্থানে বর্জ্য ফেলবে না তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪, সকাল ১১টায় পবা কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় উক্ত দাবী জানানো হয়।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মক্কাসহ আরো বেশ কিছু স্থানে কোরবানিও পশু জবাইয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে রয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ জনশক্তি দ্বারা পরিপূর্ণ ধর্মীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পশু কোরবানি করা হয়। এর ফলে দুর্গন্ধ ছড়ানো, রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটা, পশুর চামড়া বিনষ্টি, বর্জ্যরে ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। পশুর চামড়া অত্যন্ত দামী ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী দক্ষ হাতে চামড়া ছাড়ানো হলে এর অযথা ক্ষতি এড়ানো যাবে। স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ কোরবানি হলে পশুর মাংস ময়লা ও জীবানুযুক্ত হবে না। পশুর রক্ত, গোবর, নাড়িভুড়ি, হাড় ও অন্যান্য উচ্ছিষ্ট জিনিসকে সার, বোতাম, চিরুণী মৎস খাদ্য, পশু খাদ্যসহ বেশ কিছু শিল্পে ব্যবহার করা যাবে।DSC_0831

বক্তারা বলেন, ঈদের পূর্বে নগরের কোথায় কোথায় বর্জ্য কখন ফেলা হবে সিটি কর্পোরেশন চিহ্নিত করে দিতে হবে। এ বিষয়ে মসজিদ ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগনকে অবহিত করতে হবে। ফলে নগরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অনেক উন্নয়ন সম্ভব হবে। নগরে অনেক নাগরিক আছেন যারা অনেক টাকা খরচ করে কোরবানী করেন। কিন্তু বর্জ্য ফেলার জন্য নুন্যতম দায়িত্ব নেয় না বা অর্থ খরচ করতে চান না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নাগরিক দায়িত্ব সৃষ্টি করতে হবে। যারা নির্ধারিত স্থানে বা সময়ে বর্জ্য ফেলবে না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধের আলোকে বক্তব্য তুলে ধরেন ডা: লেলিন চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদ, বিসিএইচআরডির নির্বাহী পরিচালক মো: মাহবুল হক, শুভ সকাল সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি এডভোকেট নিরুপমা, পরিবেশ সাংস্কৃতিক মঞ্চের পরিচালক মিজান শরীফ খোকা, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদের সভাপতি মো: মুসা প্রমুখ।

আলোচনা সভা থেকে নিন্মোক্ত সুপারিশ করা হয়-
১.    সির্টি কর্পোরেশনের উদ্যোগে  ঈদের পূর্বে প্রতিটি এলাকায় কোরবানীর বর্জ্য ফেলার সময় ও স্থান চিহ্নিত করা
২.    বর্জ্য ফেলার স্থান ও সময় বিষয়ে মসজিদ হতে ও প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে জনগনকে অবহিত করা।
৩.    কোরবানির ধর্মীয় নির্দেশনা যথাযথভাবে অবহিত করে জনসাধারণের সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ দায়িত্ব অবশ্যই ধর্ম মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে।
৪.    নির্ধারিত পশু জবাইয়ের স্থানে সংগৃহীত বর্জ্য (রক্ত, গোবর, নাড়িভুড়ি, খুর, হাড়, লেজের চুল ইত্যাদি) কেন্দ্রীয়ভাবে সংগ্রহ করে শিল্প উৎপাদনে রূপান্তরের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার গ্রহণ করবে।
৫.    ধর্ম সম্মতভাবে প্রতিটি এলাকায় কিছু মানুষকে প্রশিক্ষিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics