কর্তৃপক্ষ ও কমিটিসমূহ গঠন করে খাদ্য আইন কার্যকর করা জরুরী
খাদ্যে ভেজাল ও বিষাক্ততার ব্যাপকতায় জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিষমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ প্রণয়ন করা হয় কিন্তু আইনটি বাস্তবায়নে কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। আইনে ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’, ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা পরিষদ’, ‘কেন্দ্রীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি’ ও ‘কারিগরি কমিটি’ গঠনের কথা থাকলেও দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কমিটিসমূহ করা হয়নি। যা আইনটি বাস্তবায়নের পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে আছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় নিরাপদ খাদ্য আইন বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ ও কমিটিসমূহ গঠন করে সেগুলো কার্যকর করা জরুরী। আজ ১২ মে ২০১৫, মঙ্গলবার, সকাল ১০টায় পবা কার্যালয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ উল্লেখ রয়েছে যে, “এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ এবং নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনার সহিত সংশ্লিষ্ট সকলকে নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা বিষয়ক নীতিমালা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা প্রদানের নিমিত্তে ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা পরিষদ’ নামে একটি পরিষদ থাকিবে।”
“সরকার এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এই আইন বলবৎ হইবার পর যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিবে।”
“নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য ‘কেন্দ্রীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি’ গঠন করিবে।”
“এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, উহার কার্য পরিচালনায় সহায়তা ও পরামর্শ প্রদানের জন্য নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কারিগরি কমিটি গঠন করিতে পারিবে।”
“কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনবোধে বিশেষ উদ্দেশ্যে উহার এক বা একাধিক সদস্য সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্যান্য কমিটি গঠন এবং এইরূপ কমিটির কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।”
“খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণের নমুনা বিশ্লেষণ বা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক খাদ্য বিশ্লেষক নিয়োগ করিবে।”
“কর্তৃপক্ষ এই আইনের অধীন নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক নিয়োগ করিতে পারিবে।”
আগামি ৩০ মে ২০১৫ এর মধ্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও খাদ্য আদালত গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে পবা নিন্মোক্ত কর্মসূচী গ্রহণ করবে- জুন’ ২০১৫ মাসের প্রথম সপ্তাহে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান, জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে মানববন্ধন, তৃতীয় সপ্তাহে বিশিষ্টজনদের সাথে মতবিনিময় সভা, ছাত্র-ছাত্রী নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সমন্বয়ে প্রতিকী অনশন করা হবে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিষমুক্ত নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডা: লেলিন চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, পবার সম্পাদক মনজুর হাসান দিলু, সহ-সম্পাদক মো: মুসা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পবার সহ সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম।