
বিপন্ন পাখি বাদামী কোকিল!!
জাকিয়া শারমিন বিপাশা
বিপন্ন পাখি ‘বাদামী কোকিল’। দেশের স্থায়ী বাসিন্দা নয় এরা, প্রাক্তন পরিযায়ী পাখি। কয়েক দশক আগে চট্টগ্রাম বিভাগে দেখা যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে।হালে দেশে কোথাও দেখার নজির নাই।
বাদামি কোকিল ভারত উপমহাদেশের শুষ্ক অঞ্চলে যৎসামান্য নজরে পড়ে। এরা সাধারনত শুষ্ক পাতাঝরা বনের ঝোপে বিচরণ করে। বেশিরভাগই একা বিচরণ করলেও মাঝেমধ্যে জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। বাদামি কোকিল ঝোপ জঙ্গল থেকে খাবার সংগ্রহ করলেও মাটিতে নেমে পাতা উল্টিয়ে কীটপতং শিকার করতে দেখা যায়। মাটিতে বিচরণকালীন সময়ে ভয় পেলে দৌড়াতে থাকে, উড়ার চেষ্টা করে না মোটেও। কোকিলের জ্ঞাতি ভাই হলেও অন্যের বাসায় ডিম পাড়ে না। নিজেরাই হ-য-ব-র-ল টাইপ বাসা বাঁধে। আবার হাঁকডাক ও করে না। অনেকটা দেশি কোকিলের মতো। মাঝেমধ্যে ‘কেক-কেক-কেরেক-কেরেক-কেরেক’ সুরে ডাকে। সুর শ্রুতিমধুর নয়, বরং কর্কশ। প্রজাতিটি বিশ্বে বিপন্মুক্ত হলেও বাংলাদেশে বিপন্ন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তাই বাংলাদেশে বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত হয়েছে বাদামী কোকিল।
পাখির বাংলা নামঃ বাদামী কোকিল
ইংরেজী নামঃ Sirkeer Malkoha
বৈজ্ঞানিক নামঃ Phaenivophaeus leschenaultia
গোত্রের নামঃ কুকুলিদি
এরা মেটে মালকোয়া নামে পরিচিত। লম্বায় ৪২ সেন্টিমিটার ( তন্মধ্যে লেজ ২২ সেন্টিমিটার)। মাথার তালু গাঢ় ধূসর। গলা ও বুকের উপরাংশ পীতাভ। এছাড়াও কালো ডোরা দেখা যায়। পেটের দিকটা লালচে পীতাভ, লেজের নিচটা পর্যায়ক্রমে সজ্জিত। লেজের অগ্রভাগ সাদা।এছাড়াও সব দেহে বালিময় ধূসর-বাদামী। প্রধান খাবার টিকটিকি, ছোট সাপ, ফড়িং,শুঁয়োপোকা ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে আগস্ট। মাটি থেকে খানিকটা উপরে ঝোপজঙ্গল বা গুল্মলতাদির ভেতর শুকনো পাতা দিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২-৩ টি। ডিমের বর্ণ ধবধবে সাদা। ডিম ফুটতে কতদিন সময় লাগে তা জানা যায়নি।
জাকিয়া শারমিন বিপাশা
শিক্ষার্থী,ঢাকা সিটি কলেজ