ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালিত

বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসে অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম মৃত্তিকা অলিম্পিয়াড

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগ এবং বাংলাদেশ মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতির যৌথ উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হল বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ২০১৪। মৃত্তিকার আলিঙ্গনে মানব সভ্যতা এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতির উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত সারা দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী এবং সম্মানিত অতিথির আসনে ছিলেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন।

দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে অনুষ্ঠিত হয় মৃত্তিকা বা সয়েল অলিম্পিয়াড। বাংলাদেশে প্রথম এবারই এধরনের আয়োজন সম্পন্ন হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নটরডেম কলেজ সহ বিভন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন পরে, সকল অংশগ্রহণ কারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয় এছাড়াও অলিম্পিয়াডে প্রথম স্থান অধিকার করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিফাত সুলতানা মিম ও তৃতীয় হোন একই বিভাগের রিফাত আমিন তাসনুভা। ২য় স্থান অধিকার করেন বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।world soil day dhaka university

দুটি সেশনে দিনব্যাপী আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় অংশ নেন দেশ বরেণ্য মৃত্তিকা বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষক সহ অনেকে। বাংলাদেশ মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতির  সাধারণ সম্পাদক জালালউদ্দিন মো. শোয়েবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ,পানি ও পরিবেশ বিভাগের বরেণ্য অধ্যাপক ড. এস এম ইমামুল হক।অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করার ফাঁকে ফাঁকে তিনি একুশ শতকে মৃত্তিকা রক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন এবং অতি দ্রুত জাতীয় পর্যায়ে মৃত্তিকা সম্পদ ব্যবহারে নীতিমালা তৈরির জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, পানি বা পরিবেশ নিয়ে এখন পৃথিবীব্যাপী হৈচৈ, অনেক বলা- কওয়ার পরে পানি সম্পদ ব্যবহার ও রক্ষা নিয়ে দেশে নীতিমালা হয়েছে কিন্তু মৃত্তিকার মতো অমূল্য সম্পদ নিয়ে এখনও কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই।

জনাব রাগীব উদ্দিন আহমেদ যিনি পেশায় একজন শিল্পী ও সংরক্ষণবিদ তিনি দিনের শুরুতে তাঁর অনবদ্য বক্তব্যে তরুণ শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন মৃত্তিকার প্রয়োজনীয়তা একটু অন্য ধাঁচে প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় তাঁর বক্তব্য উপভোগ করেন উপস্থিত সকলে।winners

ওয়েস্ট কনসার্ন এর প্রতিষ্ঠাতা  মাকসুদ সিনহা বর্জ্য থেকে জৈব সার উৎপাদন প্রজুক্তি সম্পর্কে ধারণা দেন। মৃত্তিকাকে দূষণ মুক্ত ও সুস্থ রাখতে উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপন্ন জৈব সার কি প্রভাব রাখে এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ও কৃষিতে জৈব সারের ভূমিকা তুলে ধরেন।

মৃত্তিকা-সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক খন্দকার মঈনউদ্দিন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের জমিতে সার ব্যবহার নির্দেশিকা বিষয়ক পোর্টাল সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা মৃত্তিকা বিজ্ঞানের প্রসার, মাটির যৌক্তিক ব্যবহার এবং প্রতিপাদ্য বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

বিশেষত: সকলেই উদ্ভিদের বৃদ্ধি, খাদ্য উৎপাদনে যথাযথ সারের প্রয়োগ, মৃত্তিকার স্বাস্থ্য সংরক্ষণ এবং মানবকল্যাণে মৃত্তিকার গুরুত্বকে বিবেচনা করে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই দিবসকে জনসমাজে আরও পরিচিত এবং এর সুফলকে উৎসাহিত করতে প্রচার ও প্রসারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

মৃত্তিকা বিজ্ঞানের অন্যতম পথিকৃৎ এবং এই বিষয়ে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম কে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

“মানব কল্যাণে মৃত্তিকা” শিরোনামকে সামনে রেখে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজন করা হয় রচনা প্রতিযোগিতার। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে মাননীয় প্রধান অতিথি বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from EnvironmentMove.earth

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Verified by ExactMetrics